আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)

মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু মাদ্দুবিয়া (রহঃ) ...... ফাতিমা বিনত কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নিজেই অথবা অন্য কেউ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যাকাত সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিল। তিনি বললেনঃ যাকাত ছাড়াও ধন-সম্পদে অবশ্যই আরো হক রয়েছে। তারপর তিনি সূরা বাকারার এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেন। (অর্থ)- কোন পূণ্য নেই তোমাদের মুখ ফিরানোতে ......... শেষ পর্যন্ত (২:১৭৭) - ইবনু মাজাহ ১৭৮৯,তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯

১। এই হাদিসের ব্যাখা কী? যাকাত ব্যাতিত অন্য কোন ফরজ দানের ক্ষেত্র আছে কী ?
২। মাদ্রাসা, দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নির্মান ও দ্বীন প্রচারে অর্থ ব্যায় করা ফরজে আইন নাকি ফরজে কিফায়া? 

হানাফী মাযহাবের কিতারের রেফারেন্স সহ উত্তর দিলে খুশি হবো। 

 

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ مَدُّويَهْ، حَدَّثَنَا الأَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ، قَالَتْ سَأَلْتُ أَوْ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الزَّكَاةِ فَقَالَ " إِنَّ فِي الْمَالِ لَحَقًّا سِوَى الزَّكَاةِ " . ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الآيَةَ الَّتِي فِي الْبَقَرَةِ ( لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ ) الآيَةَ .

ফাতিমা বিনতু কাইস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি অথবা (রাবীর সন্দেহে) অন্য কেউ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যাকাত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেনঃ অবশ্যই যাকাত ছাড়াও (ধনীর) মালে আরো প্রাপ্য আছে। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা বাকারার এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “তোমরা পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাবে শুধু এটাই সাওয়াবের কাজ নয়, বরং সাওয়াব আছে- কোন ব্যক্তি আল্লাহ, আখিরাত, ফিরিশতা, কিতাব ও নবীদের প্রতি ঈমান আনলে এবং তার ভালবাসায় আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকীন, পথিক-মুসাফির, ভিক্ষুক ও ক্রীতদাসদের মুক্ত করার করলে এবং ওয়াদা করে তা রক্ষা করলে, দুর্ভিক্ষ, প্রতিকূল অবস্থা ও যুদ্ধ-বিগ্রহের সময় ধৈর্য ধরলে। এরাই প্রকৃত সত্যবাদী আর এরাই প্রকৃত মুত্তাকী"। (সূরাঃ বাকারা - ১৭৭)
(তিরমিজি ৬৫৯)

উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা: আল্লামা আল্ মা'নাবী (রহঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী ‘‘যাকাত ছাড়াও ব্যক্তির সম্পদে অপর ব্যক্তির অধিকার রয়েছে’’। যেমন- বন্দি-মুক্ত করা, নিরুপায় ব্যক্তিকে খাদ্য খাওয়ানো। এগুলো হলো যাকাতের বাইরের আবশ্যক দায়িত্ব। আল্লামা মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের মর্মার্থ হলো ভিক্ষুক এবং ঋণপ্রত্যাশীকে মাহরূম না করা এবং কেউ যদি বাড়ির দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন- হাড়ি-পাতিল, আগুন, পানি, লবন ইত্যাদি চায় তাহলে তাকে তা দেয়া উচিত।

হাদীসে বর্ণিত কথার প্রমাণ হিসেবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের যে আয়াতটি তিলাওয়াত করেন সেটি হলো- ‘‘পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নেই; কিন্তু পুণ্য আছে- কেউ আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নাবীগণে ইমান আনয়ন করলে এবং আল্লাহর ভালোবাসায় আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্যপ্রার্থীগণকে এবং দাসমুক্তির জন্য অর্থ দান করলে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বায়িম করলে ও যাকাত প্রদান করলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূরণ করলে, অর্থ-সংকটে, দুঃখ-কষ্টে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করলে’’। (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ১৭৭)

ত্বীবী বলেন, এ আয়াত দ্বারা দলীল পেশ করার কারণ হলো, এ আয়াতে সম্পদ ব্যয় করার কথাও বলা হয়েছে এবং পরক্ষণেই যাকাত প্রদানের কথা বলা হয়েছে। যা প্রমাণ করে যে, ব্যক্তির সম্পদে যাকাত ছাড়াও অন্য ব্যক্তির অন্য অধিকার রয়েছে। বলা হয়, হক বা অধিকার দু’ ধরনের। (এক) ঐ সমস্ত অধিকার যেগুলো প্রদান আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর আবশ্যক বিধান করেছেন। (দুই) ঐ সমস্ত অধিকার যেগুলো বান্দা তার কৃপণতা থেকে বাঁচার জন্য এবং আত্মশুদ্ধির জন্য নিজের ওপর আবশ্যক করে নিয়েছে।

(০২)
মাদ্রাসা, দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নির্মান এ অর্থ ব্যয় করার বিধান বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন হুকুম হবে। আমাদের সমাজ হিসেবে এটি ফরজ নয়। তবে কোন কোন এলাকার প্রেক্ষাপট অনুপাতে এটি ফরজ হতে পারে 

দ্বীন প্রচারে অর্থ ব্যায় করাকে উলামায়ে কেরামগন ফরজে কিফায়াহ বলেছেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...