حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ مَدُّويَهْ، حَدَّثَنَا الأَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ، عَنْ شَرِيكٍ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ فَاطِمَةَ بِنْتِ قَيْسٍ، قَالَتْ سَأَلْتُ أَوْ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الزَّكَاةِ فَقَالَ " إِنَّ فِي الْمَالِ لَحَقًّا سِوَى الزَّكَاةِ " . ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الآيَةَ الَّتِي فِي الْبَقَرَةِ ( لَيْسَ الْبِرَّ أَنْ تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ ) الآيَةَ .
ফাতিমা বিনতু কাইস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমি অথবা (রাবীর সন্দেহে) অন্য কেউ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যাকাত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলাম। তিনি বলেনঃ অবশ্যই যাকাত ছাড়াও (ধনীর) মালে আরো প্রাপ্য আছে। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা বাকারার এ আয়াত পাঠ করলেনঃ “তোমরা পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরাবে শুধু এটাই সাওয়াবের কাজ নয়, বরং সাওয়াব আছে- কোন ব্যক্তি আল্লাহ, আখিরাত, ফিরিশতা, কিতাব ও নবীদের প্রতি ঈমান আনলে এবং তার ভালবাসায় আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকীন, পথিক-মুসাফির, ভিক্ষুক ও ক্রীতদাসদের মুক্ত করার করলে এবং ওয়াদা করে তা রক্ষা করলে, দুর্ভিক্ষ, প্রতিকূল অবস্থা ও যুদ্ধ-বিগ্রহের সময় ধৈর্য ধরলে। এরাই প্রকৃত সত্যবাদী আর এরাই প্রকৃত মুত্তাকী"। (সূরাঃ বাকারা - ১৭৭)
(তিরমিজি ৬৫৯)
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা: আল্লামা আল্ মা'নাবী (রহঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী ‘‘যাকাত ছাড়াও ব্যক্তির সম্পদে অপর ব্যক্তির অধিকার রয়েছে’’। যেমন- বন্দি-মুক্ত করা, নিরুপায় ব্যক্তিকে খাদ্য খাওয়ানো। এগুলো হলো যাকাতের বাইরের আবশ্যক দায়িত্ব। আল্লামা মুল্লা ‘আলী ক্বারী (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের মর্মার্থ হলো ভিক্ষুক এবং ঋণপ্রত্যাশীকে মাহরূম না করা এবং কেউ যদি বাড়ির দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র যেমন- হাড়ি-পাতিল, আগুন, পানি, লবন ইত্যাদি চায় তাহলে তাকে তা দেয়া উচিত।
হাদীসে বর্ণিত কথার প্রমাণ হিসেবে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের যে আয়াতটি তিলাওয়াত করেন সেটি হলো- ‘‘পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নেই; কিন্তু পুণ্য আছে- কেউ আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নাবীগণে ইমান আনয়ন করলে এবং আল্লাহর ভালোবাসায় আত্মীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্যপ্রার্থীগণকে এবং দাসমুক্তির জন্য অর্থ দান করলে, সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বায়িম করলে ও যাকাত প্রদান করলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূরণ করলে, অর্থ-সংকটে, দুঃখ-কষ্টে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করলে’’। (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ : ১৭৭)
ত্বীবী বলেন, এ আয়াত দ্বারা দলীল পেশ করার কারণ হলো, এ আয়াতে সম্পদ ব্যয় করার কথাও বলা হয়েছে এবং পরক্ষণেই যাকাত প্রদানের কথা বলা হয়েছে। যা প্রমাণ করে যে, ব্যক্তির সম্পদে যাকাত ছাড়াও অন্য ব্যক্তির অন্য অধিকার রয়েছে। বলা হয়, হক বা অধিকার দু’ ধরনের। (এক) ঐ সমস্ত অধিকার যেগুলো প্রদান আল্লাহ তার বান্দাদের ওপর আবশ্যক বিধান করেছেন। (দুই) ঐ সমস্ত অধিকার যেগুলো বান্দা তার কৃপণতা থেকে বাঁচার জন্য এবং আত্মশুদ্ধির জন্য নিজের ওপর আবশ্যক করে নিয়েছে।
মাদ্রাসা, দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নির্মান এ অর্থ ব্যয় করার বিধান বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন হুকুম হবে। আমাদের সমাজ হিসেবে এটি ফরজ নয়। তবে কোন কোন এলাকার প্রেক্ষাপট অনুপাতে এটি ফরজ হতে পারে