আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ্ উস্তাজ।

একজন মেয়েকে তার স্বামী কি বাধ্য করতে পারে কোনো কাজে?মেয়েটি প্রেগন্যান্ট সে বরিশালে স্বামীর সাথে।মেয়েটির তো প্রসবকালীন সময়ে বাড়িতে যাওয়া লাগবে,মেয়েটির স্বামী জোর করে মেয়েটিকে শশুর বাড়ি রেখে আসবে সেখানে পর্দার পরিবেশ নেই।একজন মেয়ে এই কঠিন সময় টার মায়ের কাছে থাকতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক আর মেয়েটি শশুর বাড়ি থেকে এমন ব্যবহার পেয়েছে যে ঐ বাড়িতে যেতে ইচ্ছা করেনা,তার পর্দা নিয়ে নানা সমস্যা(অন্যান্য ক্ষেত্রে ভালো অনেক কিছুও আছে, আলহামদুলিল্লাহ।) মেয়েটি বাবার বাড়ি যাবে আর তার স্বামী জোর করে তাকে শশুর বাড়ি দিয়ে আসবে এটা নিয়ে সমস্যা হয়, অনেক সময় মেয়েটি বাড়ির লোক ফোন দিলে ফোন ধরতে দেয়না মোটকথা অনেকটা জিম্মির মতো।( হতে পারে কোনো বৈধ কারন থাকতে পারে)অনেক বুঝানো হয়েছে তাকে কোনো লাভ হয়নি।
১.এক্ষেত্রে মেয়েটির করনীয় কি?

আর মেয়েটিকে তার ননদের জামাই খারাপ বলেছে আর

 তিনি থাকাকালীন তাদের বাসায় যেতে নিষেধ করেছে ননদ কথা বলতোনা পর্দার বিষয় নিয়ে সমস্যা ও অন্যান্য সমস্যা ছিল।এখন মেয়েটিকে তার স্বামী ঐ বাষায় যেতে বলছে কিন্তু মেয়েটি যেতে চাইছে না,মেয়েটিকে কি ঐ বাসায় যেতেই হবে?

ঐ বাসায় যাওয়ার কথা বলার সময় স্বামী উদাহরন দিয়েছে যে তোমার বোন আর বোনার জামাই এরকম করতো তাহলে কি করতে মেয়েটি বলেছে আমার বোনোর জামাই আমার সাথে এরকম করলে ঠাস করে থাপ্পড় দিতাম এতে কি গীবত হয়েছে?(লেখা উনিশ বিশ হতে পারে)

 মেয়েটি স্বামীর সাথে ভালো আচরন ও আনুগত্য করার চেষ্টা করে করে কিন্তু অনেক সময় পরিস্থতির কারনে কথা বলতে বাধ্য হয় বেয়াদবি না করে সুন্দর ভাবে কথা বলার চেষ্টা করে মেয়েটির এই সময় যেহেতু শারীরিক মানসিক অনেক পরিবর্তন হয়েছে অনেক সময় রেগে যায় বিরক্ত হয়ে যায় মেয়েটি ওয়াসওয়াসার রোগী ভয়ে থাকে যদি স্বামীর সাথে খারাপ ব্যবহার হয়ে যায় যদি গুনাহ হয়ে আদেশ পালন করতে না পারলে,একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এক্ষেতে করনীয় কি?

অনেকটা মানসিক ডিপ্রেশন,উস্তাজের কাছে দোয়ার দরখাস্ত রইলো। জাঝাকাল্লহু খইর।
by (13 points)
উস্তাজ গীবত হয়েছে কিনা যদি বলতেন অনুগ্রহ ,প্রশ্ন জানতে চেয়েছি।

1 Answer

0 votes
by (628,650 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

قَوْلُهُ خَالٍ عَنْ أَهْلِهِ إلَخْ) ؛ لِأَنَّهَا تَتَضَرَّرُ بِمُشَارَكَةِ غَيْرِهَا فِيهِ؛؛ لِأَنَّهَا لَا تَأْمَنُ عَلَى مَتَاعِهَا وَيَمْنَعُهَاذَلِكَ مِنْ الْمُعَاشَرَةِ مَعَ زَوْجِهَا وَمِنْ الِاسْتِمْتَاعِ إلَّا أَنْ تَخْتَارَ ذَلِكَ؛ لِأَنَّهَا رَضِيَتْ بِانْتِقَاصِ حَقِّهَا هِدَايَةٌ )

স্ত্রীকে এমন একটি বাসস্থান দান করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব,যা স্বামীর পরিবার থেকে খালি থাকবে,কেননা সে অন্যর উপস্থিতির ধরুণ কষ্ট উপভোগ করবে,এবং তার মাল সামানা পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে না।তৃতীয় কারো উপস্থিতি স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক জীবন ও একান্ত সময় অতিবাহিত করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। এ জন্য একটি পৃথক বাসস্থান স্ত্রীর মৌলিক অধিকার।তবে যদি সে তার নিজ অধিকার বিসর্জন দিতে রাজি হয় যায় তাহলে তার জন্য অনুমিত রয়েছে (যদি এক্ষেত্রে গোনাহের কোনো সম্ভাবনা না থাকে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/430

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে মেয়েটিকে বাধ্যতামূলকভাবে তার মতের বাহিরে শশুড় বাড়িতে (যেখানে শরয়ী পর্দার পরিবেশ নেই) পাঠানো ঠিক হবেনা।

এক্ষেত্রে উভয় পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে মিটিং করে বিষয়টি সমাধান করলে ভালো হতো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 244 views
...