ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ভাত খাওয়ার সময় সালাম দেয়া নিষেধ এ মর্মে কোন হাদীস নেই!
ইমাম আজলুনী রহঃ বলেনঃ
( ﻻ ﺳﻼﻡ ﻋﻠﻰ ﺃﻛﻞ ) ﻟﻴﺲ ﺑﺤﺪﻳﺚ،
'খাওয়ার সময় সালাম নেই' এই কথাটা হাদীস নয়।এরকম কোনো হাদিস পাওয়া যায় নি।
কাশফুল খিফা ও মুযিলুল ইলবাস;(২/৩৬২)
তবে মুখে খাবারের লোকমা থাকা অবস্থায় সালাম দেয়া যাবে না।কেননা তখন উক্ত ব্যক্তির জন্য জবাব দেয়াটা কষ্টকর হবে।
যেমন ইমাম নববী রহ বলেন.....
" ﻭﻣﻦ ﺫﻟﻚ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻳﺄﻛﻞُ ﻭﺍﻟﻠﻘﻤﺔ ﻓﻲ ﻓﻤﻪ ، ﻓﺈﻥ ﺳﻠَّﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻷﺣﻮﺍﻝ ﻟﻢ ﻳﺴﺘﺤﻖّ ﺟﻮﺍﺑﺎً ، ﺃﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﻛﻞ ﻭﻟﻴﺴﺖ ﺍﻟﻠﻘﻤﺔُ ﻓﻲ ﻓﻤﻪ ﻓﻼ ﺑﺄﺱَ ﺑﺎﻟﺴﻼﻡ ،
ﻭﻳﺠﺐُ ﺍﻟﺠﻮﺍﺏ
তরজমাঃ- ইমাম নববী রহ কোন সময় সালাম দেয়া উচিৎ এবং কোন সময় অনুচিৎ তার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেনঃঐ সময় সালাম দেয়া মাকরুহ যখন কেউ খাওয়ার মধ্যে থাকে এবং খাদ্য তার মুখে থাকে, যদি এমতাবস্থায় কাউকে সালাম দেয়া হয়,তাহলে তার উপর সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব হবে না।কিন্তু যদি কেউ খাবার টেবিলে বা খাদ্য খেতে থাকে, এবং তার মূখের খাবার নয় এমন অবস্থায় কেউ তাকে সালাম প্রদান করে তাহলে সালামের উত্তর দেয়া তার উপর ওয়াজিব।(আল-মিনহাজ-১/২৫১)
অথবা কেউ কেউ এ দৃষ্টিকোণেও খাবের সময় সালাম না দেয়ার কথা বলে থাকেন যে,সালামের অর্থ হল মুসাফাহা অর্থাৎ খাবার সময় মুসাফাহা করা যাবে না।
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " রয়েছে,
ولا يسلم على من كان منشغلا بالأكل واللقمة في فمه، فإن سلم لم يستحق الجواب، أما إذا سلم عليه بعد البلع أو قبل وضع اللقمة في فمه فلا يتوجه المنع ويجب الجواب،
খাবার মূখে রয়েছে এমন অবস্থায় সালাম দেয়া যাবে না।যদি কেউ এমতাবস্থায় সালাম দেয় তাহলে সে সালামের জবাব পাওয়া যোগ্য নয়।খাবার গিলে ফেলার পর অথবা মুখে খাবার দেয়ার পূর্বে যদি কেউ তাকে সালাম করে তাহলে এমতাবস্থায় সালামের জবাব দেয়া তার উপর ওয়াজিব।{২৫/১৬৫}
হাকিমুল উম্মত থানভী রাহ আদাবুল মু'আশারাত গ্রন্থে খাবার সময় সালাম প্রদাণ কে এ দৃষ্টিকোনে মাকরুহ বলেছেন যে, এমতাবস্থায় আহারকারীর নিকট খাবার গ্রহণের জন্য সওয়াল করা হয়ে যায়।
তখন অর্থ হয়তো এই দাড়াবে যে,যে ব্যক্তি সালাম করল,সে যেন সালামকৃত ব্যক্তির নিকট খাবারের সুওয়াল করছে।
সু-প্রিয় পাঠক ও দ্বীনী ভাই!
সুওয়ালের আশংকা না থাকলে সালাম দেয়া যাবে।
(২)
যে ব্যক্তি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে সর্বশেষ ইশারার মাধ্যমেও নামায আদায় করতে অক্ষম।এবং সুস্থতার আশা প্রায় গৌণ।এমন ব্যক্তি শরীয়তের বিধি-বিধানের মুকাল্লাফ নয়।অর্থা ঐ ব্যক্তির যিম্মা থেকে নামায-কে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৫৪৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/1411
এমন না হলে প্রত্যেক নামাযের বিনিময়ে একটি ফিতরা সমপরিমাণ কাফফারা দিতে হবে।
ইবাদত দুই প্রকারঃ- (১)ইবাদতে বদনি(শারিরিক ইবাদত।(২)ইবাদতে মালি(মাল খরচের মাধ্যমে ইবাদত)।
একজন অন্যজনের পক্ষ্য থেকে ইবাদত করতে পারবেন কি না?
এ সম্পর্কে বলা যায় যে, নফল ইবাদত যে কেউ অন্যর পক্ষ্য থেকে করতে পারবে-যাকে পরিভাষায় ই'সালে সওয়াব বলা হয়- জীবিত বা মৃত যে কারো জন্য ইবাদত করা যায়,চায় ইবাদতে বদনি হোক বা ইবাদতে মালি হোক।তবে ফরয ইবাদতের বেলায় হুকুম কিছুটা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্য।ফরয ইবাদত যদি বদনি হয়,তাহলে সে ইবাদত-কে একে অন্যর পক্ষ্য থেকে আঞ্জাম দেয়া যাবে না।কিন্তু যদি সে ইবাদত মালি হয়,বা বদনি ও মালির সংমিশ্রণে হয়,তাহলে সে ইবাদতকে একে অন্যর পক্ষ্য থেকে আদায় করা যাবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/1638
(৩)
https://www.ifatwa.info/1163 নং ফাতাওয়ায় আমরা স্পষ্টকরে বলেছি যে, শবে বরাতের রাতে বিশেষ কোনো আ’মল নাই।সুতরাং শবে বরাত উপলক্ষ্যে বিশেষ কোনো খাবার দাবারের আয়োজনকে জরুরী বা সওয়াবের কাজ মনে করা সম্পূর্ণ বিদ’আত।হ্যা সওয়াবের কাজ বা জরুরী মনে না করে, কেউ যদি শবে বরাতের দিনে ভালো কোনো খাবারের আয়োজন করে, তাহলে এমনটা করার রুখসত থাকবে।হ্যা এই দিনে বিশেষ ভাবে রুটি বানানোর যদি কোনো রেওয়াজ থাকে,তাহলে এটা অবশ্যই বিদ’আত হবে।