আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আমার পরিচিত একজনের প্রশ্ন:

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
মুফতি সাহেবের নিকট আমার জানার বিষয় হল
আমি একটা দোকান নিয়েছি ১৫ লাখ টাকা এডভান্স দিয়ে,  দোকানের মালিক থেকে, দোকানের মালিক দোকানাটি অন্য জায়গায় জড়া দিয়েছে। ওই জায়গায় ভাড়া উঠে ৪০ হাজার টাকা, ভাড়ার ২০ হাজার টাকা দোকানের মালিকের ২০ হাজার টাকা আমার, ঐ এডভান্সের ১৫ লাখ টাকা যদি আমার দরকার হয়, তাহলে আমি দোকানের মালিকে তিন মাস আগে জানাইতে হবে তিন মাস পরে আমার এডভান্সের টাকা গুলো দিয়ে দিবে, তখন দোকানের মালিকের সাথে আমার কোন ভাড়া লেনদেন থাকবে না, টাকার কোন লেনদেন থাকবেনা।
উক্ত সুরত সহিহ হবে কি জানিয়ে উপকৃত করবেন।

1 Answer

0 votes
by (612,540 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/64796/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ভাড়াগ্রহীতা থেকে ভাড়া চুক্তির সময় অগ্রিম কিছু অর্থ গ্রহণের দু’টি পদ্ধতি প্রচলিত আছে।

১. ভাড়াদাতা জামানত হিসেবে ভাড়াগ্রহীতা থেকে একটি অংকের অর্থ গ্রহণ করে থাকে। ভাড়া-চুক্তি শেষে তা আবার ভাড়াগ্রহীতাকে ফেরত দিয়ে দিতে হয়। যাকে সিকিউরিটি মানি বলে। 

২. ভাড়ার অগ্রিম হিসেবে ভাড়াগ্রহীতা থেকে এককালীন কিছু অর্থ গ্রহণ করা হয় এবং প্রতি মাসেই এর থেকে কিছু কিছু করে ভাড়া কাটা হয়। যাকে এ্যাডভান্স বলে।

সিকিউরিটি মানি তথা জামানত হিসেবে যে অর্থ ভাড়াদাতার নিকট জমা রাখা হয় তা বন্ধক হিসেবে থাকে। আর বন্ধকী বস্তু ব্যবহার করা জায়েয নয়। তা ব্যবহার করা সুদের অন্তর্ভুক্ত। মুহাম্মাদ ইবনে সীরীন রহ. থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, আমার নিকট এক ব্যক্তি একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে। আমি এতে আরোহন করেছি। (এর কী হুকুম?) তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বললেন, তুমি এর পিঠ থেকে (আরোহন করে) যে উপকৃত হয়েছ তা সুদের অন্তর্ভুক্ত। ( মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ১৫০৭১)

বিখ্যাত তাবেয়ি ইমাম কাজি শুরাইহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সুদ পান করা কিভাবে হয়ে থাকে? তিনি বলেন, বন্ধকগ্রহীতা বন্ধকি গাভির দুধ পান করা সুদ পানের অন্তর্ভুক্ত। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ১৫০৬৯)

সুতরাং ভাড়াদাতার জন্য সিকিউরিটি মানি ব্যবহার করা কোনোভাবেই জায়েয নয়। 

আর এক্ষেত্রে সিকিউরিটির টাকা ভাড়াগ্রহীতা থেকে ঋণ হিসেবে নিলে তা ব্যবহার করা যাবে বলে অনেকে বলে থাকে,তা ঠিক নয়। কেননা সিকিউরিটি মানির টাকাকে ঋণ ধরা হলে যেক্ষেত্রে সিকিউরিটি মানির কারণে ভাড়া কম নেওয়া হবে সেক্ষেত্রে ঋণের কারণে ভাড়া কম নেওয়া হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। আর ঋণের কারণে কোনো সুবিধা ভোগ করা সুদের অন্তর্ভুক্ত।

তাছাড়া এভাবে একটি চুক্তির সাথে আরেকটি চুক্তি শর্তযুক্ত করে কারবার করাও নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

তাই সিকিউরিটির টাকা ভাড়াগ্রহীতা থেকে করয হিসাবে নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। বরং ভাড়াদাতা নিজে ব্যবহারের জন্য ভাড়াগ্রহীতা থেকে এককালীন কিছু অর্থ নিতে চাইলে তা এ্যাডভান্স তথা অগ্রিম ভাড়া হিসাবে নিতে পারবে। যা চুক্তি অনুযায়ী ভাড়া হিসেবে কর্তিত হবে।
(মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৬৬২৮; শরহুল মাজাল্লা, খালিদ আতাসী ৩/১৪৫, ১৯৬; মাবসূত, সারাখসী ১৪/৩৫, ২১/১০৮)

তবে এক্ষেত্রে এ্যাডভান্স তথা অগ্রিম ভাড়ার পদ্ধতিটি গ্রহণ করা জায়েজ।

এতে করে দোকান বা বাড়ির মালিক একত্রে বেশি টাকাও নিতে পারে এবং তা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধও বটে।

যদি দোকানের ভাড়াটিয়া অন্য কাউকে দোকানটি ভাড়া দেয়, তাহলে এর জন্য দুটি শর্ত রয়েছে:

(১) তিনি এমন কাউকে দোকান ভাড়া দিতে পারবেন না যার কাজের কারণে দোকানে ক্ষতি হয়।

(২) দোকানের ভাড়া প্রকৃত ভাড়ার চেয়ে বেশি হওয়া উচিত নয়, অন্যথায় অতিরিক্ত ভাড়া জায়েজ হবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত সহীহ নয়।
যেহেতু আপনি সেই দোকান ১৫ লাখ টাকা এডভান্স দিয়ে ভাড়া নিয়েছেন,সুতরাং মালিক আর সেই দোকান অন্যের কাছে ভাড়া দিতে পারবেনা।

বরং আপনি চাইলে শর্ত সাপেক্ষে ঐ দোকান অন্যের কাছে ভাড়া দিতে পারেন।
সেক্ষেত্রে আপনি যার কাছে সেই দোকান শর্ত সাপেক্ষে ভাড়া দিবেন,তার পুরো ভাড়া আপনি পাবেন।

দোকানের মালিক তাহা হতে কিছুই পাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...