ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ঋণের দৃষ্টান্ত
ধরা যাক- একব্যক্তি ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন করেছে।আন্তর্জাতিক বাজার(বর্হি:বিশ্ব) থেকে এই টাকায় সে একটি প্লান্ট (মেশিনারি)ইম্পোর্ট (আমদানি) করল।যেহেতু ওই প্লান্টটি যাকাত যোগ্য সম্পদ নয়,সেহেতু এই অবস্থায় এই ঋণ সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে না।কিন্তু যদি ঋণের এই অর্থে সে কাঁচামাল ক্রয় করে থাকে,তাহলে যেহেতু কাঁচামালের উপর যাকাত ওয়াজিব হয়,তাই এই ঋণ সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে।কেননা ঋণের হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করে এটিকে সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হলেও কাঁচামাল তো সামগ্রিক সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে।
সারকথা হলো- প্রয়োজনীয় ও অস্বাভাবিক ঋণের পুরোটাই সামগ্রিক সম্পদ থেকে বাদ দেয়া যাবে।আর যে ঋণ কেবলমাত্র মুনাফা অর্জনের উদ্দশ্যে নেয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা হলো যে,যদি ঋণের অর্থে যাকাত অযোগ্য সম্পদ ক্রয় করা হয়,তাহলে ওই ঋণের অর্থ হিসাব থেকে বাদ দেয়া যাবে না।আর যাকাতযোগ্য ক্রয়ে অর্থলগ্নি করলে তা সামগ্রিক সম্পদের হিসাব থেকে বাদ দেয়া যাবে।এই ছিল যাকাত বের করার ক্ষেত্রে শরীয়তের আহকাম।(ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যাকাতের বিধান-মুফতী তাক্বী উসমানি-৩৫)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) কারো যদি ঋণ থাকে এবং সে যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকও হয়, তাকে কি তার নিসাব পরিমাণ সম্পদের উপর যাকাত দিতে হবে? উল্লেখ্য, ঋণের পরিমাণ ব্যক্তির মোট সম্পদের পরিমাণের চেয়েও বেশি।
নেসাব পরিমাণ কারো ঋণ থাকলে দেখতে হবে, এই ঋণ কি বিশেষ প্রয়োজনের ঋণ? না ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে গ্রহণকৃত ঋণ? যদি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ঋণ নেয়া হয়ে থাকে, তাহলে উক্ত ঋণকে পূর্ণ সম্পদ থেকে বাদ দেয়া হবে। ঋণ বাদে নেসাব পরিমাণ মাল থাকলে যাকাত ফরয হবে। নতুবা যাকাত ফরয হবে না।
(২) নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে, আবার ঋণও আছে, যদি ব্যক্তিগত প্রযোজনে ঋণ গ্রহণ করা হয়, এবং ঋণ বাদে নেসবা পরিমাণ মাল না থাকে, তাহলে তখন জরুরতে যাকাত গ্রহণ করা যাবে। তখনো বিনা জরুরতে যাকাত গ্রহণ জায়েয হবে না।
(৩) অবিবাহিত মেয়ে, নিজের ব্যবসায়িক পণ্য আছে, যা থেকে সে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক। মেয়ের মা এবং বাবার দু'জনেরই ঋণ আছে। এমতাবস্থায়ও মেয়েকে যাকাত আদায় করতে হবে।
(৪) একই পরিবারের বাবা, মা, ভাই, বোন চারজনে মিলে (অর্থ ও শ্রম বণ্টন চারজনের দ্বারা হয়) ব্যবসা পরিচালনা করেন। তাদের সর্বমোট ব্যবসায়িক পণ্যের মূল্য নিসাব পরিমাণ সম্পদের মূল্য অতিক্রম করে। এক্ষেত্রে এই পরিবারের যৌথ সম্পদের উপর যাকাত আসবে। যদি যদি প্রত্যেকের হিস্যা পৃথকভাবে বন্টিত থাকে, কার কত টাকা সেটা বন্টিত আকারে থাকে, এবং পৃথকভাবে কেউ নেসাবের মালিক না থাকে, তাহলে কারো উপর তখন যাকাত আসবে না।