রমজান মাসে প্রতিটি আমলের অনেক গুণ বেশি ছওয়াব পাওয়া যায়। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘রমযানের ওমরা হজ্জ সমতুল্য।’ -জামে তিরমিযী, হাদীস ৯৩৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৯৮৬
অন্য এক বর্ণনায় (যা সনদের দিক থেকে দুর্বল) বিষয়টি এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, ‘রমযান মাসে যে ব্যক্তি একটি নফল আদায় করল সে যেন অন্য মাসে একটি ফরয আদায় করল। আর যে এ মাসে একটি ফরয আদায় করল সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরয আদায় করল। -শুআবুল ঈমান ৩/৩০৫-৩০৬
অর্থাৎ এ মাসে নফল আদায় করলে অন্য মাসের ফরযের ন্যায় ছওয়াব হয়। আর এ মাসের এক ফরযে অন্য মাসের ৭০ ফরযের সমান ছওয়াব পাওয়া যায়।
সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদিস ইবনে খুযাইমা তাঁর “সহীহ”নামক গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন: “রমজান মাসের ফযিলত শীর্ষক পরিচ্ছেদ; যদি এ হাদিসটিসহীহ সাব্যস্ত হয়”।
এরপর তিনি বলেন: আমাদের নিকট আলী ইবনে হুজর আল-সাদী হাদিস বর্ণনা করেছেন;তিনি বলেন: আমাদের নিকট ইউসুফ ইবনে যিয়াদ হাদিস বর্ণনা করেছেন; তিনি বলেন: আমাদের নিকট হুমাম ইবনে ইয়াহইয়া হাদিস বর্ণনা করেছেন আলী বিন যায়িদ বিন জাদআন হতে; তিনি সাঈদ ইবনে আল-মুসাইয়্যিব হতে, তিনি সালমান (রাঃ) হতে;
তিনি বলেন:
একবার শাবান মাসের শেষ দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে খোতবা (ভাষণ) দিলেন। খোতবা দিতে গিয়ে তিনি বলেন: “হে লোকেরা! আপনাদের নিকট এক মহান মাস হাজির হয়েছে। এক বরকতময় মাস এসেছে। এ মাসে এমন এক রাত আছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এমাসে সিয়াম পালন করা আল্লাহ ফরজ (আবশ্যকীয়) করেছেন এবং এ মাসের রাতে কিয়াম (নামায আদায়) করানফল (ফজিলতপূর্ণ) করেছেন। এ মাসে যে কোন একটি (নফল)ভালো কাজ করা অন্য মাসে একটি ফরজ কাজ করার সমান। আর এ মাসে কোন একটি ফরজআমল করা অন্য মাসে সত্তরটি ফরজআমল করার সমান। এটি হল- ধৈর্য্যের মাস; ধৈর্য্যের প্রতিদান হচ্ছে- জান্নাত। এটি হল- সহানুভূতির মাস। এটি এমন এক মাস যাতে একজন মুমিনের রিযিক বৃদ্ধি পায়। এ মাসে যে ব্যক্তিকোন একজন রোজাদারকে ইফতার করাবেতার সমূহ গুনাহ মাফ করেদেয়া হবে,সে ব্যক্তি জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি পাবে এবং তাকে সেই রোজাদারের সমান সওয়াব দেয়া হবে;কিন্তু রোজাদারের সওয়াবে কোন কমতি করা হবে না।তাঁরা বললেন- আমাদের মধ্যে সবার তো একজন রোজাদারকে ইফতার করানোর মত সামর্থ্য নেই।তিনি বললেন: কোন ব্যক্তিযদি একজন রোজাদারকে একটি খেজুর অথবা এক ঢোক পানি অথবা এক চুমুক দুধ দিয়েও ইফতার করায়আল্লাহ তাকেও এই সওয়াব দিবেন। এটি এমন মাস এর প্রথম ভাগে রহমত, দ্বিতীয় ভাগে মাগফিরাত এবং শেষ ভাগে রয়েছেজাহান্নামহতেনাজাত। আর যে ব্যক্তি তার কৃতদাসের দায়িত্ব সহজ করে দিবে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং জাহান্নাম থেকে তাকে মুক্তি দিবেন। সুতরাং এ মাসে আপনারা চারটি কাজ বেশি করে করুন। দুটি হল যা দিয়ে আপনারা আপনাদের রব্বকে সন্তুষ্ট করবেন। আর দুটি কাজ এমন যা আপনাদের না করলেই নয়।যে দুটি কাজ দ্বারা আপনারা আপনাদের রব্বকে সন্তুষ্ট করবেন: (১) এ বলে সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন ইলাহ (উপাস্য) নেই এবং (২) তাঁর কাছে ইসতিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। আর যে দুটো কাজ আপনাদের না করলেই নয় (৩) আপনারা আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করবেন এবং (৪) জাহান্নামের আগুন থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করবেন। আর এইমাসে যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে পেট ভরে খাওয়াবে আল্লাহ তাঁকে আমার হাউজ থেকে এক ঢোক পানি পান করাবেন যার ফলে সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত আর পিপাসার্ত হবে না।”
মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেন যে এই হাদীস যয়ীফ বা দুর্বল।
হ্যাঁ আপনি যদি উক্ত টাকা জমিয়ে রমজান মাসে এসে দান করেন,তাহলেও সওয়াব ৭০ গুণ বৃদ্ধি পাবে।