আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
798 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (10 points)
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته
মুহতরাম মুফতি সাহেব (হাফি) আমার প্রশ্ন হচ্ছে
১,বৈধ অর্থবহন করে এমন নকশাযুক্ত তাবিজ ব্যবহার করা জায়েয হবে কি?

২, আর এ বিষয়ে আরব আযমের শীর্ষস্হানীয় আলিম ও ফতোয়া বিভাগসমুহের ফতোয়া কি তা জানালে উপকৃত হব। জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  কয়েক প্রকার তাবিজ জায়েজ নয়। যথা-

১-কুরআন হাদীস দ্বারা ঝাড়ফুক দেয়া ছাড়া শুধু তামা, পিতল বা লোহা দ্বারা তাবিজ বানিয়ে লটকিয়ে রাখা। অর্থাৎ শুধু এগুলো লটকানো দ্বারাই রোগমুক্ত হওয়া যাবে বিশ্বাস করে তা লটকানো নাজায়িজ।

২-এমন তাবিজ যাতে আল্লাহর নাম, কুরআনের আয়াত, দুআয়ে মাসূরা ব্যতিত শিরকী কথা লিপিবদ্ধ থাকে।

৩-তাবীজকে মুয়াসসার বিজজাত তথা তাবীজ নিজেই আরোগ্য করার ক্ষমতার অধিকারী মনে করে তাবিজ লটকানো। এ বিশ্বাস জাহেলী যুগে ছিল, বর্তমানেও ইসলাম সম্পর্কে কিছু অজ্ঞ ব্যক্তিরা তা মনে করে থাকে।

৪-যে কালামের অর্থ জানা যায় না এমন শব্দ দ্বারা তাবিজ লেখা।

৫-আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় তাবিজ লেখা।

 
এ সকল সুরতে সর্বসম্মত মতানুসারে নাজায়িজ ও হারাম এবং শিরক। এতে কোন সন্দেহ নেই।

কিন্তু তাবিজে কুরআনের আয়াত, আল্লাহর নাম, দুআয়ে মাসুরা বা শিরকমুক্ত অর্থবোধক থাকলে তা  জায়িজ।  কেননা এসব তাবিজের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত তথা আরোগ্যের ক্ষমতা আল্লাহ তাআলাকেই মনে করা হয়। যেমন ডাক্তার প্রদত্ত ঔষদের ক্ষেত্রে মুয়াসসার বিজজাত আল্লাহকে মনে করার কারণে তা নাজায়িজ নয়। যদি মুয়াসসার বিজজাত ঐ ঔষধকে মনে করলে ঔষধ সেবনও হারাম হবে।
.
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُعَلِّمُهُمْ مِنَ الْفَزَعِ كَلِمَاتٍ: «أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ» وَكَانَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يُعَلِّمُهُنَّ مَنْ عَقَلَ مِنْ بَنِيهِ، وَمَنْ لَمْ يَعْقِلْ كَتَبَهُ فَأَعْلَقَهُ عَلَيْهِ

আমর ইবনে শুআইব তাঁর পিতা ও তিনি তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে,রাসূল (সঃ) ইরশাদ করেন,তোমাদের কেউ যখন ঘুম অবস্থায় ঘাবড়িয়ে উঠে,সে যেন  أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُون
 দো’আটি পাঠ করে। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর তাঁর উপযুক্ত সন্তানদের তা শিক্ষা দিতেন এবং ছোটদের গলায় তা লিখে লটকিয়ে দিতেন।{সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৮৯৫}
,
আরো জানুনঃ

শরীয়তের বিধান মতে উক্ত সংখ্যার কোনো   
কুরআনের আয়াত, দুআয়ে মাসূরার দিকে ঈঙ্গিত হয়,যাহা লিখনে ওয়ালা জানে,এবং সেটারই নিয়ত করে,তাহলে তাহা জায়েজ আছে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৫/৮৪) 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত তাবিজ ব্যবহার করা যাবে।   
.
(০২) 
উল্লেখিত বিষয় নিয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।         
আরবের অঅধিকাংশ  ইসলামী স্কলারদের মতে এগুলো শিরক, এর কোনোটাই শরীয়ত অনুমোদিত নয়।

তারা দলিল হিসেবে পেশ করেন যে হাদীস শরীফে এসেছেঃ
   
উকবা বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, "একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একদল লোক উপস্থিত হল। তিনি দলটির নয়জনকে বাইআত করান। একজনকে বাইআত করাননি। তারা (সাহাবীরা) বলল: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আপনি নয়জনকে বাইআত করিয়েছেন; একে করাননি কেন? তিনি বললেন: তার সাথে কবচ রয়েছে। তখন লোকটি হাত ঢুকিয়ে কবচটি ছিঁড়ে ফেলল। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বাইআত করালেন। আর বললেন: যে ব্যক্তি কবচ লটকালো সে শির্ক করল।"[মুসনাদে আহমেদ (১৬৯৬৯), শাইখ আলবানী 'আস-সিলসিলাতুস সাহিহা' গ্রন্থে (৪৯২) হাদীসটিকে সহিহ বলেছেন]

উকবা বিন আমের (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেন: "যে ব্যক্তি কবচ ঝুলাবে আল্লাহ্যেন তার উদ্দেশ্য পূর্ণ না করেন। যে ব্যক্তি ودعة(পাথর) লটকাবে আল্লাহ্যেন তাকে স্বস্তিতে না রাখেন।"[ইমাম আহমাদ (১৭৪৪০); আরনাউত হাদিসটিকে 'হাসান' বলেছেন]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (10 points)
মুহতরাম মুফতি সাহেব হাফি: 
একটা বিষয়ের উত্তর দেওয়া হয়নি, এ বিষয়ে উপমহাদেশের শীর্ষস্হানীয় উলামায়ে কিরামের মতামত কি? জানালে উপকৃত হব। জাযাকাল্লাহ 
by
আরবদের দলিলের জবাব আছে কি? জানালে উপকৃত হতাম।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...