আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
472 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম,
জন্মগত হিজড়াদের ক্ষেত্রেঃ

যারা জন্মগতভাবে অস্বাভাবিক, শারীরিকভাবে অসম্পূর্ণ, তাদের ব্যাপারে কী নিয়ম? (যেমন- স্বাভাবিক মানুষের মতো হওয়ার জন্য চিকিৎসা, বিবাহ, জীবিকা, সমাজের আর দশজনের মতো বেঁচে থাকা, তাদের পর্দার বিধান, ইত্যাদি।) তারা কি স্বাভাবিক মানুষের মতোই জীবনযাপন করবে? তারা কী স্বাভাবিক মানুষের মতোই জীবিকা নির্বাহ করবে? তাদেরকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার চেষ্টা করতে হবে? অর্থাৎ যে কোনো একটি জেন্ডারে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে? আর তারপরও সম্ভব না হলে, সে সেরকমই থেকে যাবে? এ ব্যাপারটা কী এরকম? হিজড়া হওয়ার কারণে, সেই মানুষ কি কোনো ধরনের সুবিধা কম পাবে এমন? (যেমনটা জারজ সন্তানেরা কিছু ক্ষেত্রে সুবিধা কম পায় সেরকম?) এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে? বিশদভাবে জানতে চাই।

যারা কৃত্রিমভাবে ট্রান্সজেন্ডারঃ

যারা কৃত্রিমভাবে ট্রান্সজেন্ডার হয়, তারা অনেকে কোনো কারণ ছাড়াই হয়, যা ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। আবার অনেকের ভাষ্যমতে, তারা শারীরিকভাবে এরকম, মানসিকভাবে একরকম, তারা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জেন্ডার বদলে ফেলে, সেটিও ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাদের রসুল (সা.) লা'নত করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই যে মানসিক সমস্যাটা, এর কি কোনো চিকিৎসার বিধান আছে? নাকি, এই মানসিক অসুখের ব্যাপারটাও মিথ্যা, ধোঁকা ছাড়া কিছু নয়? কারণ, মহান আল্লাহ তা'আলা কখনোই আমাদের সমাধান ছাড়া কোনো সমস্যায় ফেলেন না। যদি তারা সত্যি মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকে, এই রকম মানিসক সমস্যারও যদি কোনো অস্তিত্ব থেকে থাকে, তবে এর কি কোনো মানসিক চিকিৎসা আছে? তারা কি শারীরিকভাবে সুস্থ থাকে সম্পূর্ণ? এ ব্যাপারে ইসলামের বিধান কী? বিশদভাবে জানতে চাই।

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হিজড়াদের মধ্যে যারা খুনছায়ে মুশকিলা,তাদের জন্য ট্রান্সজেন্ডার(এক লিঙ্গ থেকে আরেক লিঙ্গে রূপান্তর)  জায়েজ নেই।
,
সুরা নিসার ১১৯ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 وَّ لَاُضِلَّنَّهُمۡ وَ لَاُمَنِّیَنَّهُمۡ وَ لَاٰمُرَنَّهُمۡ فَلَیُبَتِّکُنَّ اٰذَانَ الۡاَنۡعَامِ وَ لَاٰمُرَنَّهُمۡ فَلَیُغَیِّرُنَّ خَلۡقَ اللّٰهِ ؕ وَ مَنۡ یَّتَّخِذِ الشَّیۡطٰنَ وَلِیًّا مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ فَقَدۡ خَسِرَ خُسۡرَانًا مُّبِیۡنًا ﴿۱۱۹﴾ؕ

‘আর অবশ্যই আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, মিথ্যা আশ্বাস দেব এবং অবশ্যই তাদেরকে আদেশ দেব, ফলে তারা পশুর কান ছিদ্র করবে এবং অবশ্যই তাদেরকে আদেশ করব, ফলে অবশ্যই তারা আল্লাহর সৃষ্টি বিকৃত করবে’। আর যারা আল্লাহর পরিবর্তে শয়তানকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে, তারা তো স্পষ্টই ক্ষতিগ্রস্ত হল। 

 تَغْيِيْرُ خَلْقِ اللهِ আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন করা যেমন, কান কাটা, চিড়া এবং ছিদ্র করা। 
,
আবার পরিবর্তনের অর্থ প্রাকৃতিক নিয়মে পরিবর্তন এবং হালাল ও হারামের মধ্যে পরিবর্তনও হয়। পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা অনুরূপ মহিলাদের গর্ভাশয় তুলে ফেলে তাদের সন্তান জন্মানোর যোগ্যতা থেকে বঞ্চিত করাও এই পরিবর্তনের আওতায় পড়ে। মেকআপের নামে ভ্রূর চুল চেঁছে নিজের আকৃতির পরিবর্তন করা এবং চেহারা ও হাতে দেগে নকসা করা ইত্যাদিও এরই মধ্যে শামিল। এ সবই হল শয়তানী কার্যকলাপ, তা থেকে বিরত থাকা জরুরী।
,
সুরা রুম ৩০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

فِطۡرَتَ اللّٰهِ الَّتِیۡ فَطَرَ النَّاسَ عَلَیۡهَا ؕ لَا تَبۡدِیۡلَ لِخَلۡقِ اللّٰهِ ؕ ذٰلِکَ الدِّیۡنُ الۡقَیِّمُ ٭ۙ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ النَّاسِ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿٭ۙ۳۰﴾

আল্লাহর প্রকৃতি, যে প্রকৃতির উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই প্রতিষ্ঠিত দীন; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★খুনছায়ে মুশকিলা বলা হয়ঃ
যার কাছে পুরুষ বা মহিলার কোনো আলামত প্রকাশ হয়নি।এবং এটাও জানা যায়নি যে,সে আসলে পুরুষ নাকি মহিলা?
অথবা উভয় আলামত-ই তাতে বিদ্যমান রয়েছে। 

(ক)যার মধ্যে দুটি লিঙ্গই রয়েছে,তবে দুটিই বরাবর। 
(খ)যার মধ্যে কোনো লিঙ্গই নেই।বরং তাতে একটি ছিদ্র রয়েছে।
.
হাদিস শরিফে এসেছেঃ-

عَنﺍﻟْﺤَﺴَﻦُ ﺑْﻦُ ﻛَﺜِﻴﺮٍ , ﺳَﻤِﻊَ ﺃَﺑَﺎﻩُ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﻋَﻠِﻴًّﺎ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ، ﻓِﻲ ﺧُﻨْﺜَﻰ ، ﻗَﺎﻝَ " : ﺍﻧْﻈُﺮُﻭﺍ ﻣَﺴِﻴﻞَ ﺍﻟْﺒَﻮْﻝِ ، ﻓَﻮَﺭِّﺛُﻮﻩُ ﻣِﻨْﻪُ " 

ভাবার্থঃ-হাসান ইবনে ক্বাসির তার বাবাকে বলতে শুনেছেন,তিনি বলেনঃআমি হযরত আলী রাঃ কে দেখেছি তিনি খুনছা(হিজরা)দের বিষয়ে বলেনঃ তোমরা প্রস্রাব প্রবাহিত হওয়ার স্থান দেখে তাদেরকে (পুরুষ-মহিলা রূপে সাব্যস্ত করো এবং)ওয়ারিছ বানাও।(সুনানে বায়হাক্বী-১১৫৯১)

অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে

ﻓﻘﺎﻝ ﻋﻠﻲ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - : ﺇﻥ ﺑﺎﻝ ﻣﻦ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﺬﻛﺮ ﻓﻬﻮ ﻏﻼﻡ ، ﻭﺇﻥ ﺑﺎﻝ ﻣﻦ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﻓﻬﻮ ﺟﺎﺭﻳﺔ .

হযরত আলী রাঃ বলেনঃযদি সে পুঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে বালক,আর যদি সে স্ত্রীঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে বালিকা।(আসসুনানুল কুবরা-১২১৮৬)

বিস্তারিত জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/36980/

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,   
খুনছা গায়রে মুশকিল হলে,শিশুবেলায়,তাদের লিঙ্গকে নির্ধারণপূর্বক অতিরিক্ত বিপরীত লিঙ্গের আ'লামত সমূহকে সার্জারীর মাধ্যমে দূর করার রুখসত,অনুমতি  রয়েছে।
,
হিজড়াদের ব্যাপারে ইসলামের বিধান বিস্তারিত জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 464 views
...