আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামুয়ালাইকুম
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছি, ফ্রি মিক্সিং ক্লাস। হোস্টেলে থাকি।
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তা'আলার ইচ্ছায় হালাল হারাম সম্পর্কে আমার বুঝ এসেছে এখন। আমি পাশাপাশি চাকরি ও করছিলাম, ফ্রি মিক্সিং হওয়ায় তা ছেড়ে দিতে পেরেছি, আলহামদুলিল্লাহ। আমি পর্দা মেন্টেন করি(বোরকা , নেকাব, no contact with males) , এখন আমি বুঝতে পারছি না আমার পড়াশোনা কতটুকু হালাল হচ্ছে।
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উবার করে যেতে হয় একা, এক্ষেত্রে ড্রাইভার তো পুরুষ মানুষ।

২. সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্লাস থাকে, প্রতিদিন DU থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এ আসতে যেয়ে ৭:২০ বেজে যায়, ফলে আমার মাগরীব সালাত এ দেরি হয়ে যাচ্ছে।

৩. চাকরি করার ইচ্ছায় মাস্টার্স শুরু করেছিলাম, কিন্তু এখন আমার আর ইচ্ছা নায় কারণ আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তা'আলার রহমতে আমার জরূরী না চাকরি করার, আর আল্লাহ তো আমাকে ঘরের মধ্যে থাকার জন্য বলেছেন। আমি অবিবাহিত। তাই প্রথমত মাস্টার্স করা আমার জন্য কতটুকু হালাল হচ্ছে তা জানতে চাই। আবার টাকা খরচ হবে অনেক।‌(Professional Masters)

৪. বাবা মা এমনিতেই অসন্তুষ্ট চাকরি ছেড়ে দেওয়ায়,  ওনাদের mentality এরকম যে আমি চাকরি করি, কিন্তু আল্লাহ সুবহানাল্লাহ তা'আলার রহমতে অর্থ উপার্জন আমার দরকার নেই, এখন পড়াশোনার জন্য আমার করনীয় কি?
আমি চাচ্ছি পড়াশোনা এখানে স্কিপ করে বাবা মার সাথে থাকি, ওনাদের খেদমত করি, কারণ এটাই আমার প্রধান দায়িত্ব এখন।

1 Answer

0 votes
by (621,810 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/13774/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গের শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১;
,
সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত শর্তাবলী পুরোপুরি ভাবে মেনে চলতে পারলে আপনার জন্য পড়াশোনা করা জায়েজ আছে।
অন্যথায় জায়েজ নেই।

পড়াশোনা এখানে স্কিপ করে বাবা মার সাথে থাকা,তাদের খেদমত করা,এমনটি আপনি করতে পারেন,সেক্ষেত্রে বাবা মাকে রাজী করাবেন।

বাবা মা রাজী না হলে সেক্ষেত্রে ক্লাশ না করে নিজ বাসায় থেকে শুধুমাত্র পরীক্ষা দেয়াই ভালো হবে।

বিষয়টি কর্তৃপক্ষ মেনে না নিলে সেক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্তাবলী পুরোপুরি ভাবে মেনে চলতে পারলে আপনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন।

তবে সর্বাবস্থায় নিজের বিয়ের জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়ার পাশাপাশি পারিবারিক ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 

দ্রুত বিবাহের আমল গুলি করার পরামর্শ থাকবে। 

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...