আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
42 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (38 points)
উস্তাদ,

আমার প্রশ্ন হলো: আমি একটু মাইন্ডকে ফ্রেশ করার জন্য কিছুক্ষণ গেম খেলতে পারবো? গান বন্ধ করে
মানুষের আকৃতি পশুপাখির আকৃতি মুক্ত গেম গাড়ির গেম আমি খেলতে পারবো কি?


১/ কোনো গাড়ির গেমে যদি মানুষ/ পশুপাখির আকৃতি না থাকে কিন্তু গাড়ি একটা আরেকটাকে আক্রমণ করতে হয়। গেমটি খেলা যাবে ?উল্লেখ্য :কোনো মানুষের ছবি ও অশ্লিল দৃশ্য নেই গানও বন্ধ করে খেললে গেমটি খেলা যাবে। গেমটিতে একটি গাড়ি আরেকটি গাড়িকে আক্রমণ করা অনেক বেশি নির্দয় বা নিষ্ঠুর লাগে ব্যাপারটা যদি এমনও না হয় যেহেতু গাড়িগুলো দেখতে রিয়েল থাকেনা অনেক গেমেই কার্টুনিশ একটা ভাব থাকে। এরকম গেম খেলা যাবে?


২ / গাড়ির racing গেম খেলা যাবে? অশ্লিল দৃশ্য ও মানুষ/পশু পাখির দৃশ্য না থাকলে এবং গানও অফ রা

খলে?

1 Answer

0 votes
by (618,420 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحمن

https://ifatwa.info/30049/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
কোরআনে কারীমে মু'মিনদের উত্তম ও প্রশংসনীয় গুনাবলীর আলোচনা করতে যেয়ে বলা হয়,
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻫُﻢْ ﻋَﻦِ ﺍﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣُﻌْﺮِﺿُﻮﻥَ
যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত,(মু'মিনুন-৩) 
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻐْﻮِ ﻣَﺮُّﻭﺍ ﻛِﺮَﺍﻣًﺎ
এবং যখন অসার ক্রিয়াকর্মের সম্মুখীন হয়, তখন মান রক্ষার্থে ভদ্রভাবে চলে যায়।(ফুরকান-৭৩)

ইসলামে দু’ ধরণের খেলাধুলাকে বৈধ রেখেছে দু’শর্ত সাপেক্ষে।

যে দুই ধরণের খেলা জায়েজ-

১-শারিরীক উপকার নিহিত।যেমন দৌড়, ফুটবল ও ক্রিকেট ও হতে পারে।

২-দ্বীনের শত্রুর বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণমূলক খেলা। যেমন তীরন্দাজী, ঘোড় দৌড় ইত্যাদি।

এসব খেলা জায়েজ থাকার জন্য শর্ত দু’টি। যথা-

১- ফরজ ও ওয়াজিব কোন ইবাদতে বিঘ্ন না হতে হবে।

২-এর সাথে আর কোন গোনাহের বিষয় মিলিত না হতে হবে। যেমন জুয়া, বেপর্দা ইত্যাদি।
এছাড়া বাকি সব খেলাই অহেতুক হওয়ায় মাকরূহ বা নাজায়েজ।

যে সমস্ত কাজে দুনিয়া, আখেরাত ও স্বাস্থ্যগত কোনো উপকার নেই, ঐ সমস্ত অনর্থক কাজে সময় ব্যয় করা শরীয়তে নিষেধ। ক্যারাম বোর্ড খেলায় কোনো ধরণের উপকারিতা না থাকায় তা নাজায়েজ। (আল বাহরুর রায়েক-৮/১৮৯, ফাতাওয়া শামী-৬/৩৯৫)

বিস্তারিত জানুনঃ   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ ) 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে।(সুনানু তিরমিযি-২৪১৬)

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীস সমূহ থেকে বুঝা গেল যে, ইসলামী শরীয়তে সময়ের প্রতি যত্নশীল হওয়া ও লক্ষস্থির জীবন গঠনের নির্দেশ হয়েছে।

খেলাধুলা ও রং তামাশা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।কিন্তু বিনোদন নয়;বরং বললে ভুল হবে না যে,যেই বিনোদনের অর্থ হলো আনন্দ ও খুশি লাভ করা। শরয়ী আনন্দ সম্ভলিত সেই বিনোদন ইসলামে কেবল অনুমোদিতই নয়;বরং এক পর্যায়ে প্রশংসনীয় ও বটে।যাতে করে শারিরিক অলসতা ও অবসাদ কেটে যায় এবং মনোবল ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয় আর মানুষ প্রফুল্লতার সাথে জীবনের শ্রেষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনে মনোযোগী হতে পারে।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/673

ছবি ভিডিও হারাম।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2253

★মোবাইলে/কম্পিউটারে গেম খেলার শরয়ী বিধানঃ  

বর্তমান স্মার্টফোন,কম্পিউটারের বেশিরভাগ গেমসে আছে প্রাণীর ছবি। এছাড়াও অনেক সময় এই গেমসগুলোতে আরো অনেক মন্দ ও গোনাহর বিষয় যুক্ত থাকে। 
যেমন, ১. মিউজিক, গান, বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র।
 ২. বেপর্দা নারীদের নগ্ন ও অশ্লীল ছবি। 
৩. কাফেরদেরকে সম্মান করা, তাদের নষ্ট সংস্কৃতিকে প্রচার করে মুসলিম শিশু-কিশোর ও যুবসমাজকে ধ্বংস করা। 
৪.কাফেরদের ধর্মীয় শিরকি-কুফুরী বিশ্বাস ও কাফেরদের চিহ্নকে কৌশলে মুসলিমদের মাঝে প্রচার করাসহ আরো বহু মন্দ-বিষয় এসব গেমসে থাকে। সর্বোপরি মোবাইলে গেমস খেলা মানে নিজের অমূল্য সম্পদ সময়কে অপচয় করা এবং অল্প থেকে ধীরে ধীরে এটা নেশায় পরিণত হওয়া।  

সুতরাং একজন মুসলিম হিসাবে এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
আবু হুরাইরা রাযি. বলেন , রাসূল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ,  من حُسنِ إسلام المرءِ تركُهُ ما لا يعنيه একজন ব্যক্তির ইসলামের পরিপূর্ণতার একটি লক্ষণ হল যে, তার জন্য জরুরী নয় এমন কাজ সে ত্যাগ করে। (জামে তিরমিযী ২২৩৯)
,
★মোবাইলে/কম্পিউটারে গেইম খেলা,এতে কোনো ফায়দা নেই।অযথা কালক্ষেপণ করা ছাড়া তাতে আর কিছুই নেই।

এ ধরনের খেলার ক্ষেত্রে যেহেতু দুনিয়া, আখেরাত ও স্বাস্থ্যগত কোনো উপকার নেই, তাই এধরনের খেলার অনুমতি শরীয়ত দেয়না। 
এহেন খেলা থেকে বিরত থাকা উচিত। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে মোবাইলে/কম্পিউটারে এরকম গেম সহ কোনো গেম খেলাই জায়েজ হবেনা।

(০২)
না,জায়েজ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...