জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ
আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না।
(সুরা বাকারা ১৮৮)
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)
সরকারী বিভিন্ন কাজ সরকারের কর্মচারীদের দ্বারা না করিয়ে যখন বাইরের লোকদের দ্বারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পাদন বা পণ্য সরবরাহের অঙ্গীকার-সহ ঠিকাদারের দরপত্র বা মূল্যবেদন হলো টেন্ডার (tender)। টেন্ডার শব্দের অর্থ মূল্যবেদন বা দরপত্র।
★সুতরাং এভাবে কাজ নেওয়া জায়েজ আছে। এটি নাজায়েজ নয়।
যেমন আমার ফ্লাটের কাজ যে কন্টাক্টার কম টাকায় করে দিতে পারবে,তাকেই আমি কাজ দিবো।
ঠিক সরকার যখন বাহিরের লোক দ্বারা কোনো কাজ করিয়ে নেয়,সেক্ষেত্রে যে কম টাকার মধ্যে কাজটি করে দেওয়ার কথা বলবে,তাকেই কাজ দেওয়া হবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
সরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া ঠিকাদারী কাজ থেকে উপার্জিত অর্থ জায়েয হবে।
তবে এক্ষেত্রে শরীয়াহ বিরোধী কোনো কাজ করা যাবেনা,অন্যায় ভাবে টাকা উপার্জন করা যাবেনা।
১০০ টাকার কাজ নিয়ে ৫০ টাকার কাজ করা হচ্ছে,বাকি টাকার কাজ হচ্ছেনা,এমনটি করা যাবেনা।
১০০ টাকার কাজ নিয়ে ১০০ টাকারই কাজ করতে হবে।
এক্ষেত্রে শ্রমিকদের ন্যায় নিজেরও ন্যায় সঙ্গত ভাবে দৈনিক/মাসিক বেতন নিতে পারেন।
(০২)
কাজ নেয়ার সময়ে যদি ঘুষ দিতে হয়, সেক্ষেত্রে ঘুষ আদান প্রদান হারাম হলেও উপার্জন হালাল হবে।
ঘুষ কবিরা গুনাহ সমূহের একটি।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟﺮَّﺍﺷِﻲ ﻭَﺍﻟْﻤُﺮْﺗَﺸِﻲ .
ঘুষ প্রদাণকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের উপর রাসূলুল্লাহ সাঃ লা'নত দিয়েছেন।(মুসনাদে আহমদ-৬৭৯১সুনানে আবু-দাউদ-৩৫৮০)
عَنْ أَبِى أُمَامَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ مَنْ شَفَعَ لأَخِيهِ بِشَفَاعَةٍ فَأَهْدَى لَهُ هَدِيَّةً عَلَيْهَا فَقَبِلَهَا فَقَدْ أَتَى بَابًا عَظِيمًا مِنْ أَبْوَابِ الرِّبَا
(১৮৭১) আবূ উমামাহ (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজ ভাইয়ের জন্য কোন সুপারিশ করল, অতঃপর তাকে কোন উপহার প্রদান করা হল এবং সে তা গ্রহণ করল, সে ব্যক্তি আসলে সূদের দরজাসমূহের এক বড় দরজায় উপস্থিত হল।
(আবূ দাঊদ ৩৫৪৩, সিলসিলাহ সহীহাহ ৩৪৬৫)
اَلْفَصْلُ الثَّالِثُ وَعَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا مِنْ قَوْمٍ يَظْهَرُ فِيهِمُ الزِّنَا إِلَّا أُخِذُوا بِالسَّنَةِ وَمَا مِنْ قَوْمٍ يَظْهَرُ فِيهِمُ الرِّشَا إِلَّا أخذُوا بِالرُّعْبِ» . رَوَاهُ أَحْمد
আমর ইবনুল ’আস (রাঃ) বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে জাতির মাঝে যিনা-ব্যভিচার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে তারা দুর্ভিক্ষ ও অভাব-অনটনে পতিত হবে। আর যে জাতির মাঝে ঘুষের ব্যাপক প্রচলন শুরু হবে তারা ভীরুতা ও কাপুরুষতায় পতিত হবে।
(মুসনাদে আহমাদ ১৭৮২২, য‘ঈফাহ্ ১২৩৬, য‘ঈফ আল জামি‘ ৫২১১, য‘ঈফ আত্ তারগীব ১১৬২।)