আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
১।আগেরকার ১ ও ২নং প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পর আরেকটা কথা খালি মনে আসে। সেটা হলো কেনো রাসুল সাঃ এই দোয়া করছেন খালি মনে রাগ উঠে কি কারনে হয় এরকম।আমি তো উনার দোয়া কে মনে মনে বলি ভালো এবং ইচ্ছা আছে সম্মান রাখার?
২।আবার মনে আসে ধনী হওয়ার দোয়া করে যদি ধনী হয়ে যাস তাহলে তো গরীব দের ৫০০ বা  ৪০ বছর পর জান্নাতে যাবি তাহলে আল্লাহ পাক এর সাথে সাক্ষাৎ বা উনাকে পরে দেখবি। এরপর মনে আসে যে আল্লাহ পাক কে মহব্বত করছ না, মিসকিন হওয়ার দোয়া করলে আগে দেখতে পারবি এটা কি কারনে হয়?
৩।রাসুল সাঃ উনার দোয়া করতে গেলে ও ভিতর থেকে রাগ উঠে আবার ধনী হবার দোয়া করলে একই হয় কি কারনে?
৪।ধনী রা গরীব দের এক হাদিসে রয়েছে ৫০০ বছর আরেক হাদিসে রয়েছে ৪০ বছর এই ভিন্নতা কেনো আর কোনটা মানবো?

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ وَاصِلٍ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا ثَابِتُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْعَابِدُ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ النُّعْمَانِ اللَّيْثِيُّ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مِسْكِينًا وَأَمِتْنِي مِسْكِينًا وَاحْشُرْنِي فِي زُمْرَةِ الْمَسَاكِينِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . فَقَالَتْ عَائِشَةُ لِمَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " إِنَّهُمْ يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَغْنِيَائِهِمْ بِأَرْبَعِينَ خَرِيفًا يَا عَائِشَةُ لاَ تَرُدِّي الْمِسْكِينَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ يَا عَائِشَةُ أَحِبِّي الْمَسَاكِينَ وَقَرِّبِيهِمْ فَإِنَّ اللَّهَ يُقَرِّبُكِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ "

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দু’আ করে) বলেনঃ হে আল্লাহ! তুমি আমাকে দরিদ্র অবস্থায় বাচিয়ে রাখ, দরিদ্র থাকাবস্থায় মৃত্যু দিও এবং কিয়ামাত দিবসে দরিদ্রদের দলভুক্ত করে হাশর করো। (একথা শুনে) আইশা (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কেন এরূপ বলছেন? তিনি বললেনঃ  হে আইশা! তারা তো তাদের সম্পদশালীদের চেয়ে চল্লিশ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। হে আইশা! তুমি যাঞ্চাকারী দরিদ্রকে ফিরিয়ে দিও না। যদি দেয়ার মতো কিছু তোমার নিকট না থাকে, তাহলে একটি খেজুরের টুকরা হলেও তাকে দিও। হে আইশা! তুমি দরিদ্রদের ভালোবাসবে এবং তাদেরকে তোমার সান্নিধ্যে রাখবে। তাহলে কিয়ামাতের দিন আল্লাহ তা’আলা তোমাকে তার সান্নিধ্যে রাখবেন।
(তিরমিজি ২৩৫২.ইবনু মা-জাহ (৪১২৬)।

★রাসুলুল্লাহ সাঃ এর হাশর দরিদ্রদের সাথে হবে। তাই ধনী হওয়ার দোয়া না করারই পরামর্শ থাকবে। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
উক্ত রাগকে পরিহার করতে হবে। 
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা না করার পরামর্শ থাকবে। 

(২-৩)
বাস্তবতা চিন্তা করার কারনেই এমনটি মনে হচ্ছে। তাই ধনী হওয়ার দোয়া না করাই ভালো।

(০৪)
হাদীছে রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘দরিদ্র মুসলমানগণ জান্নাতে যাবে সম্পদশালীদের চেয়ে অর্ধদিন পূর্বে। এই অর্ধদিন হ’ল পাঁচ শত বছরের সমান’ (তিরমিযী হা/২৩৫৪; মুসলিম হা/২৭৩৬)। 

ঈমানদারীর দিক থেকে সমান হ’লে দরিদ্রদের জন্য জান্নাতে যাওয়া সহজ হবে, তাদের হিসাব-নিকাশ অল্প হওয়ার কারণে। অন্যদিকে হিসাব বেশী হওয়ায় ধনীদের দেরী হবে। তবে ধনীর পুণ্য যদি দরিদ্রের চেয়ে বেশী হয়, সেক্ষেত্রে প্রবেশে দেরী হ’লেও ধনী জান্নাতে অধিক মর্যাদার অধিকারী হবেন (ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূ‘ ফাতাওয়া ১১/১২১)। উছায়মীন বলেন, যেহেতু ধনী ব্যক্তি দুনিয়াতে যেখানে আল্লাহর নে‘মতরাজি ভোগ করতে পারে দরিদ্র ব্যক্তি তা পারে না। সেকারণ দরিদ্রদের জন্য এই পুরস্কার ।

যেহেতু গরীবদের হিসাব কম; তাদের যাকাত নেই, হজ্জ নেই, মালের কোন হিসাব-নিকাশ নেই, তাই তারা নির্ঝঞ্জটে ধনীদের আগে আগেই জান্নাতে চলে যাবে। কিন্তু কতদিন আগে?

এক বর্ণনানুসারে ৪০ বছর আগে।

আল্লাহ্র রাসূল (ﷺ) বলেছেনঃ মুহাজিরদের দরিদ্রশ্রেনীর লোকেরা ধনশালীদের চেয়ে চল্লিশ বছর পূর্বে কিয়ামতের দিন জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম ২৯৭৯)

অন্য এক বর্ণনা মতে ৫০০ বছর আগে।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ গরীব মুমিনরা ধনীদের পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (তিরমিযী ২৩৫১ নং)

আসলে ধনী ও গরীবদের অবস্থা ভেদে সময়ের এই পার্থক্য হবে। সুতরাং যে গরীব সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং যে ধনী সবশেষে জান্নাতে প্রবেশ করবে, তাদের উভয়ের সময়ের ব্যাবধান হবে ৫০০ বছর। আর যে গরীব সবশেষে জান্নাত প্রবেশ করবে এবং যে ধনী সর্বপ্রথম জান্নাত প্রবেশ করবে, তাদের উভয়ের সময়ের ব্যবধান হবে ৪০ বছর। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...