আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম,   আমার বাসার গেটের লক বন্ধ থাকায় আমার ভাই বাসায় ঢুকতে পারছিলেন না।আর বাসার আমি ছাড়া অন্য কেউ ছিলো না।এমতাবস্থায় টয়লেট ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আমি বাধ্য হয়ে গেটের লক খুলে দেয় এরপর টয়লেট ব্যবহার করে রুমে প্রবেশ করি এতে কি আমার সুন্নাত ইত্তেকাফ ভেঙে যাবে?
by (9 points)
edited by
জাজাকিল্লাহ খাইর

1 Answer

0 votes
by (606,960 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي ابْنَ إِسْحَاقَ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتِ السُّنَّةُ عَلَى الْمُعْتَكِفِ أَنْ لاَ يَعُودَ مَرِيضًا وَلاَ يَشْهَدَ جَنَازَةً وَلاَ يَمَسَّ امْرَأَةً وَلاَ يُبَاشِرَهَا وَلاَ يَخْرُجَ لِحَاجَةٍ إِلاَّ لِمَا لاَ بُدَّ مِنْهُ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ بِصَوْمٍ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ فِي مَسْجِدٍ جَامِعٍ


ওয়াহব  ইবন  বাকীয়্যা ......... আয়েশা  (রাঃ)  হতে  বর্ণিত।  তিনি বলেন,  ই‘তিকাফের  জন্য  সুন্নাত  এই  যে,  সে  যেন  কোন  রোগীর  পরিচর্যার  জন্য  গমন  না  করে,  জানাযার  নামাযে  শরীক  না  হয়,  স্ত্রীকে  স্পর্শ  না  করে  এবং  তার  সাথে  সহবাস  না  করে।  আর  সে  যেন  বিশেষ  প্রয়োজন  ব্যতীত  মসজিদ  হতে  বের  না  হয়।  রোযা  ব্যতীত  ই‘তিকাফ  নেই  এবং  জামে  মসজিদ  ব্যতীত  ই‘তিকাফ  শুদ্ধ  নয়।
(আবু দাউদ ২৪৬৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَالَتْ: وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «لَيُدْخِلُ عَلَيَّ رَأْسَهُ وَهُوَ فِي المَسْجِدِ، فَأُرَجِّلُهُ، وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ البَيْتَ إِلَّا لِحَاجَةٍ إِذَا كَانَ مُعْتَكِفًا»

আম্মাজান আয়শা রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ মসজিদে থাকা অবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন, তখন [প্রাকৃতিক] প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না। {বুখারী, হাদীস নং-২০২৯, ১৯২৫, ১৯০২}

ইতেকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয় থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। এতেকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ঈমানী চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা ও উন্নতর পর্যায়ে পৌছেঁ দেয়ার চেষ্টা করা।
কুরআনুল কারিমে বিভিন্নভাবে ইতেকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, আমি ইবরাহীম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো। (বাকারাহ-125)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, তোমরা মসজিদে এতেকাফ কালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না। (বাকারাহ-187)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসংখ্য হাদীস এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য হতে কিছু হাদীস নিচে উল্লেখ করা হল:
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন। (বুখারি-2025)
রসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজানের শেষের দশকে এতেকাফ করেছেন, ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর তাঁর স্ত্রী গণ এতেকাফ করেছেন। (বুখারি-2026)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানে দশ দিন এতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন, সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফে কাটান। (তিরমিযী-808)

উত্তম হল নফল ইবাদত বেশী বেশী করা। যেমন সলাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, তাসবীহ-তাহলীল তথা সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, তাওবাহ-ইস্তেগফার, দু‘আ, দুরূদ ইত্যাদি ইবাদতে সর্বাধিক সময় মশগুল থাকা। 

তাছাড়া শরীয়া বিষয়ক ইলম চর্চা করা।
পার্থিব ব্যাপারে কথাবার্তা বলা, অনর্থক গল্পগুজব ও আলোচনা থেকে বিরত থাকা উচিত, তবে পারিবারিক কল্যাণর্থে বৈধ কোন বিষয়ে অল্পস্বল্প কথাবার্তা বলার মধ্যে কোন দোষ নেই।

ইতিকাফ যে সকল কারণে ভঙ্গ হয়ে যায় তা হলো :
১. স্বেচ্ছায় বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হলে।
২. কোন শিরক বা কুফরী কাজ করলে।
৩. পাগল বা বেঁহুশ হয়ে গেলে।
৪. নারীদের হায়েয-নিফাস শুরু হয়ে গেলে।
৫. স্ত্রীসহবাস বা যে কোন প্রকার যৌনসম্ভোগ করলে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
যদি কোন মহিলা তার বাড়ির মসজিদে (নামাজ এবং অন্যান্য ইবাদতের জন্য সংরক্ষিত স্থান) ইতিকাফের জন্য বসে থাকেন, তাহলে মহিলাদের জন্য এই বাড়ির মসজিদটি পুরুষদের মসজিদের হুকুমের মতোই। শারীরিক বা ধর্মীয় প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফের সময় কোনও মহিলার এই স্থান ত্যাগ করা জায়েজ নয়।

অতএব, ঘরের দরজা খোলা কোনও প্রাকৃতিক বা ধর্মীয় প্রয়োজন নয় এবং এর জন্য বিকল্প ব্যবস্থাও সম্ভব। অতএব, সুন্নত ই'তিকাফ করার সময় কোনও মহিলার দরজা খোলা ঠিক নয়, কারণ এতে সুন্নত ই'তিকাফ ভঙ্গ হবে। অতএব, ই'তিকাফে বসার আগে এই কাজগুলির জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করা ভালো, উদাহরণস্বরূপ, যদি আগত লোকেরা চাবি দিয়ে দরজা খুলতে পারে, অথবা ই'তিকাফের জায়গায় যদি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত একটি বোতাম থাকে যা দরজা খুলে দেয়, তাহলে এটির ব্যবস্থা করা উচিত। যাতে এই উপাসনা সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে, তার চেতনা ও উদ্দেশ্যের সাথে সম্পন্ন করা যায়।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার সুন্নাত ইতেকাফ ভেঙ্গে যাবে।
এক্ষেত্রে ইতেকাফের কাজা আবশ্যক হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 754 views
...