আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমার গতকালকের প্রশ্ন ছিলো --

আমার রোগ (PCOS) জনিত কারণ এ অনিয়মিত মাসিক হয়। আমার মাসিক- ১ দিন অল্প রক্তের কয়েক ফোটা গেলে, আবার ২/৩ দিন বন্ধ থাকে আবার ৫ম দিনে যেয়ে হয়। আমাকে আগে বলা হয়েছিলো - মাসিক শুরুর পর থেকে ১০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে।  তাই গত ৮ এপ্রিল হতে শুরু হওয়া মাসিক এর জন্য  আমি ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করি ( যদিও মাসিক আরও আগে বন্ধ হয়েছিল, কিন্তু  হুটহাট শুরু হওয়ার সমস্যার জন্য অপেক্ষা করি) , ১৯ এপ্রিল দুপুর হতে নামায পড়া শুরু করি। গতকাল, ২ মে আসরের ওযু করতে যেয়ে দেখি আবার রক্তের ফোটা যাচ্ছে।  তাই আমি গতকাল আসর হতে নামায বন্ধ রেখেছি। আজও নামায পড়ি নি এখনো ।

আমি এ নিয়ে বিধান জানতে চাচ্ছি, আমি কি নামায পড়বো?  নাকি আবার ১০ দিন অপেক্ষা করবো? নাকি আমার নামায ইচ্ছাকৃত কাযা হচ্ছে?


যেটায় আপনার উত্তর ছিলো -এপ্রিল মাসে আপনার হায়েজ আসলে কোন দিন বন্ধ হয়েছিলো?

১৭ এপ্রিলের আগে আপনার হায়েজ বন্ধ হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে ২ মে আসরের ওয়াক্তে যেই ব্লাড দেখেছেন,এটি যদি ন্যূনতম তিন দিন তিন রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে অথবা ১০ দিনের মধ্যে আবারও ব্লাড আসে, সেক্ষেত্রে আপনি এটিকে হায়েজ হিসেবে ধরবেন।


আর যদি ১৭ ই এপ্রিল বা ১৮ই এপ্রিল আপনার হায়েজ বন্ধ হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে দুই তারিখের এ ব্লাড কোনোভাবে হায়েজ নয়,

এটি ইস্তেহাজা। এমতাবস্থায় নামাজ চালিয়ে যেতে হবে।


কিন্তু আমার এক্ষেত্রে আর একটা কনফিউশান -

তাহলে কি উস্তাযা আমার গত শুক্রবার থেকে নামায ইচ্ছাকৃত কাজা হচ্ছে?  আমার আর ১ম দিনের পর এই ২ দিন সারাদিন কোনও রক্ত যায় নি, আমি শুক্রবার থেকে নামায পড়ি  নি,
আমি কি নামায শুরু করবো?

1 Answer

0 votes
by (618,660 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।    
হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
,
আরো জানুনঃ   

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বনিম্ন সময়সীমা হলো ৩ তিন,আর সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হাদীস শরীফে এসেছে   
أقل الحیض للجاریۃ البکر والثیب ثلاثۃ أیام ولیالیہا وأکثرہ عشرۃ أیام
دار قطني، السنن، 1: 219، رقم: 61
রাসুল সাঃ বলেন  মহিলাদের হায়েজের সর্বনিম্ন সীমা হলো ৩ দিন ৩ রাত,সর্বোচ্চ সীমা হলো ১০ দিন ১০ রাত।

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
যদি ১৭ ই এপ্রিল বা ১৮ই এপ্রিল আপনার হায়েজ বন্ধ হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে দুই তারিখের এ ব্লাড কোনোভাবে হায়েজ নয়,এটি ইস্তেহাজা। এমতাবস্থায় নামাজ চালিয়ে যেতে হবে।

সুতরাং আপনাকে নামাজ শুরু করতে হবে।
এবং ২ ই মে শুক্রবার হতে যে আপনি নামাজ আদায় করেননি,সেই নামাজ গুলির কাজা আদায় করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...