আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
48 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আমি একজন মেডিকলের ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী।দয়া করে কষ্ট করে পুরোটা পড়ে আমার করণীয় সম্পর্কে বললে কৃতজ্ঞ হবো।

 একটা ছেলের সাথে রিলেশন ছিল,এইটা মুটামুটি ১ বা ১.৫ বছরের মতো ছিল।তখন আমরা ২ জনেই বিয়ের কথা পরিবারকে বলি।ছেলের ফ্যামিল রাজি থাকলেও আমার ফ্যামিলি রাজি ছিল না।

তারপর আমরা নিজেরাই বিয়ে করি যেখানে ছেলের বাবা মার সম্মতি ছিল এমনকি বিয়ের সময় ছেলের মা ও এক দাদা আমাদের সাথে গিয়েছিল তারপর আমরা বিয়ে করি।ব্যাপারটা সামাজিকভাবে গোপন ছিল

আমার পরিবার বিয়ের ব্যাপারে জানতো না তাই পরবর্তীতে প্রায় ১ বছর পর যখন জানতে পারে এরকম করে বিয়ে করেছি তাই একরকম বাধ্য হয়েই সামাজিকভাবে বিয়ে করিয়ে দেয় আবার।বিয়ের ১ বছর আমাদের সম্পর্ক ভালোই ছিল কিন্তু আমার বাবার কিছু কথা নিয়ে আমার শ্বাশুড়ি অনেক ঝামেলা করতো(বিশেষ করে কুফু নিয়ে) আর উনার ছেলের কাছে এসব বলতো যার ফলে আমাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যেও ঝামেলা শুরু হয়।কিন্তু গত ৮মাস আগে আবার এসব নিয়ে ঝামেলা শুরু হয় এবং আমরা পড়াশুনার জন্য যদিও আলাদা থাকি কিন্তু এই ৮ মাসে আমাদের মধ্যে এসব ঝামেরার জন্য একবারও দেখা হয়নি।আবার ২ পরিবারের মধ্যে ঝামেলা লেগেই ছিল বিশেষ করে আমার বাবা মা ও শ্বাশুড়ির মধ্যে বিভিন্ন ব্যাপরে অপমানজনক কথা বলাবলি হচ্ছিল এসব কথার যের ধরেই ৪ মাস আগে আবার আমাদের ২ জনের মধ্যে অনেক বেশি ঝগড়া হয়।এক পর্যায়ে আমার হাসবেন্ড রাগে ৬ বার ভয়েস মেসেজে তালাক বলে ফেলে।এরপর আরো ৪মাস আমাদের মধ্যে অনেক কম কথা হয়েছে।বিশেষ করে আমি তালাক হয়ে গেছে কিনা সেই সন্দেহ থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে দিই।কিন্তু  সে আবার সম্পর্ক ঠিক করার জন্য টুকটাক মেসেজ দিতো।

যেহেতু পারিবারিক একে অপরের কথা নিয়েই মূলত ঝামেলা হচ্ছিল তাই সে আমাকে তার সাথে থাকার জন্য ২ টা শর্ত জুড়ে দেয়-

১।যদি সংসার করতে হয় তাহলে আমার বাবা মা কে ছেড়ে তার সাথে সংসার করতে হবে।যেহেতু আমার বাবা মা তাকে পছন্দ করছে না তাই সে চায় তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ না রাখি।

২।আর না হয় আমার পড়াশুনা ছেড়ে দিতে হবে।সে চায় না আমি আর পড়াশুনা করি কারণ তার ধারণা আমি পড়াশুনা করে চাকরি করে ইনকাম করলে তখন আমার বাবা মা তাকে আরো অপমান করবে।

তাই সে চাচ্ছে তার কন্ডিশন মনে তার কাছে চলে যাই।আর এই দিকে আমার বাবা মা চাচ্ছে তাকে ডিভোর্স দিয়ে দিই কারণ সে আমার যোগ্য না আর আমাকে পড়াশুনা করতে দিবে না তাই।

আমার পরিবার মূলত যে জন্য ডিভোর্স চাচ্ছে সেটা আমার কাছে যৌক্তিক মনে হচ্ছে না। আমি মেডিকলে পড়ি এবং আমার যিনি স্বামী তিনি নন মেডিকেল টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং পড়ছে।তাদের ধারণা সে আমার যোগ্য না আমি এর থেকেও ভালো ছেলে ডিসার্ভ করি তাই তাকে ছেড়ে দিলেও কিছু হবে না এখন।কিন্তু এইটা তো আসলে এক প্রকার অহংকার আমি চাই না এই জন্য আমাদের ডিভোর্স হোক।পারলে আমার বাবা মা কে ছেড়ে হলেও তার সাথে সংসার করতাম কারণ তাদের চাওয়টা তো আসলে যৌক্তিক না এই মুহূর্তে।

কিন্তু আমার স্বামী আমাকে যে ৬বার তালাক বলে ফেলছে সেটা নিয়ে আমি চিন্তিত।সে কি আমার জন্য হারাম হয়ে গেছে কিনা?সে আমাকে বলেছে রাগে সে বলে ফেলছে তার তখন মাথা কাজ করছিল না।

আরো কিছু কথা-আমি আসলে যখন তাকে বিয়ে করি তখন আমার দ্বীনের কোনো জ্ঞান ছিল না ইভেন আমার হাসবেন্ডও আসলে প্র্যাকটিসিং মুসলিম না।সে এখনো নিয়মিত নামাজ পড়ে না দোয়া করি আল্লাহ তাকে দ্বীনের বুঝ দিক।কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ মেডিকলে কিছু দ্বীনি বোনের সোহবতে থাকার কারণে এবং পারিবারিক এই ঝামেলাগুলোর জন্য আমি আসলে আল্লাহর অনেক বেশি কাছাকাছি যেতে চেয়েছি।আলহামদুলিল্লাহ আমি এখন দ্বীনের ব্যপারে আগ্রহী....তাই আমি এই ব্যপারেও আল্লাহর নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করতে চাই না।দয়া করে আমার করণীয় সম্পর্কে জানাবেন

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

যদি কোন সুস্থ্য ব্যক্তি রাগের বশে তালাক দেয়। তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে। কারণ তালাক সাধারণত রাগের বশেই মানুষ দিয়ে থাকে। মোহাব্বত করে তালাক দেয়না। সুতরাং তা পতিত হবে।

তালাক শব্দ। এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

وفي رد المحتار- ويقع طلاق من غضب خلافا لابن القيم الخ وهذا الموافق عندنا لما مر فى المدهوش، ( رد المحتار، كتاب الطلاق، مطلب فى طلاق المدهوش-4/452)

যার সারমর্ম হলো রাগ অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যাবে।   
,
তালাক তো দেওয়াই হয় রাগ হয়ে। কয়জন আছে, শান্তভাবে তালাক দেয়? আসলে তো এমনই হওয়া উচিত ছিল যে, যদি বাস্তবসম্মত ও অনিবার্য প্রয়োজনে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয় তাহলে বড়দের সঙ্গে পরামর্শ করে একে অন্যের কল্যাণকামী হয়ে বুঝে-শুনে, সঠিক মাসআলা জেনে নিয়ে মাসআলা অনুযায়ী তালাক প্রদানের মাধ্যমে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার উপর ৩ তালাক পতিত হয়েছে। 

তিন তালাক দেবার পর সেই স্ত্রী আর নিজের স্ত্রী থাকে না। পর মানুষ হয়ে যায়। এটিই অমোঘ বিধান। তাই তালাক দেবার আগে চিন্তা করতে হয়। রাগ হলেই তালাক দিতে হবে, এ মানসিকতা পরিহার করতে হবে।

★এক্ষেত্রে সেই স্বামীর সাথে পুনরায় ঘর সংসার করতে চাইলে ছুরত একটিই বাকি আছে। তা হল, আপনার অন্যত্র বিবাহ হতে হবে।তারপর সেই স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমনকি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। তারপর উক্ত স্বামী যদি আপনাকে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত শেষ হয়, তাহলেই কেবল আপনি আবার ১ম স্বামীর সাথে বিবাহ বসতে পারবেন। এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন। এছাড়া দ্বিতীয় কোন রাস্তা খোলা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...