আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
24 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

১/ অনেক বছর আগের কথা সেসময় দ্বীন থেকে পরিপূর্ণ গাফেল অবস্থায় ছিলাম বলা যায় জাহিলিয়াতের জীবন যাপন করছিলাম, এরকম এক সময় একবার স্বপ্নে দেখি আমার বাসার পাশে একটি মাঠের সামনে আমি দাড়িয়ে আছি আর জমিনে একটি পায়ের ছাপ। এবং দেখলাম আশেপাশে লোকেরা কোনো এক কারণে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে দৌড়া দৌড়ি করছে। এরকম একজন মানুষকে আমি জিজ্ঞেস করলাম এটা কার পায়ের ছাপ? তিনি উত্তর দিলেন এটা রাসূল ﷺ এর পায়ের ছাপ

২/ আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে এই স্বপ্নের অনেক বছর পর আল্লাহ দয়া করে দ্বীনের বুঝ দান করেন, দ্বীন পালনের প্রচেষ্টা শুরু করি। ওই স্বপ্নের প্রায় ৩ বছর পর যখন আমি দ্বীন প্র্যাকটিস করা শুরু করি তখন একদিন আবার স্বপ্নে দেখি রাসূল ﷺ আমার সামনে দাড়িয়ে আছেন ওনার মাথায় একটি সুন্দর সবুজ রঙের পাগড়ি কিন্তু ওনার মুখে একটি উজ্জ্বল নূর ছিল যার কারণে আমি ওনার চেহারা দেখতে পারিনি। এরপর উনি আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দেন মুসাফা করার জন্য, আমিও হাত বাড়িয়ে দেই কিন্তু আমার কাছে তখন এত বেশি ভার অনুভব হচ্ছিল যেনো কোনো ভাবেই আমি সেই ভার সহ্য করতে পারছিলাম না
এই স্বপ্ন গুলোর ব্যাখ্যা কি হতে পারে ?

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

স্বপ্ন দুটি মুবারকপূর্ণ স্বপ্নের অন্তর্ভুক্ত বলা যায়।  আপনি আরো বেশি বেশি সুন্নতের পাবন্দ হতে চেষ্টা করুন। বেশি বেশি দরূদ শরীফ পাঠ করুন। আল্লাহ তাআলা আপনাকে রাসূল সাঃ এর একজন সাচ্চা উম্মত ও প্রিয়ভাজনদের কাতারে শামিল করেই ইনশাআল্লাহ হাশর করাবেন।

বেশি বেশি দরূদ পাঠ এবং সুন্নতের পাবন্দি রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যান। কোন সুন্নতের প্রতি যেন অবহেলা না হয়। আল্লাহ তাআলা আপনার মঙ্গল করুন।
,
রাসূল সাঃ এর আকৃতি শয়তান ধারণ করতে পারে না। তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ দৃষ্টিগোচর হয়েছে বলে প্রবল ধারনা হলে, বুঝতে হবে রাসূল সাঃ কেই দেখছে। অন্য কাউকে নয়।

তবে কথা হল স্বপ্নে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থা সম্পর্কে। স্বপ্নে পরিদৃষ্ট আকৃতিও অবস্থান কি রাসূল সাঃ এর প্রকৃত আকৃতি ও অবস্থান? নাকি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক?

ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে, স্বপ্নযোগে পরিদৃষ্ট রাসূল সাঃ এর চেহারার আকৃতি ও অবস্থান রাসূল সাঃ এর প্রকৃত চেহারা ও অবস্থান নয়। বরং এটি মিসালী তথা প্রতিচ্ছবিমূলক।

তাই স্বপ্নে রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান দেখে একথা বলা যাবে না যে, স্বপ্নে যেমন দেখেছে হুবহু সেটাই রাসূল সাঃ এর আসল ও প্রকৃত চেহারা ও আকৃতি। বরং সেটি ছিল একটি প্রতিচ্ছবিমূলক আকৃতি।

তাই একাধিক ব্যক্তি রাসূল সাঃ এর আকৃতি ও অবস্থান একাধিক ধরণের হতে পারে।

তবে যেহেতু শয়তান রাসূল সাঃ এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না, তাই স্বপ্নে যদি ইয়াকিন হয় যে, পরিদৃষ্ট ব্যক্তি রাসূল সাঃ, তাহলে বিশ্বাস করে নিবে ব্যক্তি রাসূল সাঃ কেই দেখছে। তবে আকৃতিটা হুবহু রাসূল সাঃ এর হওয়া জরুরী নয়।

আরেকটি বিষয় হল, স্বপ্নে রাসূল সাঃ কে তেমন দেখতে পাওয়া যায়, যেমন ব্যক্তির ঈমান ও আমলের অবস্থা হয়ে থাকে। যদি রাসূল সাঃ এর অবস্থা ভাল দেখে স্বপ্নে, তাহলে স্বপ্ন দেখাকারী ব্যক্তির ঈমান ও আমল ভাল হওয়ার দলীল এটা। আর যদি খারাপ অবস্থায় রাসূল সাঃ কে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে যে দেখছে তার ঈমান বা আমলে সমস্যা আছে।

তেমনি কেউ যদি রাসূল সাঃ কে সুন্দর অবয়বে দ্বীনী কাজ করতে দেখে, তাহলে বুঝতে হবে লোকটির ঈমানী কাজে আগ্রহ আছে। এক কথায় রাসূল সাঃ কে যে অবস্থায় পরিদৃষ্ট করবে স্বপ্নে, নিজের ঈমান ও আমলের হালাত তেমনি মনে করে নিবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

أن أبا هريرة قال : سمعت النبي صلى الله عليه و سلم يقول ( من رآني في المنام فسيراني في اليقظة ولا يتمثل الشيطان بي 

হযতর আবূ হুরায়রা রাঃ বলেনঃ রাসূল সাঃ বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নযোগে দেখল, সে যেন আমাকে বাস্তবেই দেখল। কারণ শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৫৯২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৬০৫৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬০৫২, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৫০২৫ , সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২১৩৯, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৯০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২২৭৬}

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...