আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
642 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (7 points)

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন মুফতি সাহেব হুজুর। আশা করি ভালো আছেন। 

প্রশ্নের বিবরণ: আমার খালাম্মার হাতে কিছু টাকা আছে। তিনি টা ব্যাংক এ রেখেছেন। সেখান থেকে 6% হারে সুদ আসে। আমি তাকে বুঝানোর পরে উনি সুদ নিজে ব্যবহার করেন নাই। আমি উনাকে বলেছি মুদারাবা হিসেবে ব্যবসা করলে লাভ ও হবে আবার সুদ বা হারাম হবে না। অর্থাৎ হালাল ভাবেই তিনি লাভবান হতে পারবেন। 

এখন আমি উনার কাছ থেকে 2 লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসা করব। আমি তাকে লাভের 10% হারে দিব। 

প্রশ্ন হলো:

(ক) মুদারাবা ব্যাবসা পদ্ধতি কিভাবে?

(খ) প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি কি মুদারাবা হিসেবে গণ্য হবে?

(গ) মুদারাবার কি মেয়াদ দিতে হবে?

(ঘ) পাঁচ বছর পরে যদি ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চাই তাহলে ওই সময় তো কম্পিউটারের দাম দুই লাখ থাকবে না। তখন কি খালাম্মাকে পুরো টাকা দিতে হবে নাকি ক্ষতিপূরণ হিসেবে কম টাকা দিলে চলবে?

(ঙ) পাঁচ বছরে যত ব্যবসা হবে তার 10% এবং ব্যবসা শেষে, খালার কাছ থেকে যে 2 লাখ টাকা এনেছি তা পুরাটাই দিতে চাই। হালাল পন্থায় এমন কোন ব্যবস্থা থাকলে জানাবেন। 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

আলহামদুলিল্লাহ,আল্লাহ তা'য়ালার অশেষ মেহেরবানীতে ভালো আছি। 

জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(ক)
ব্যবসার ক্ষেত্রে এক পক্ষের মাল,অপর পক্ষের শ্রম দেওয়াকে মুদারাবা বলা হয়।
এটি জায়েজ আছে। 

ইসলামী ফিকাহর পরিভাষায় একপক্ষের মূলধন ও অপরপক্ষের শ্রম, মেধা ও বুদ্ধির সমন্বিত রূপে যে ব্যবসা অস্তিত্ব লাভ করে তাকে মুদারাবা ব্যবসা বলা হয়। যিনি মূলধনের মালিক তাকে ‘রব্বুল মাল’ বা ‘সাহিবুল মাল’ ও যিনি শ্রমদান করেন বা উদ্যোগ নিয়ে মূলধন ব্যবহার করেন তাকে ‘মুদারিব’ বলা হয়। নবী (সা.) নবুয়ত লাভ করার আগে হজরত খাদিজা (রা.) এর সঙ্গে এ ব্যবসা করতেন, যা তিনি নবুয়ত  লাভ করার পরও কিছু দিন বহাল রেখেছিলেন। সাহাবায়ে কেরামের অনেকে এ ব্যবসা করতেন। আল্লামা কুরতুবি (রহ.) উল্লেখ করেছেন, ‘কিরাজ অর্থাৎ মুদারাবার বৈধতার ব্যাপারে মুসলমানদের মাঝে কোনোরূপ দ্বিমত নেই।’ (বিদায়াতুল মুজতাহিদ ২/২১৬)।

মুদারাবার ক্ষেত্রে শরীয়তের উসুল হলো যাহা লাভ হবে,তাহা শতকরা হারে উভয়ের মাঝে বন্টন করার চুক্তি করতে হবে।

কোনো নির্দিষ্ট টাকার চুক্তি করা যাবেনা,লোকসান হলে আগে লাভের টাকা থেকে সেটা পূরন করা হবে,অতঃপর মূলধন থেকে পূরন করা হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ     

بَاب الشَّرِكَةِ وَالْمُضَارَبَةِ

حَدَّثَنَا أَبُو السَّائِبِ، سَلْمُ بْنُ جُنَادَةَ حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ الْحَفَرِيُّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ اشْتَرَكْتُ أَنَا وَسَعْدٌ، وَعَمَّارٌ، يَوْمَ بَدْرٍ فِيمَا نُصِيبُ فَلَمْ أَجِئْ أَنَا وَلاَ عَمَّارٌ بِشَىْءٍ وَجَاءَ سَعْدٌ بِرَجُلَيْنِ .

শারীকাত (অংশিদারী) ও মুদারাবা ব্যবসা

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বদর যুদ্ধের দিন সাদ (রাঃ) , আম্মার (রাঃ) ও আমি গানীমাতের মালের ব্যাপারে অংশীদার হই (এই মর্মে যে, আমরা যা পাবো তা তিনজনে ভাগ করে নিবো)। আম্মার ও আমি কিছুই আনতে পারিনি। অবশ্য সাদ (রাঃ) দু’জন যুদ্ধবন্দী নিয়ে আসেন।

নাসায়ী ৪৬৯৭, আবূ দাউদ ৩৩৮৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৪/১৯৪, ইরওয়া ১৪৭৪। 


বিস্তারিত জানুনঃ 
,
(খ)
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি মুদারাবা হিসেবে গণ্য হবে।
তবে এখানে বলে নিতে হবে যে লাভ লোকসানে উভয়েই শরীক থাকবে। 
,
(গ)
উভয়ের সন্তুষ্টি চিত্তে যদি মেয়াদ নির্দিষ্ট না করা হয়,কোনো সমস্যা নেই।
,
(ঘ)
তিনিও ক্ষতির ক্ষেত্রে শরিক হবে,শতকরা হারে তাকে কম দিতে হবে।
,
(ঙ)
আপনার লোকসান হলে পুরো টাকা দিতে পারবেননা,
ক্ষতিতেও তাকে অংশ নিতে হবে।
,
তবে লাভ হলে বা ক্ষতি না হলে অবশ্যই পুরো টাকা দিতে পারবেন।
কোনো সমস্যা নেই।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (7 points)
অসংখ্য ধন্যবাদ হজরত। আল্লাহ তায়ালা আপনাদেরকে উত্তম প্রতিদান দিন। আমিন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...