আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
31 views
in পবিত্রতা (Purity) by (41 points)
১.সাদা স্রাব নির্গত হওয়ার কারনে মাসের বেশিরভাগ সময় আমার ওপর মাযুরের হুকুম থাকে।আবার কখনো কোন কোন ওয়াক্তে এক অজুতেই নামাজ পড়তে পারি যার কারনে ঐ সময় মাযুরের হুম থাকে না।কয়েকদিন আগে গোপনাঙ্গের ছিদ্রপথের একদম সাথের সামান্য অংশ কেটে  যায় এবং সেখান থেকে সামান্য কষ ও বের হতে থাকে যা পরিমাণে গড়িয়ে পরার মত না।আমি সব সময় এক অজুতে নামাজ পড়তে পারিনা প্রতি ওয়াক্তে বার বার টিস্যু দিয়ে চেক করতে হয় স্রাব নির্গত হলো কিনা।এখন সমস্যা হলো আমি নামাজ পড়ে যখন টিস্যু দিয়ে চেক করি তখন টিস্যু ভিজে ঠিকই  কিন্তু  এটা কি স্রাব নির্গত হওয়ার কারনে নাকি গোপনাঙ্গের ক্ষত থেকে যে কোষ বের হচ্ছে তার কারনে  ভিজে যাচ্ছে এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছি না কোন ভাবেই।যেহেতু নিশ্চিত হওয়ার সম্ভব হচ্ছে না টিস্যু স্রাব এর কারণে ভিজেছে নাকি ক্ষতস্থানে থেকে কষ বের হওয়ার কারনে। তাহলে  আমি কি টিস্যু ভিজা দেখলে ধরে নিব ওজু ভঙ্গ হয়ে গেছে?

২.আমার বাবার উপার্জন হারাম।আমার ভায়ের বয়স ১৭ বছর।ও একটা দোকানে চাকরি করে এবং ওর বেতন ৬০০০ টাকা।যেহেতু আমার বাবার উপার্জন হারাম আমি চাই আমার ভায়ের উপার্জিত  সব টাকা এখন জমাবো যেন একটা সময় পর জমানো টাকা দিয়ে ভাই হালাল ভাবে ব্যবসা করতে পারে এবং আমার পরিবারের উপার্জন যেন হালাল হয়ে যায়।আমি, মা, বাবা,ভায়ের ব্যক্তিগত  বিশেষ  জরুরতে  যদি অন্য উৎস  থেকে টাকার ব্যবস্থা না হয় শুধু ওই ক্ষেত্রেই আমার ভাইয়ের টাকা আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করবো এছাড়া কোন আত্মীয় স্বজন যেমন নানা, দাদি, ফুপু,চাচা এদের কাউকেই সেই টাকা হতে কিছু দেওয়া হবে না।কিন্তু আমার আম্মু চায় আমার ভাই তার উপার্জিত অর্থ থেকে আমার নানুকে মাঝে মধ্যে টাকা দিবে বা প্রয়োজন হলে মেহমানদের আপ্যায়নে এই টাকা থেকে কিছুটা ব্যয় করবে।কিন্তু আমি তার মতের সাথে সম্মত নই কারণ আমাদের নিজেদেরই তো হালাল টাকার অভাব তাহলে এই সমান্য টাকা আমি নিজে ভোগ না করে অন্যকে কেন দিব।
উল্লেখ্য আমার নানুর কাছে অনেক টাকা আছে এবং আমার মামা প্রতি মাসে তাকে হাত খরচ দেন কিন্তু সে এগুলো সব রেখে দেয় এবং আমাদের সামনে বলতে থাকে তার পান নেই সুপারি নেই ঔষধ নেই।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি যেভাবে বিষয়টি চিন্তা করছি তা কি ভুল?

1 Answer

0 votes
by (618,420 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   
,
সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 
আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন
,
আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা গ্রস্থ নারীর ন্যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ خَبَرَهَا وَقَالَ " ثُمَّ اغْتَسِلِي ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلَاةٍ وَصَلِّي "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য অযু করে সলাত আদায় করবে।
(আবু দাউদ ২৯৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৪), আহমাদ (৬/৪২, ২৬২)

حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন।
(আবু দাউদ ৩০৫)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত বিবরণ মতে আপনি মা'যুর কিনা,সেটা আগে নির্ণয় করতে হবে,যদি আপনি মা'যুর না হোন,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে টিস্যু ভিজা দেখলে ওজু ভঙ্গ হয়ে গেছে বলে ধরে নিয়ে পবিত্র হয়ে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করবেন।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আর যদি আপনি মা'যুর হোন,অর্থাৎ নামাজের শুরু ওয়াক্ত থেকে নিয়ে ওয়াক্তের শেষ পর্যন্ত আপনার স্রাব বের হতেই থাকে,এই ওযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে টিস্যু ভিজা দেখলে ওজু ভঙ্গ হয়ে যায়নি বলে ধরে নিবেন।

(আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করছেন,এই ভাবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
কেননা আপনি মা'যুর। 

পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে এই ওযর একবার পাওয়া গেলেও আপনি মা'যুর হিসেবেই বহাল থাকবেন।

আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন।

এমতাবস্থায় প্যাড, প্যান্টি বা পায়জামায় স্রাব লেগে থাকলেও তাহা প্রতি নামাজের আগে পাক করতে হবেনা বা পরিবর্তন করা আবশ্যক নয়।)

(০২)
আপনার ভাই যেহেতু বালেগ,তাই সে তো আপনার বাবার হারাম উপার্জিত টাকা হতে খেতে পারবেনা।

সুতরাং আপনার ভাইয়ের টাকা জমানো হলে তার আবার হারাম খেতে হচ্ছে,এটি কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

আপনার নানাকে সেই টাকা হতে হাদিয়া দিবে কি দিবেনা,সেটি একান্তই আপনার ভাইয়ের ব্যপার।

এ টাকা মালিক সে,সুতরাং সেই টাকা খরচ করা তার ইচ্ছাধীন। 

হ্যাঁ যদি আপনার ভাইয়ের টাকা হতে তাত ভরনপোষণ এর পর টাকা অবশিষ্ট থাকে,সেক্ষেত্রে অবশিষ্ট টাকা আপনার ভাই চাইলে জমাতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...