এ সম্পর্কে মূলনীতি হল, মানুষ জীবিত হোক বা মৃত হোক সর্বদা মানুষকে সম্মান করতে হবে,তাকে অপদস্থ করা যাবে না।মূত্যু পরবর্তী জানাযা সম্পন্ন হওয়ার পর মানুষকে দাফন করাই আল্লাহর বিধান।এমনকি লাশের যে অংশকে পাওয়া যাবে তাকেও দাফন করা।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻭَﻟَﻘَﺪْ ﻛَﺮَّﻣْﻨَﺎ ﺑَﻨِﻲ ﺁﺩَﻡَ
নিশ্চয় আমি আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি।(সূরা বনী ঈসরাঈল-৭০)
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা নিয়ম করে দিয়েছেন,মানুষ মৃত্যুর পর তার জানাযা শেষে তাকে দাফন করে দেয়া হবে।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﺛُﻢَّ ﺃَﻣَﺎﺗَﻪُ ﻓَﺄَﻗْﺒَﺮَﻩُ
অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে।(সূরা আবাসা-২১)
ﺃَﻟَﻢْ ﻧَﺠْﻌَﻞِ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽَ ﻛِﻔَﺎﺗًﺎ ﺃَﺣْﻴَﺎﺀ ﻭَﺃَﻣْﻮَﺍﺗًﺎ
আমি কি পৃথিবীকে সৃষ্টি করিনি ধারণকারিণীরূপে,
জীবিত ও মৃতদেরকে? (সূরা মুরসালাত-২৫-২৬)
ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺧَﻠَﻘْﻨَﺎﻛُﻢْ ﻭَﻓِﻴﻬَﺎ ﻧُﻌِﻴﺪُﻛُﻢْ ﻭَﻣِﻨْﻬَﺎ ﻧُﺨْﺮِﺟُﻜُﻢْ ﺗَﺎﺭَﺓً ﺃُﺧْﺮَﻯ
এ মাটি থেকেই আমি তোমাদেরকে সৃজন করেছি, এতেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে দিব এবং পুনরায় এ থেকেই আমি তোমাদেরকে উত্থিত করব।(সূরা ত্বাহা-৫৫)
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻛَﺴْﺮُ ﻋَﻈْﻢِ ﺍﻟْﻤَﻴِّﺖِ ﻛَﻜَﺴْﺮِﻩِ ﺣَﻴًّﺎ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,মৃত মানুষের হাড্ডি ভাঙ্গা জীবিত মানুষের হাড্ডি ভাঙ্গার সমতূল্য।(মসনদে আহমদ-২৪৭৩০,সুনানু আবি দাউদ-৩২০৭,সুনানু ইবনি মা'জা-১৬১৬)
জীবিতদের চিকিৎসার স্বার্থে কিছু শর্ত সাপেক্ষ্যে হারবী বা মুরতাদ কাফেরের লাশকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার অনুমতি সম-সাময়িক ফুকাহায়ে কেরামগণ দিয়েছেন।(মাজমা'উল ফেকহীল ইসলামী,জিদ্দা)
হাড় যদি কোনো মৃত মুসলমানের হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ তাকে দাফন করা ওয়াজিব।পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে রেখে দেওয়া কখনো জায়েয হবে না।বরং এর পরিবর্তে প্লাস্টিক ইত্যাদির তৈরী হাড় দ্বারা গবেষণা করাই উচিৎ।
আরব বিশ্বের বিশিষ্ট আলেম সালেহ অাল-ফাউজান বলেন,
শিক্ষার স্বার্থে লাশকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা বর্তমান সময়ে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরী হয়ে পড়েছে।সুতরাং যদি বিকল্প কোনো রাস্তা থাকে,তাহলে সে রাস্তায়-ই জরুরতকে পূর্ণ করা উচিৎ।যদি মৃতর হাড় ব্যতীত শিক্ষা গ্রহণের অন্য কোনো সুযোগ না থাকে, তাহলে হারবী কাফির বা মুরতাদ কাফিরের লাশ বা হাড়কে পরীক্ষা নিরীক্ষার স্বার্থে ব্যবহার করা যাবে।(ফাতাওয়ায়ে ফাউজান-২/৪৪)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
চিকিৎসার স্বার্থে প্রত্যেক মেডিকেল কলেজে একটি করে লাশ সংরক্ষণের অনুমতি ফুকাহায়ে কেরাম দিয়েছেন।যার দ্বারা উক্ত কলেজের সকল উপকৃত হবে।
প্রত্যেক ছাত্রর জন্য পৃথক পৃথক ভাবে লাশ বা হাড় সংরক্ষণের অনুমতি ফিকহে ইসলামিতে নেই।
একটা মুসলমান রাস্ট্রের জন্য আফসোস করতে হয় যে,এখন পর্যন্ত রাষ্ট্র এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছে না। অথচ বিষয়টা অতি জরুরী।
সুতরাং যদি মেডিকেলে একটি হাড় সেট থাকে,এবং সেটা উন্মোক্ত থাকে, সবাইকে দেখার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে ব্যক্তিগত ভাবে হাড় সংগ্রহ করা কখনো জায়েয হবে না।যদি সে সুযোগ না থাকে, তাহলে শিক্ষার্থীরা প্লাস্টিকের তৈরী হাড় দ্বারা নিজ নিজ প্রয়োজনকে পূর্ণ করার চেষ্টা করবে।যদি সেটাও সম্ভব না হয়,তাহলে শিক্ষার্থী ইস্তেগফারের সাথে হাড়কে সংগ্রহ করতে পারবে।
কোনো ছাত্র যদি মৃতর হাড়কে সংগ্রহ করে নেয়,তাহলে তার প্রয়োজন পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথেই সে উক্ত হাড়কে দাফন করে দেবে।বিক্রি বা কাউকে দান করতে পারবে না।
لما في الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (5/ 58):
"(كما بطل) (بيع صبي لا يعقل ومجنون) شيئا وبول (ورجيع آدمي لم يغلب عليه التراب) فلو مغلوبا به جاز كسرقين وبعر، واكتفى في البحر بمجرد خلطه بتراب (وشعر الإنسان) لكرامة الآدمي ولو كافرا ذكره المصنف وغيره في بحث شعر الخنزير.
(قوله: وشعر الإنسان) ولا يجوز الانتفاع به لحديث «لعن الله الواصلة والمستوصلة» وإنما يرخص فيما يتخذ من الوبر فيزيد في قرون النساء وذوائبهن هداية.
[فرع] لو أخذ شعر النبي صلى الله عليه وسلم ممن عنده وأعطاه هدية عظيمة لا على وجه البيع فلا بأس به سائحاني عن الفتاوى الهندية.
”مطلب الآدمي مكرم شرعا ولو كافرا“
(قوله: ذكره المصنف) حيث قال: والآدمي مكرم شرعًا و إن كان كافرًا، فإيراد العقد عليه و ابتذاله به و إلحاقه بالجمادات إذلال له. اهـ أي و هو غير جائز وبعضه في حكمه و صرح في فتح القدير ببطلانه ط. قلت و فيه أنه يجوز استرقاق الحربي و بيعه و شراؤه و إن أسلم بعد الاسترقاق، إلا أن يجاب بأن المراد تكريم صورته و خلقته، و لذا لم يجز كسر عظام ميت كافر و ليس ذلك محل الاسترقاق و البيع والشراء، بل محله النفس الحيوانية فلذا لايملك بيع لبن أمته في ظاهر الرواية، كما سيأتي، فليتأمل." اه
پڑھائی کے لیے انسانی ہڈیوں کو استعمال کرنا اور ان کی خرید و فروخت ناجائز ہے ، تفصیل کے لیے دیکھیے : احکام القرآن للتھانوی: ۱۳۰/۱۳، سورہ الاسراء، الآیة: ولقد کرمنا بنی آدم، المسئلة الثالثة: لا یجوز بیع اعضاء الانسان ولا کسر عظم المیت و لا جراحة لتعلیم الطب وتفتیش سبب الموت، أشرفیہ، دیوبند) ۔واللہ تعالیٰ اعلم
فتوي نمبر : 397-386/sd=7/1442
دارالافتاء،
دارالعلوم دیوبند
مزيد ديكهنے کے لئے
فتوی نمبر : 144203201298
دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن