(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن حُذَيْفَةَ بن اليمان رضي الله عنه قال : ( أَخَذَ رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَضَلَةِ سَاقِي أَوْ سَاقِهِ فَقَالَ : هَذَا مَوْضِعُ الْإِزَارِ ، فَإِنْ أَبَيْتَ فَأَسْفَلَ ، فَإِنْ أَبَيْتَ فَلَا حَقَّ لِلْإِزَارِ فِي الْكَعْبَيْنِ ) رواه الترمذي (1783)
হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার বা তার জঙ্ঘা (হাটুর নিচের মাংসপেশী) ধরে বলেনঃ এটা হল লুঙ্গি বা পায়জামার জায়গা। তুমি না মানতে চাইলে আরও নিচে নামাতে পার। যদি তাও মানতে রাজী না হও তবে জেনে রাখ, লুঙ্গি-পায়জামার পায়ের টাখনু স্পর্শ করার কোন অধিকার নেই।
(তিরমিজি ১৭৮৩ ইবনু মা-জাহ (৩৫৭২)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
রাসুলুল্লাহ সাঃ মূলত হাটুর নিচের মাংসপেশীর উপর লুঙ্গি/পায়জামা পড়তে বলেছেন।
এক্ষেত্রে জোড় দিয়ে বলেছেন যে টাখনু যেনো স্পর্শ না হয়।
সুতরাং এই বিষয়টির উপর আমল করলেই হবে।
(০২)
না,সে কাফের হয়ে যাবেনা।
আর হাদীসেই এটির রুখসত আছে।
(০৩)
এতে মসজিদের অবমাননা করা হয়েছে।
তবে এর ফলে উক্ত ব্যক্তি কাফের হয়ে যায়নি।
(০৪)
ওযর থাকলে সেক্ষেত্রে বসে নামাজ আদায় করলে পূর্ণ ছওয়াবই পাওয়া যাবে।
প্রশ্নে উল্লেখিত হাদীসটি এখানে উল্লেখ করলে ভালো হতো।
(০৫)
ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেছেন যে,
عن ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑْﻦُ ﻋَﺒَّﺎﺱ ، ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ٍ، ﻗَﺎﻝَ : ﻗﺎﻝ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ َ: ﻋُﺮِﺿَﺖْ ﻋَﻠَﻲَّ ﺍﻷُﻣَﻢُ ﻓَﺮَﺃَﻳْﺖُ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﺍﻟﺮُّﻫَﻴْﻂُ ( ﺟﻤﺎﻋﺔ ﻗﻠﻴﻠﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺱ ) ﻭَﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻭَﻣَﻌَﻪُ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞُ ﻭَﺍﻟﺮَّﺟُﻼﻥِ ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﻟَﻴْﺲَ ﻣَﻌَﻪُ ﺃَﺣَﺪ ٌ. ﺇِﺫْ ﺭُﻓِﻊَ ﻟِﻲ ﺳَﻮَﺍﺩٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ ، ﻓَﻈَﻨَﻨْﺖُ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ . ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟِﻲ : ﻫَﺬَﺍ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ، ﻭَﻗَﻮْﻣُﻪُ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﺍﻧْﻈُﺮْ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻷُﻓُﻖِ ، ﻓَﻨَﻈَﺮْﺕُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﻮَﺍﺩٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ ، ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟِﻲ : ﺍﻧْﻈُﺮْ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻷُﻓُﻖِ ﺍﻵﺧَﺮِ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺳَﻮَﺍﺩٌ ﻋَﻈِﻴﻢٌ ، ﻓَﻘِﻴﻞَ ﻟِﻲ : ﻫَﺬِﻩِ ﺃُﻣَّﺘُﻚَ ﻭَﻣَﻌَﻬُﻢْ ﺳَﺒْﻌُﻮﻥَ ﺃَﻟْﻔًﺎ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏٍ ﻭَﻻ ﻋَﺬَﺍﺏٍ . ﺛُﻢَّ ﻧَﻬَﺾَ ﻓَﺪَﺧَﻞَ ﻣَﻨْﺰِﻟَﻪُ ﻓَﺨَﺎﺽَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻓِﻲ ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺣِﺴَﺎﺏٍ ﻭَﻻ ﻋَﺬَﺍﺏٍ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﻓَﻠَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺻَﺤِﺒُﻮﺍ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺑَﻌْﻀُﻬُﻢْ ﻓَﻠَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻭُﻟِﺪُﻭﺍ ﻓِﻲ ﺍﻹِﺳْﻼﻡِ ﻭَﻟَﻢْ ﻳُﺸْﺮِﻛُﻮﺍ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪ ِ، ﻭَﺫَﻛَﺮُﻭﺍ ﺃَﺷْﻴَﺎﺀَ . ﻓَﺨَﺮَﺝَ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﻣَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﺗَﺨُﻮﺿُﻮﻥَ ﻓِﻴﻪ ؟ِ ﻓَﺄَﺧْﺒَﺮُﻭﻩُ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﻫُﻢْ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ َﻻ ﻳَﺴْﺘَﺮْﻗُﻮﻥَ ﻭَﻻ ﻳَﺘَﻄَﻴَّﺮُﻭﻥَ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺭَﺑِّﻬِﻢْ ﻳَﺘَﻮَﻛَّﻠُﻮﻥَ . ﻓَﻘَﺎﻡَ ﻋُﻜَّﺎﺷَﺔُ ﺑْﻦُ ﻣِﺤْﺼَﻦٍ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺍﺩْﻉُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺃَﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻠَﻨِﻲ ﻣِﻨْﻬُﻢْ . ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻧْﺖَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ . ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻡَ ﺭَﺟُﻞٌ ﺁﺧَﺮُ ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺍﺩْﻉُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺃَﻥْ ﻳَﺠْﻌَﻠَﻨِﻲ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺳَﺒَﻘَﻚَ ﺑِﻬَﺎ ﻋُﻜَّﺎﺷَﺔُ " ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ 5705 ، ﻣﺴﻠﻢ 220
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সামনে সকল উম্মাতকে পেশ করা হয়েছিল। তখন আমি দেখেছি) দু’একজন নবী পথ চলতে লাগলেন এমতাবস্থায় যে, তাঁদের সঙ্গে রয়েছে লোকজনের ছোট ছোট দল। কোন কোন নবী এমনও আছেন যাঁর সঙ্গে একজনও নেই। অবশেষে আমার সামনে তুলে ধরা হল বিশাল দল। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এটা কী? এ কি আমার উম্মাত? উত্তর দেয়া হলঃ না, ইনি মূসা আঃ) এবং তাঁর কওম। আমাকে বলা হলঃ আপনি ঊর্ধ্বাকাশের দিকে তাকান। তখন দেখলামঃ বিশাল একটি দল যা দিগন্তকে ঢেকে রেখেছে।
তারপর আমাকে বলা হলঃ আকাশের দিগন্তসমূহ ঢেকে দিয়েছে এমন একটি বিশাল দলের প্রতি লক্ষ্য করুন। তখন বলা হলঃ এরা হল আপনার উম্মাত। আর তাদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে চলে গেলেন। উপস্থিতদের কাছে কথাটির কোন ব্যাখ্যা প্রদান করলেন না। যে বিনা হিসাবের লোক কারা হবে?) ফলে উপস্থিত লোকজনের মধ্যে তর্ক বিতর্ক শুরু হল। তারা বললঃ আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অনুসরণ করে থাকি। সুতরাং আমরাই তাদের অন্তর্ভুক্ত। কিংবা তারা হল আমাদের সে সকল সন্তান-সন্ততি যারা ইসলামের যুগে জন্মগ্রহণ করেছে। আর আমাদের জন্ম হয়েছে জাহিলী যুগে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছলে তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তারা হল সে সব লোক যারা মন্ত্র পাঠ করে না, পাখির মাধ্যমে কোন কাজের ভাল-মন্দ নির্ণয় করে না এবং আগুনের সাহায্যে দাগ লাগায় না। বরং তারা তো তাদের রবের উপরই ভরসা করে থাকে। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! তাদের মধ্যে কি আমি আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আরেকজন দাঁড়িয়ে বললঃ তাদের মধ্যে কি আমিও আছি? তিনি বললেনঃ ‘উক্কাশাহ এ সুযোগ তোমার আগেই নিয়ে নিয়েছে। [৩৪১০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫২৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৮৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এই হাদীসে যে বলা হচ্ছে, যারা মন্ত্র পাঠ করে না,তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে।এর অর্থ এ নয় যে,বৈধ রুকইয়া করলে তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে না।বরং বলা হচ্ছে,যারা বিভিন্ন তন্ত্র মন্ত্র দ্বারা রুকইয়াহ করবে,তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে না।অথবা অর্থ এও হতে পারে যে,যারা রুকইয়ার প্রার্থনা করবে না,তারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে।
কুরআন হাদীসের বাণী দ্বারা রুকইয়াহ জায়েয।রুকইয়াহ জিবরীল আলাইহিস সালাম করেছেন, রাসূলুল্লাহ করেছেন, সাহাবায়ে কিরাম করেছেন, এবং অন্যান্য সালাফে সালহীনরাও করেছেন। সুতরাং শরিয়তের সীমা লঙ্ঘন না হলে, এটা নিয়ে আপত্তির কিছু নাই, সংশয়েরও কিছু নাই।
সুতরাং বলা যায় যে,
আক্বিদা বিশুদ্ধ রেখে চিকিৎসা হিসেবে বৈধ কালাম দ্বারা তাবিজ ব্যবহার করা বৈধ রয়েছে-
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
(০৬)
হ্যাঁ, মিথ্যা কথা প্রচার করা হবে।
কেননা হাদীসে মন্ত্র পাঠের কথা এসেছে।
বৈধ রুকইয়াকে নিষেধ করা হয়নি।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ هُمُ الَّذِينَ لَا يَسْتَرْقُونَ وَلَا يَتَطَيَّرُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ» مُتَّفق عَلَيْهِ متفق علیہ ، رواہ البخاری (6472) و مسلم (371 / 218)، (524) ۔ (مُتَّفق عَلَيْهِ)
ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: আমার উম্মাতের মধ্য সত্তর হাজার লোক হিসাব ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হলো ঐ সমস্ত লোক যারা মন্ত্র-তন্ত্র করায় না, অশুভ লক্ষণে বিশ্বাস করে না এবং তারা নিজেদের পরওয়ারদিগারের ওপর ভরসা রাখে।
(বুখারী ৬৪৭২, মুসলিম ৩৭১-(২১৮), সহীহুল জামি ৫৩৬৬, সিলসিলাতুস সহীহাহ ২১৭৯, মা'রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী ৫৯৫৪, মুসনাদে আহমাদ ১৯৯২৭, আবূ ইয়া'লা ১১২, শুআবূল ঈমান ২৬৮, আল মু'জামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ১৪৮৪০, আল মু'জামুল আওসাত্ব ৭০৭৫, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ২০০২৮,মিশকাত ৫২৯৫।)