আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম
১/ উস্তাদ, আমাদের একটা ব্যবসা আছে। এমনিতে আমার কোন জমানো টাকা বা স্বর্ণ নেই। ব্যবসার পুঁজি আমার হাজব্যান্ডের। সময় দুইজন মিলে দিচ্ছি। এইবার ব্যবসার যাকাত এসেছিলো প্রায় ৬২ হাজার টাকা, আলহামদুলিল্লাহ।
তাহলে আমার উপর কি কুরবানি ওয়াজিব?  নাকি শুধু আমার হাজব্যান্ডের পক্ষ থেকে একটা ছাগল কুরবানি করলেই হবে?
২/ আমরা কত টাকার কুরবানি দিব? মানে আমি আসলে হিসেব টা বুঝতেসিনা। একটা গরু ৬০-৭০ হাজার টাকায় আসে। এদিকে আমরা ঢাকায় ভাড়া বাসায় থাকি। গ্রামে হলে একটা গরু কুরবানি দিয়ে চেনাজানা গরীব মিসকিনের মাঝে বন্টন করে দিতে পারতাম। শহরে এগুলো ম্যানেজমেন্ট আমরা করতে পারবো না৷ বিবাহিত জীবনে এটি আমাদের দেয়া ২য় কুরবানি হবে ইনশাআল্লাহ। এসব চিন্তা করে আমরা আগে থেকে কুরবানির জন্যে টাকা জমাই নি৷ ভেবেছি ১৫-২০ হাজার টাকার ছাগল কিনলেই হয়ে যাবে। আমরা যেহেতু ব্যবসায়ী, মাসের প্রতিদিন ই ইনকাম হয় আল্লাহ চাইলে। তো কুরবানি পর্যন্ত আরও ১২-১৩ দিন আছে। আল্লাহ চাইলে তখন ৫০-৬০ হাজার টাকা হাতে জমা টাকা হতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা কি করলে উত্তম হয়?
অর্থাৎ আমার মূল প্রশ্ন- উত্তম মাসা'আলা কি? কুরবানিতে বাজেট কিভাবে করলে ভালো হয়? এই বিষয়ে দয়া করে কিছু বলবেন। এইবার না হলেও আল্লাহ চাইলে সামনের বার যেন বেশি টাকা খরচ করার নিয়ত রাখি, এই নিয়তে যেন টাকা জমাই।

1 Answer

0 votes
by (645,750 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৯০০০০+ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
(০১)
উক্ত ব্যবসার লাভ কি আপনি নেন?
যদি নেন,সেক্ষেত্রে আপনার লভ্যাংশ ৯০০০০+ টাকা হলে সেক্ষেত্রে যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনার কাছে উক্ত টাকা থাকলে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। 

আর যদি বিষয়টি এমন হয় যে আপনি সেই ব্যবসার লাভ না নেন,ব্যবসার পুঁজি আপনার নয়,পুঁজিও আপনার স্বামীর,লাভও আপনার স্বামীর।

আপনি এমনিতেই সময় দেন মাত্র,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

(০২)
একটি একটি কুরবানী দিলেই হলো।
চাই আপনারা ছাগল দেন,বা গরু।

গরু দিলে পুরো গরু দেয়া আবশ্যক নয়,বরং গরুর ৭ ভাগের এক ভাগ দিলেও হবে।

তবে যদি আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়,সেক্ষেত্রে ২ টি ছাগল বা গরুর ৭ ভাগের দুই ভাগ দিতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...