আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম শায়খ, আমার বয়স খুব অল্প থাকতেই আমি একটি ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যাই। এরপর আমি দ্বীনের বুঝ পেলে ছেলেটিকে বিয়ের জন্য প্রেশার দেই, আমাদেরই দুজনেরই বয়স কম ছিল আর সে যেহেতু ছাত্র ছিল তাই পারিবারিকভাবে বিয়ে না করে গোপনে বিয়ে করার কথা ভাবা হয়। ছেলের অনিচ্ছায় আমি গাইরে কুফুতে তাকে জোর করে মৌখিকভাবে বিয়ে করি। ওই ছেলে মূলত আমাকে কখনো বিয়ে করতে চাইত না, বিয়ের পরে আমার উপর শারীরিক মানসিক আর্থিক অনেক জুলুম করেছে যা আমি প্রকাশও করতে পারব না। সে মূলত পর্ন এডিক্টেড ও বিকৃত মস্তিষ্কের ছিল যা আমি ধরতে পারি। তার এসব জুলুম মেনে না নিতে পারলে আমি তার থেকে সংসার না করেই মৌখিক তালাক নেই। নিজের উপর তালাক পতিত করার সময় আমার অনেক রাগ ছিল তার উপর কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম আমি কি বলছি। এক মুফতির থেকে জানতে পারি তালাক হয়ে গেছে। আলহামদুলিল্লাহ যাই হোক। যেহেতু আমার এই বিয়ে বা তালাক এগুলোর ব্যাপারে আমার বাবা মা ওয়াকিবহাল ছিলেন না। তারা আমার বিয়ের জন্য চেষ্টা করলে আমি তাই প্রকাশ্যেও আনতে পারছিলাম না আমি যে তালাকপ্রাপ্তা। আমি আবার দ্বীনকে আকড়ে ধরার চেষ্টা করি এবং ভাবি বিয়ের সময় হলে আলাদা করে স্বামীকে শুধু বলব এই ব্যাপারে। একবার সাহস করলেও আরেকবার পিছিয়ে যাচ্ছি এরকম দোটানার মধ্যে একটি দ্বীনি সাইটে আমি আমার বায়ো দেই। আমার ম্যারিটাল স্ট্যাটাস কিছুই দেয়া ছিল না, পরে জিজ্ঞাসা করলে আমি কোনকিছু না ভেবেই অবিবাহিতা বলে দেই। তারপর আমাকে আমার বর্তমান যাওজ (আলহামদুলিল্লাহ, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ নিয়ামত) আমাকে প্রশ্ন করে আমার পূর্বে কোনো হারাম রিলেশন ছিল কিনা। উল্লেখ্য, সে জেনারেল লাইনের হলেও তার পুরো জীবনে কখনো কোনো নারীর সাথে সম্পর্কে জড়ায় নি।তাই নিজের জন্যেও এরকমই একজন পুত:পবিত্রা নারী খুঁজছিলেন। আল্লাহ মাফ করুন, আমার নিজেরই সব বান্ধবী আমাকে কড়াভাবে নিষেধ করে দেয় আগে যা হয়েছে হয়েছে তা যেন আমি আর টেনে না আনি। এসব জেনে আমাকে কোনো দ্বীনদার পবিত্র পুরুষ হয়ত বিয়ে করতে চাবে না এরকম বুঝায়। যেহেতু লম্বা সময় ধরে আমি কোনো ছেলের সংস্পর্শে নেই, আমাদের বিয়েটার কোনো প্রচারণা হয় নি, আমি ওই ছেলের সাথে সংসার করিনি। কিছুদিন স্বামী স্ত্রী মূলক সম্পর্ক হয়েছে। তাই এসব ভেবে আমি আমার যাওযকে বলি আমার পূর্বে কোনো হারাম সম্পর্ক ছিল না। আমাকে কুমারী জেনে সে আমাকে বিয়ে করে এবং বিয়ের পরেও আমি তাকে হারানোর ভয়ে আর কিছুই প্রকাশ করিনি। আমি আমার অতি অল্পবয়সে করা এই মারাত্মক ভুলটি আমার জীবন থেকে মুছে নতুনভাবে সংসার করা শুরু করি। কিন্তু আমার যাওযের দিকে তাকালেই আমার চোখ ভিজে আসে অনুশোচনায়। একবার মনে হয় তওবা করলে তো মানুষ পবিত্রই হয়ে যায়। যেন সে ওই গুনাহ কখনো করেই নাই। আমার নিয়্যত তো খারাপ ছিল না। আমি তো প্রতারিত হয়েছি আগের বিয়েটায়। আবার মনে হয়, আমি এই বান্দার সাথে অনেক বড় অন্যায় করে তাকে বিয়ে করেছি। আমার মত প্রতারককে সে কতই না উত্তম ভেবে আসছে না জেনে। সবসময় ভয় হয় যদি কোনদিন আমার গোপন করা সব মিথ্যা সে একদিন জেনে যায়, হ্যা সে ওই মুহূর্তেই আমাকে আমার মত ছেড়ে দিবে। আমি তাকে অন্যভাবে জিজ্ঞেস করে জেনেছি। তার অবশ্যই আমাকে ছাড়া উচিত জানি। আমি জানি আমি তার হক্ব নষ্ট করেছি। এখন সংসার টিকানোর জন্য আমি তো তাকে এগুলো কখনো বলতে পারব না, কারণ সে অনেক গায়রতসম্পন্ন। কোনো ছেলের সম্পর্কে একটা শব্দ ও উচ্চারণ করা পছন্দ না তার আমার মুখে। আমি কিভাবে তার কাছে মাফ চেয়ে নিব। আমার কি করা উচিত। আমি আমার জীবনটাকে ঠিক এমনভাবেই দেখতে চেয়েছিলাম। তার চেয়ে উত্তম আমার জন্য কেউ নয়। এসবের লোভে আমি তাকে বঞ্চিত করে ফেলেছি। শায়খ, আমি জানতে চাই ঠিক কি করলে হাশরের মাঠে সে আমাকে প্রশ্ন করতে পারবে না আমি তাকে কেন ঠকিয়েছি। যদি আমাকে সব সত্যি বলতেই হয় তাও বলে দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ifatwa.info/906/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
বান্দা গোনাহ করার পর যখন সে তাওবাহ করে নেয়, তখন আল্লাহ তা'আলা তার গোনাহকে ক্ষমা করে দেন, এমনকি তার গোনাহকে পূণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻟَﺎ ﻳَﺪْﻋُﻮﻥَ ﻣَﻊَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻟَﻬًﺎ ﺁﺧَﺮَ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﻘْﺘُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲَ ﺍﻟَّﺘِﻲ ﺣَﺮَّﻡَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺇِﻟَّﺎ ﺑِﺎﻟْﺤَﻖِّ ﻭَﻟَﺎ ﻳَﺰْﻧُﻮﻥَ ﻭَﻣَﻦ ﻳَﻔْﻌَﻞْ ﺫَﻟِﻚَ ﻳَﻠْﻖَ ﺃَﺛَﺎﻣًﺎ
এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যের এবাদত করে না, আল্লাহ যার হত্যা অবৈধ করেছেন, সঙ্গত কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না। যারা একাজ করে, তারা শাস্তির সম্মুখীন হবে।
ﻳُﻀَﺎﻋَﻒْ ﻟَﻪُ ﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﻭَﻳَﺨْﻠُﺪْ ﻓِﻴﻪِ ﻣُﻬَﺎﻧًﺎ
কেয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দ্বিগুন হবে এবং তথায় লাঞ্ছিত অবস্থায় চিরকাল বসবাস করবে।
ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺄُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻳُﺒَﺪِّﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺳَﻴِّﺌَﺎﺗِﻬِﻢْ ﺣَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻏَﻔُﻮﺭًﺍ ﺭَّﺣِﻴﻤًﺎ
কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের গোনাহকে পুন্য দ্বারা পরিবর্তত করে এবং দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
ﻭَﻣَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳَﺘُﻮﺏُ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻣَﺘَﺎﺑًﺎ
যে তওবা করে ও সৎকর্ম করে, সে ফিরে আসার স্থান আল্লাহর দিকে ফিরে আসে। সূরা ফুরক্বান-৬৮-৭০
গোনাহ করার পর উক্ত গোনাহকে প্রকাশ না করার নির্দেশ রাসূলুল্লাহ সাঃ দিয়েছেন।যেমন- আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : ( ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ ﻭَﺇِﻥَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫَﺮَﺓِ ﺃَﻥْ ﻳَﻌْﻤَﻞَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﺑِﺎﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻋَﻤَﻠًﺎ ﺛُﻢَّ ﻳُﺼْﺒِﺢَ ﻭَﻗَﺪْ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝَ ﻳَﺎ ﻓُﻠَﺎﻥُ ﻋَﻤِﻠْﺖُ ﺍﻟْﺒَﺎﺭِﺣَﺔَ ﻛَﺬَﺍ ﻭَﻛَﺬَﺍ ﻭَﻗَﺪْ ﺑَﺎﺕَ ﻳَﺴْﺘُﺮُﻩُ ﺭَﺑُّﻪُ ﻭَﻳُﺼْﺒِﺢُ ﻳَﻜْﺸِﻒُ ﺳِﺘْﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻨْﻪُ )
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, আমার সকল উম্মাতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই অন্যায় যে, কোন লোক রাতের বেলা অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে, আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর দেয়া আবরণ খুলে ফেলল। সহীহ বুখারী-৬০৬৯ সহীহ?মুসলিম-২৯৯০

ইবনে হাজর আসক্বালানী রাহ, ফাতহুল বারীতে লিখেন,
ﻭﻳﺆﺧﺬ ﻣﻦ ﻗﻀﻴﺘﻪ : ﺃﻧﻪ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﻟﻤﻦ ﻭﻗﻊ ﻓﻲ ﻣﺜﻞ ﻗﻀﻴﺘﻪ ﺃﻥ ﻳﺘﻮﺏ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻳﺴﺘﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻭﻻ ﻳﺬﻛﺮ ﺫﻟﻚ ﻷﺣﺪ ﻛﻤﺎ ﺃﺷﺎﺭ ﺑﻪ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻭﻋﻤﺮ ﻋﻠﻰ ﻣﺎﻋﺰ . ﻭﺃﻥ ﻣَﻦ ﺍﻃﻠﻊ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﻳﺴﺘﺮ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﻤﺎ ﺫﻛﺮﻧﺎ ، ﻭﻻ ﻳﻔﻀﺤﻪ ، ﻭﻻ ﻳﺮﻓﻌﻪ ﺇﻟﻰ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻘﺼﺔ " ﻟﻮ ﺳﺘﺮﺗﻪ ﺑﺜﻮﺑﻚ ﻟﻜﺎﻥ ﺧﻴﺮﺍً ﻟﻚ
"মাইয ইবনে মালিক আল-আসলমি এর ঘটনা থেকে আমরা অনুধাবন করতে পেরেছি যে,যে ব্যক্তি মাইয ইবনে মালিক আল-আসলমীর মত ঘটনায় যুক্ত হয়ে যাবে,তার জন্য মুস্তাহাব হলো,সে আল্লাহর নিকট তাওবাহ করে নিবে এবং উক্ত বিষয়কে গোপন করে নিজ ইজ্জত-আব্রুকে ঢেকে রাখবে। কারো নিকট সে তা প্রকাশ করবে না। যেমনটা আবু-বকর রাযি, এবং উমর রাযি, মাইয আসলমীকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এবং অন্য কেউ যদি সেই গোনাহকে জেনে ফেলে তার জন্যও সেই বিষয়কে ঢেকে রাখা মুস্তাহাব। সে যেন উক্ত ঘটনার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত-অপদস্থ না করে এবং উক্ত বিষয়কে ইমাম বা বিচারকের নিকট উপস্থাপন না করে। যেমনটা রাসূলুল্লাহ সাঃ আসলমীর ঘটনাকে উপস্থাপনাকারী হযরত হায্যাল রাযি, কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন যে, হে হায্যাল! তুমি যদি তোমার কাপড় দ্বারা বিষয়টাকে ঢেকে রাখতে তাহলে সেটা তোমার জন্য ভালো হতো তথা সওয়াবের কারণ হতো। (ফতহুল বারী-১২/১২৪)

এটা আল্লাহর সবিশেষ অনুগ্রহ যে,তিনি বান্দার গোনাহসমূহের উপর পর্দা ঢেলে দেন।বান্দার গোনাহকে প্রকাশ করেন না। এজন্য মানুষ নিতান্তই সে তার নিজেকে অপদস্থ করে যখন সে তার গোনাহকে প্রকাশ করে যা আল্লাহ ঢেকে রেখেছিলেন। বরং এক্ষেত্রে মানুষের উচিৎ হল, সে তার গোনাহকে আল্লাহর পর্দার দ্বারা ঢেকে রাখবে। শরয়ী প্রমাণাদি এ বিষয়টিকে জোড় প্রমাণ করে উপস্থাপন করে। যেমন- হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻋَﻦْ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ : ( ﻟَﺎ ﻳَﺴْﺘُﺮُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﻋَﺒْﺪٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺇِﻟَّﺎ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- আল্লাহ (তাওবাহর মাধ্যমে)দুনিয়াতে যদি কোনো বান্দার দোষকে ঢেকে রাখেন, তাহলে কিয়ামতের দিনও সেই দোষকে ঢেকে রাখবেন। (সহীহ মুসলিম-২৫৯০)

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,

এ সব মূলনীতির আলোকে আমরা বলতে পারি, মহিলাকে তার স্বামী পূর্বে কোনো গোনাহ বা অ্যাফেয়ার সম্পর্কে কিছুই জিজ্ঞাসা করবে না। যদি নারীকে চাপ প্রয়োগ বা জোড়ালো ভাবে জিজ্ঞাসা করা হয়, তবে সে তাওরিয়াহ করতে পারে। তাওরিয়াহ হল, এমন কথা যা থেকে শ্রুোতা কিছু একটা বুঝে নিবে। কিন্তু বক্তা অন্য কিছু উদ্দেশ্য নিবে।যেমন- স্ত্রী বলবে, আমার কারো সাথে কোনো সম্পর্ক ছিলো না। উদ্দেশ্য নিবে, আজকে বা গতকাল কারো সাথে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না।

যখন সে কাউকে বিয়ে করে নেবে, তখন সে যেন তার স্ত্রীকে অতীত জীবন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা না করে, খোজখবর না নেয়। কেননা দোষ গোপন রাখাই আল্লাহর পছন্দনীয়। যা কারো অতীত জীবনী তালাশের বিরোধী। এতে করে সন্দেহের সৃষ্টি হয় যা সংসার নামক প্রশান্তিদায়ক বস্তুকে অগ্নিময় করে তুলে। মানুষকে অস্থির ও পেরেশান করে তুলে। স্বামীর জন্য এটাই যথেষ্ট যে সে তার স্ত্রীকে ইবাদতে লিপ্ত দেখবে। তার ফরমাবরদার হবে। ঠিক এমনিভাবে স্ত্রী তার স্বামীকে অতীত জীবন সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করবে না। স্বামী কি ইতিপূর্বে কাউকে ভালবেসেছিলো? অন্য কারো প্রতি তার মন কখনো চলে গিয়েছিলো?সে কি কোনো গোনাহের কাজে কখনো গিয়েছিলো? কেননা এমনসব প্রশ্নে কোনো উপকার নেই। বরং এর দ্বারা অপকারের এমন সব দরজা খুলে যায়, যার সংশোধন কখনো সম্ভবপর হয় না। স্বামী যদি স্ত্রীকে বারংবার জিজ্ঞাসা করে। অথবা এ বিষয়ে স্ত্রীর মুখ থেকে হ্যাঁ/না শুনার জন্য চাপ প্রয়োগ করে, অন্যদিকে স্ত্রী নিজেকে বাঁচানোর অন্য কোনো রাস্তা খুজে না পায়,তাহলে সে নিজের ভবিষ্যৎ জীবনকে সন্দেহমুক্ত রাখতে তাওরিয়াহ করে কসম করতে পারবে।

কিন্তু যদি এমন হয় যে,পূর্বের রিলেশনের কথা স্বামী একদিন জেনে যাবে এবং রিলেশনটাও এ পর্যায়ের ছিলো, অস্বীকার করে পার পাওয়া যাবে না এবং এটা যে স্বামী জানবে, এ সম্পর্কে অধিকাংশ ধারণা থাকে।স্বামী ভবিষ্যতে জানলে সংসার বিষময় হয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বিয়ের পূর্বেই স্বামীকে অবগত করে দেওয়া উচিৎ।
আরো বিস্তারিত জানুন- ifatwa.info/906/  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে এখন আর আপনি আপনার স্বামীকে পূর্বের সেই রিলেশন এবং বিবাহের কথা প্রকাশ করবেন না।

এক্ষেত্রে আপনি মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে খালেছ দিলে কান্নাকাটি করে তওবা করে নিবেন এবং মহান আল্লাহর কাছে ওয়াদা করবেন যে আপনি আর কোনদিন এ ধরনের গুনাহের কাজ করবেন না,গায়রে মাহরাম কাহারো সাথে সম্পর্ক, যোগাযোগ রাখবেননা।

ইনশাআল্লাহ বাকি জীবনে আপনার কোন সমস্যা হবে না


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...