ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কোন প্রাণীর উচ্ছিষ্ট পাক, আর কোন প্রাণীর উচ্ছিষ্ট নাপাক প্রত্যেক প্রাণীর ঘাম তার উচ্ছিষ্টের সাথে বিবেচ্য। কেননা (লালা ও ঘাম) দু’টোরই জন্ম তার গোশত থেকে। সুতরাং একটিতে অপরটির বিধান প্রযোজ্য। মানুষের উচ্ছিষ্ট এবং যে প্রাণীর গোশত খাওয়া যায়, তার উচ্ছিষ্ট পাক। কেননা তার সাথে লালা মিশ্রিত হয়েছে। আর তা সৃষ্ট হয়েছে পাক গোশত থেকে। জুনুবী, ঋতুমতী এবং কাফিরও এ হুকুমের অন্তর্ভূক্ত। কুকুরের উচ্ছিষ্ট নাপাক। সে কোন পাত্রে মুখ দিলে তা ধুতে হবে। কেননা রাসূলুল্লাহ্ (সা.) বলেছেন-কুকুরের মুখ দেওয়ার কারণে পাত্র তিনবার ধুতে হবে। কুকুরের জিহ্বা (সাধারণত) পানি স্পর্শ করে, পাত্র নয়। সুতরাং পাত্র যখন নাপাক হয়ে যায়, তখন পানি নাপাক হওয়াত অনিবার্য। এ হাদীছে নাপাক হওয়া এবং ধোয়ার সংখ্যা প্রমাণিত হয়। সুতরাং এ হাদিস ইমাম শাফিঈ (র.) এর সাতবার ধোয়ার শর্ত আরোপের বিপক্ষে দলীল। তা ছাড়া, যে বস্তুতে কুকুরের পেশাব লাগে, তা তিনবার ধুইলে পাক হয়ে যায়। কাজেই যে বস্তুতে তার উচ্ছিষ্ট লাগে-যা পেশাবের চেয়ে সাধারণ, তা পাক হওয়া তো আরো স্বাভাবিক। আর সাতবার ধোয়া সম্পর্কে বর্ণিত নির্দেশ ইসলামের প্রথম যুগের অবস্থায় প্রয়োজ্য। শূকরের উচ্ছিষ্ট নাপাক। কেননা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, শূকর সত্তাগতভাবেই নাপাক। হিংস্র পশুর উচ্ছিষ্ট নাপাক। শূকর ও কুকুর ছাড়া অন্যান্য হিংস্র পশুর উচ্ছিষ্ট সম্পর্কে ইমাম শাফিঈ (র.) এর বিপরীত মত রয়েছে। আমাদের দলীল হল, কেননা হিংস্র পশুর গোশত নাপাক এবং তা থেকেই লালা সৃষ্ট। আর লালার হুকুম গোশতের উপরই নির্ভরশীল। বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পাক কিন্তু (তা ব্যবহার করা) মাকরূহ। ইমাম আবূ ইউসফ (র.) থেকে বর্ণিত যে, তা মাকরূহও নয়। কেননা, নবি (সা.) বিড়ালের জন্য পাত্র কাত করে ধরতেন। বিড়াল তা থেকে পানি পান করতো, পরে তা দ্বারা তিনি অজু করতেন। (দারা কুতনী) ইমাম আবূ হানীফা ও মুহাম্মদ (র.) এর দলীল হলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- বিড়াল হিংস্র প্রাণী। এ হাদীছের উদ্দেশ্য হচ্ছে বিধান বর্ণনা করা। তবে নাকেস হওয়ার হুকুম রহিত করা হয়েছে (গৃহের অভ্যন্তরে) সর্বদা ঘুরাফেরার কারণে। সুতরাং মাকরূহ হওয়ার হুকুম বাকী থেকে যায়। আর পাত্র কাত করে ধরার বর্ণনা হারাম হওয়ার পূর্ববর্তী সময়ের উপর ধর্তব্য। উল্লেখ্য যে, কারো মতে তার উচ্ছিষ্ট মাকরূহ হওয়ার কারণ, গোশত নাপাক হওয়া। আর কারো মতে নাপাকি পরিহার না করার কারণে। আর শেষোক্ত মতে তানযীহের এবং প্রথম মতে হারামের কাছাকাছি হওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে।বিড়াল যদি ইদুর খেয়ে সাথে সাথে পানি পান করে, তাহলে পানি নাপাক হয়ে যাবে। তবে কিছু সময় বিলম্ব করার পর হলে নাপাক হবে না। কেননা সে লালা দ্বারা মূখ পরিষ্কার করে ফেলে। এ ব্যতিক্রম শুধু ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম আবূ ইউসূফ (র.) এর মতানুযায়ী। আর অনিবার্য প্রয়োজনবশতঃ পাক হওয়ার জন্য পানি ঢালার শর্তটি রহিত হয়ে যাবে। মূল লেখক : বুরহান উদ্দীন আবুল হাসান আলী ইবন আবু বকর [রহ.] বাংলা অনুবাদ : মাওলানা আবু তাহের মেছবাহ
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
তরকারি, বিস্কুট ইত্যাদিতে যদি ইদুর মুখ দেয়, তাহরে মুখ দেয়া ঐ খাবার খাওয়া জায়েয হবে না। সে টা খাওয়া হারাম। ফেলে দিতে হবে।