আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (16 points)

আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ,
উস্তায ইমদাদুল হক্ব এর নিকট উত্তর আশা করছি, আশা করি একটু বিস্তারিত উত্তর দিবেন, চিন্তা হচ্ছে উস্তায.....

আমি আমার বোনের হয়ে বলছি, তার সমস্যা হচ্ছে, তাকে তার প্রতিবেশি বিভিন্ন হুমকি দিতো যে তাকে বিয়ে করতে দিবেনা, ইত্যাদি । তো তার আম্মু ভয়ে এক কবিরাজ থেকে বান কাটার সিদ্ধান্ত নেন । কবিরাজ নিজে বলেছে সে নাকি কুরআন দ্বারা চিকিৎসা করে - তাই সে চিকিৎসা করতে সম্মত হয় । (এক ফাতওয়া ওয়েবসাইট থেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো কুরআনের আয়াত দিয়ে তাবিজ লেখা হলে এই চিকিৎসা গ্রহণ করা যাবে) । 

কবিরাজ তাকে কিছু পানি পড়া, তেল, ১টা ফুল, আর ১টা তাবিজ কোমরে বাঁধার জন্য, আর ১টা উঠোনে গাছে রাখার জন্য দেয় । তার কিছুটা সন্দেহ লাগে এসব কুফরি চিকিৎসা কিনা - তারপরও কুরআন দ্বারা তাবিজ লিখা হয়েছে বলে বিশ্বাস করে চিকিৎসা নেয় । 

এরমধ্যে সে কবিরাজের ভন্ডামি সংক্রান্ত কিছু লেখা পায় রুকইয়াহ সাপোর্ট গ্রুপে, সে তা না পড়ে ইচ্ছে করেই এড়িয়ে যায় নিজের চিকিৎসার প্রতি বিশ্বাস রেখে । (অথচ সেটা পড়লে কবিরাজ যে প্রতারণা করেছে তার সাথে তা সে বুঝতে পারতো)

তারপর প্রতিবেশির আচরণ আরো বেশি ক্ষিপ্র হয়ে উঠলে ওই কবিরাজ টাকা কামানোর জন্য আমার বোনের মাকে নাজুক অবস্থায় থাকার কারণে কিছু চিনি পড়া ও পানি দেয় যেকোনো পাত্র পক্ষকে খাওয়াতে, বলেছে এটা জাদু হবেনা, প্রতিবেশির কুমন্ত্রণা কাজ না করার জন্য, সম্বন্ধ বসার জন্য এসব দেয়া হয়েছে । (আমার বোন পরে পড়াশোনা করে বুঝতে পেরেছে এসব কবিরাজের ভন্ডামি, এবং এসব শিরক, তাবিজ খুলে দেখেছিলো সব শয়তানের সিম্বল আঁকা । যদিও তার মন বারবার বলছিলো এসব কুফরি চিকিৎসা হয়তো, চিকিৎসার মাঝপথ থেকে ফিরে আসতেও ভয় পাচ্ছিলো হিতে বিপরীত হবে কিনা) । 

তো এর কয়েকমাস পর তার বিয়ে হয়, 
আমার প্রশ্ন হলো, 

১) ওই চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় বোনের বিয়ে সম্পন্ন হয়, যেহেতু শিরকে লিপ্ত থাকা অবস্থায় তার বিয়ে হয়েছে, এক্ষেত্রে বিয়ে কি সহিহ হয়েছে? (যেহেতু তার মন বারবার বলছিলো এসব কুফরি চিকিৎসা হয়তো, সে ইচ্ছে করেই কবিরাজের ভন্ডামি লিখাটা না পড়ে এড়িয়ে গিয়েছিলো অন্ধবিশ্বাস করে) 

২) সে এখন ১মাসের প্রেগন্যান্ট, বাবু কি জারজ হতে পারে? 

৩) যদি বিয়ে নবায়ন করতে হয় তাহলে একটু কি করতে হবে বিস্তারিত জানালে উপকার হয় উস্তায । 

৪) আর তাওবাহ'র বিষয়ে, রব কি তার এই শিরকি গুনাহ ক্ষমা করবেন? (সে বারবার আফসোস করছে কেন সেদিন কবিরাজের ভন্ডামি বিষয়ক লিখাটি পড়লাম না, পড়লে আজ এতকিছু হতোনা) ।

শত্রুর কুমন্ত্রণা কাজে না দিতে এবং সম্বন্ধ স্থায়ী হতে কবিরাজ যে চিনি পড়া যেকোনো পাত্রপক্ষ কে খাওয়াতে দিয়েছিলো, তাতে বোনের মনে হয়েছিলো এসব জাদু হয়তো, কিন্তু কিভাবে যেন কবিরাজের কথায় প্রভাবিত হয়ে গিয়েছিলো জানেনা । কবিরাজটা মহিলা ছিলো । আমার বোনের এখন বারবার ওয়াসওয়াসা আসছে যে, সে ইচ্ছে করে ই বিয়ে না হওয়ার ভয়ে এসব চিকিৎসা করেছে, অথচ কোনো বিষয়েই সে সিউর ছিলোনা । ভীষণ চিন্তায় আছে....

1 Answer

0 votes
by (656,190 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ সবকিছুর খালিক ও মালিক,জগতের সব কিছু উনার হুকুমেই সংগঠিত হয়,তাবিজ বা ঔষধের অদ্য কোনো ক্ষমতা নেই। এমন আক্বিদা পোষণ করে জায়েয ও বৈধ কালামের মাধ্যমে চিকিৎসা হিসেবে ঝাড়-ফুক ও তাবিজ ব্যবহার বৈধ আছে।বিস্তারিত জানুন-
https://www.ifatwa.info/226

সুতরাং আকিদা বিশুদ্ধ তথা শে'ফা দানকারী একমাত্র আল্লাহ তা'আলা এমন আকিদা বিশ্বাস রেখে ঔষধী গাছের অংশ বিশেষ দ্বারা তাবিজ ব্যবহার করতে পারবেন।

নিম্নোক্ত হাদীসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি নিজ নাবালিগ সন্তাদিকে তাবিজ লঠকিয়ে দিতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়-
আমর ইবনে শুয়াইব তার সনদে বর্ণনা করেন,
ﻋﻦ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺷُﻌَﻴْﺐٍ ، ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻴﻪِ ، ﻋَﻦْ ﺟَﺪِّﻩِ ، ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ، ﻗَﺎﻝَ : ( ﺇِﺫَﺍ ﻓَﺰِﻉَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﻮْﻡِ ﻓَﻠْﻴَﻘُﻞْ : ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻜَﻠِﻤَﺎﺕِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺘَّﺎﻣَّﺎﺕِ ﻣِﻦْ ﻏَﻀَﺒِﻪِ ﻭَﻋِﻘَﺎﺑِﻪِ ﻭَﺷَﺮِّ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ، ﻭَﻣِﻦْ ﻫَﻤَﺰَﺍﺕِ ﺍﻟﺸَّﻴَﺎﻃِﻴﻦِ ﻭَﺃَﻥْ ﻳَﺤْﻀُﺮُﻭﻥِ ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﻟَﻦْ ﺗَﻀُﺮَّﻩُ ) . . ﻓَﻜَﺎﻥَ ﻋَﺒْﺪُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦُ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ، ﻳُﻠَﻘِّﻨُﻬَﺎ ﻣَﻦْ ﺑَﻠَﻎَ ﻣِﻦْ ﻭَﻟَﺪِﻩِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺒْﻠُﻎْ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻛَﺘَﺒَﻬَﺎ ﻓِﻲ ﺻَﻚٍّ ﺛُﻢَّ ﻋَﻠَّﻘَﻬَﺎ ﻓِﻲ ﻋُﻨُﻘِﻪِ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘুমে ভয় পায়, তখন সে যেন পড়ে-  'আউযু বিকালিমা-তিল্লাহিত-তাম্মাতি মিন গাদাবিহি ওয়া ই'ক্বাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহি ওয়া মিন হামাযাতিশ-শায়াতিনি,ওয়া আইয়াহদুরুন'  এই দু'আ পড়লে শয়তান কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি, তার সাবালক সন্তানাদিকে তা শিক্ষা দিতেন।এবং নাবালক সন্তাদির গলায় উক্ত দু'আ তাবিজ আকারে লিখে ঝুলিয়ে দিতেন।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৪৭৭)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১) যেহেতু কবিরাজ বারংবার বলছে যে, সে কুরআন সুন্নাহ দ্বারা চিকিৎসা করতেছে, তাই তা কুফরি হবে না। সুতরাং চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় বোনের বিয়ে হওয়ার দরুণ সেই বিয়ে ফাসিদ বা বাতিল হবে না।
(২) বাবু জারয হবে না।
(৩) বিয়েকে নবায়ন করতে হবে না।
(৪) আল্লাহ অবশ্যই ক্ষমা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (16 points)
উস্তায, 
১) বোন বলেছে সে তার আম্মুর নিকট জিজ্ঞেস করেছিলো, তার আম্মুই খবর নিয়ে বলেছেন উনি কুরআন দিয়ে চিকিৎসা করেন, তাকে কুরআন পড়তে দেখেছেন, অনেক ধার্মিক হিসেবে দেখেছেন, (বোন কবিরাজ মহিলার নিকট কখনোই যায়নি)। আর তাবিজ পরে খোলা হলে দেখা যায় যে সেখানে আয়াত ছিলোনা, শয়তানের সিম্বল ছিলো । 

২) এই ব্যাপারে যে বোনকে চিকিৎসা করা হয়েছে, সে আপনার ফাতওয়া পাওয়ার পরও তার মনে বারবার ওয়াসওয়াসা আসছে যে, সে শিরক করে ফেলেছে জেনেশুনে, তার বিয়ে সহিহ হয়নি । এক্ষেত্রে তার কি করণীয়...? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...