আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

বিয়ের জন্য রাজী কি না সেটা বললে উকিল নিযুক্ত করা হবে না। বরং স্পষ্টভাবে উকিল নিযুক্ত করতে হবে। মেয়ে বলবে, আমাকে অমুকে কাছে বা তোমার যেখানে ইচ্ছা বিয়ে দাও। মাহরাম গায়রে মাহরাম বা আজনবী যে কেউ উকিল হতে পারবে। উকিল নিযুক্ত করার জন্য মজলিস বা সাক্ষীর কোনো প্রয়োজনীয়তা নাই। বিয়ের জন্য মেয়ে রাজী কি না? সে কথার পরিপেক্ষিতে যদি মেয়ে রাজী বলে, এরপর ঐ ব্যক্তি বিয়ে পড়িয়ে নেয়, এবং পরবর্তীতে মেয়ে অনুমোদন দিয়ে দেয়, তাহলে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যাবে।
এখানে অনুমোদন দেয়া বলতে কি বুঝানো হয়েছে? আমার প্রশ্ন ছিলো কেউ যদি ফোনে জিজ্ঞেস করে যে তুমি কি অমুকের সাথে বিয়েতে রাজি,আমি বলি রাজি আছি এবং সে যদি বিয়ে দেয় তার সাথে আমার পক্ষ থেকে এবং আমি যদি বিয়ে মেনে নেই তাহলে কি বিয়ে হয়ে যাবে?ইমদাদুল হুজুর একদিন ফোনে বলেছিলেন যে এভাবে বিয়ে হবে না।তাও আমার টেনশন হয় এটা নিয়ে।অনুগ্রহ করে বিস্তারিত বলবেন।

1 Answer

0 votes
by (70,170 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ

https://ifatwa.info/115165/ নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুজন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  বলেছেন, অভিবাক ও দুজন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দুটি। যথা-

১-ইজাব কবুল হওয়া।

২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।

ব্যস উক্ত দুটি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ-

স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।

প্রশ্নকারী সম্মানিত দ্বীনি ভাই/ বোন!

উকিল বা উকিল বাপের কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। বর কনের মধ্য থেকে যে কোনো একজন বিয়ের প্রস্তাব দিবে, অথবা তার অভিভাবক বিয়ের প্রস্তাব দিবে, কিংবা তার উকিল বিয়ের প্রস্তাব দিবে, এবং অপরজন দুইজন সাক্ষীর সামনে কবুল বলবে। বিয়ে হয়ে যাবে।

বিয়ের জন্য রাজী কি না সেটা বললে উকিল নিযুক্ত করা হবে না। বরং স্পষ্টভাবে উকিল নিযুক্ত করতে হবে। মেয়ে বলবে, আমাকে অমুকে কাছে বা তোমার যেখানে ইচ্ছা বিয়ে দাও। মাহরাম গায়রে মাহরাম বা আজনবী যে কেউ উকিল হতে পারবে। উকিল নিযুক্ত করার জন্য মজলিস বা সাক্ষীর কোনো প্রয়োজনীয়তা নাই। বিয়ের জন্য মেয়ে রাজী কি না? সে কথার পরিপেক্ষিতে যদি মেয়ে রাজী বলে, এরপর ঐ ব্যক্তি বিয়ে পড়িয়ে নেয় তাহলে বিয়ে সহিহ হবে না । তবে পরবর্তীতে মেয়ে যদি অনুমোদন দিয়ে দেয়, তাহলে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...