ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
10943 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে,
দর্রুল মুখতার গ্রন্থে বর্ণিত আছে,
ﻭﻓﻲ ﺍﻟﻨﻬﺮ تجوز ﻣﻨﺎﻛﺤﺔ ﺍﻟﻤﻌﺘﺰﻟﺔ ﻷﻧﺎ ﻻ ﻧﻜﻔﺮ ﺃﺣﺪﺍ ﻣﻦ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻘﺒﻠﺔ ﺇﻥ ﻭﻗﻊ ﺇﻟﺰﺍﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺒﺎﺣﺚ
(ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺭﺩ ﺍﻟﻤﺤﺘﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺪﺭ ﺍﻟﻤﺨﺘﺎﺭ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻨﻜﺎﺡ » ﻓﺼﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺤﺮﻣﺎﺕ)ج٣ص٤٥
মু'তাযিলাদের সাথে বিবাহ-শাদি জায়েয।কেননা আমরা আহলে কিবলাদের কাউকে কাফির বলি না।যদি ও তাদের কুফুরী মতবাদ থেকে মানুষকে বাঁচাতে মাঝেমধ্যে তাদেকে কাফির বলা হয়ে থাকে।
শামী-দুর্রুল মুখতার(৩/৪৫)
মুফতী সালমান মনসুরপুরী দাঃ বাঃ বলেন,
যদিও ভিন্ন ভিন্ন আক্বীদা সম্পন্ন লোকদের মধ্যকার বিবাহ সংগঠিত হয়ে যায়,তবে সহীহ আক্বীদা সম্পন্ন লোকদের জন্য অত্যন্ত জরুরী যে তারা নিজ নিজ আক্বীদা-বিশ্বাসের উপর অটল অবিচল থাকবে।(কিতাবুন নাওয়াযিল;৮/৯৩)
উপরোক্ত আলোচনায় আমরা লক্ষ্য করলাম যে,আক্বিদাগত বিরাট মতপার্থক্য থাকার পরও ফুকাহায়ে কেরামগণ তাদের বিবাহ কে বৈধ সাব্যস্ত করেছেন।
অথচ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের সু-প্রসিদ্ধ চার জামাতের মধ্যকার মতপার্থক্য যৎসামান্য। এবং তার পরিমাণ ও পরিধি ও তেমন জঘন্যতম নয়।
তাই প্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য চার মাযহাবের অনুসারীদের মধ্যেকার পরস্পর বিবাহ অবৈধ হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।কেননা এ চার মাযহাবের সবগুলাই সঠিক এবং এর অনুসারী সবাই হেদায়তপ্রাপ্ত।
প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখাগত মতপার্থক্য হবে কি?
এক্ষেত্রে কি সবাই তাদের নিজস্ব মাযহাবের উপর আ'মল করবে।নাকি স্ত্রী তার স্বামীর মাযহাবের অনুগামী হবে?
উক্ত প্রশ্নের জবাব একটু ব্যাখ্যাসাপেক্ষ।
নিম্নে তা তুলে ধরছি.....
ﺍﻟﺸﻴﺦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﻧﺎﺻﺮ ﺍﻟﺒﺮﺍﻙ
বিশিষ্ট সৌদি আলেম শায়েখ আব্দুর রহমান বিন নাসির বর্রাক বলেন
ﺇﺫﺍ ﺍﺧﺘﻠﻒ ﺍﻟﺰﻭﺟﺎﻥ ﻓﻲ ﻣﺴﺄﻟﺔ ﻣﻤﺎ ﺍﺧﺘﻠﻒ ﻓﻴﻪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﻌﻠﻢ ، ﻓﺈﻣﺎ ﺃﻥ ﺗﺘﻌﻠﻖ ﺑﻬﻤﺎ ﺃﻭ ﺑﺄﺣﺪﻫﻤﺎ، ﻓﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﺣﻖ ﺍﻟﺰﻭﺝ ﻛﺎﻟﻄﻼﻕ ﻭﺍﻟﺮﺟﻌﺔ ﻓﺎﻟﻘﻮﻝ ﻗﻮﻟﻪ، ﻭﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﺣﻘﻬﺎ ﻛﺎﻟﺤﺠﺎﺏ ﻭﺍﻟﺰﻳﻨﺔ ﻓﺎﻟﻘﻮﻝ ﻗﻮﻟﻬﺎ ﺇﻻ ﺃﻥ ﺗﺮﻯ ﻋﺪﻡ ﺍﻟﻮﺟﻮﺏ ﻓﻠﻪ ﻣﻨﻌﻬﺎ ﻟﺤﻘﻪ، ﻭﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﺣﻘﻬﻤﺎ ﻣﻌﺎ ﻛﺎﻹﻧﺠﺎﺏ ﻓﻼﺑﺪ ﻣﻦ ﺍﺗﻔﺎﻗﻬﻤﺎ ﻋﻠﻰ ﺗﻨﻈﻴﻤﻪ .
ﻓﺈﻥ ﺍﺧﺘﻠﻔﺎ ﻓﺎﻟﻘﻮﻝ ﻗﻮﻝ ﻣﻦ ﻳﻄﻠﺒﻪ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﺍﻹﻧﺠﺎﺏ ﺿﺮﺭ، ﻭﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻣﻦ ﺣﻖ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻜﻠﻒ ﻓﺎﻟﻘﻮﻝ ﻗﻮﻝ ﻣﻦ ﻭﺟﺐ ﻋﻠﻴﻪ ﻛﺎﻟﻌﻤﺮﺓ ﻭﺯﻛﺎﺓ ﺍﻟﺤﻠﻲ، ﺃﻭ ﻣﻦ ﻳﺤﺮﻡ ﻋﻠﻴﻪ ﻛﺒﻌﺾ ﺍﻟﻤﻌﺎﻣﻼﺕ ﺍﻟﻤﺨﺘﻠﻒ ﻓﻴﻬﺎ ﻛﺎﻟﺘﻮﺭﻕ .
ﻓﻠﻴﺲ ﻟﻠﺮﺟﻞ ﺃﻥ ﻳﻤﻨﻊ ﺍﻣﺮﺍﺗﻪ ﻣﻦ ﻣﺜﻞ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﻤﻌﺎﻣﻠﺔ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻤﺴﺎﺋﻞ ﺍﻟﺤﻘﻮﻗﻴﺔ ﻛﺤﻖ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻋﻠﻰ ﺍﻣﺮﺃﺗﻪ ﻭﺣﻖ ﺍﻟﻤﺮﺃﺓ ﻋﻠﻰ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﻛﺎﻟﻨﻔﻘﺔ ﻭﺍﻟﺨﺪﻣﺔ، ﻓﻤﺎ ﺗﻨﺎﺯﻋﺎ ﻓﻴﻪ ﺑﺸﺒﻬﺔ ﺍﻟﺨﻼﻑ ﻓﻼ ﺑﺪ ﻓﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻜﻢ ﺍﻟﺤﺎﻛﻢ، ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺃﻋﻠﻢ
(منقول عبر "طريق الإسلام")
সালেহ আল মুনাজ্জিদ বলেনঃ
ﺍﻟﻮﺍﺟﺐ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺰﻭﺟﺔ ﻃﺎﻋﺔ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﺇﻻ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺃﻭ ﻓﻴﻤﺎ ﻳﻀﺮﻫﺎ ، ﺃﻭ ﻳﻀﻴﻊ ﺣﻘﻮﻗﻬﺎ ، ﻓﺈﻧﻬﺎ ﻻ ﺗﻄﻴﻌﻪ .
ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻤﺴﺎﺋﻞ ﺍﻟﺨﻼﻓﻴﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﺗﻜﻮﻥ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻭﻳﻜﻮﻥ ﻟﻠﺰﻭﺟﺔ ﻓﻴﻬﺎ ﺗﺮﺟﻴﺢ ﻳﺨﺘﻠﻒ ﻋﻦ ﺗﺮﺟﻴﺢ ﺍﻟﺰﻭﺝ ﻓﻴﺄﻣﺮﻫﺎ ﺑﺨﻼﻑ ﺗﺮﺟﻴﺤﻬﺎ ﻭﺍﻋﺘﻘﺎﺩﻫﺎ : ﻓﺈﻥ ﻫﺬﺍ ﻳﺨﺘﻠﻒ ﺑﺎﺧﺘﻼﻑ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻧﻔﺴﻬﺎ :
স্বামীর আদেশ-নিষেধ মান্য করা স্ত্রীর উপর ওয়াজিব।তবে গোনাহ বা স্ত্রীর জন্য ক্ষতিকারক অথবা স্ত্রীর হক্ব নষ্ট হয় এমন বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য ওয়াজিব নয়,এমনকি জায়েয ও না।
আর উলামাদের মধ্যকার মতপার্থক্যপূর্ণ বিষয়ে, যেখানে স্ত্রী একটাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং স্বামী অন্যটাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।এমতাবস্থায় যদি স্বামী তার স্ত্রীকে নিজের মতামতের দিকে নির্দেশ দেয় তাহলে স্ত্রীর জন্য আনুগত্য কতটুকু পরিমাণ বৈধ হতে পারে।
ﻓﺈﻥ ﻛﺎﻧﺖ ﺗﺘﻌﻠﻖ ﺑﻌﺒﺎﺩﺗﻬﺎ – ﺍﻟﻮﺍﺟﺒﺔ ﺃﻭ ﺍﻟﻤﺴﺘﺤﺒﺔ - ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺍﻟﺤﻜﻢ ﺃﻭ ﺍﻟﻜﻴﻔﻴﺔ ، ﻭﻛﺎﻥ ﺫﻟﻚ ﻻ ﻳﺆﺛِّﺮ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺰﻭﺝ ﻓﻲ ﺗﻀﻴﻴﻊ ﺣﻘﻮﻗﻪ ، ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻓﻲ ﻓﻌﻠﻬﺎ ﺇﺳﺎﺀﺓ ﻟﻪ : ﻓﻼ ﻳﺠﺐ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺃﻥ ﺗﻔﻌﻞ ﻣﺎ ﻟﻴﺴﺖ ﻣﻘﺘﻨﻌﺔ ﺑﻪ ﺇﻥ ﺃﻣﺮﻫﺎ ﺯﻭﺟﻬﺎ ﺃﻥ ﺗﻔﻌﻠﻪ ، ﻭﻣﺜﺎﻝ ﺫﻟﻚ : ﺯﻛﺎﺓ ﺍﻟﺬﻫﺐ ، ﻓﺈﻥ ﻛﺎﻧﺖ ﺗﻌﺘﻘﺪ ﻭﺟﻮﺏ ﺯﻛﺎﺓ ﺍﻟﺬﻫﺐ ﻭﻟﻮ ﺍﺗﺨﺬ ﻟﻠﺰﻳﻨﺔ – ﻛﻤﺎ ﻫﻮ ﺍﻟﺮﺍﺟﺢ - : ﻓﺈﻧﻪ ﻟﻴﺲ ﻣﻦ ﺣﻖ ﺍﻟﺰﻭﺝ ﺃﻥ ﺗﻄﻴﻌﻪ ﻓﻲ ﻋﺪﻡ ﺇﺧﺮﺍﺝ ﺯﻛﺎﺓ ﺫﻫﺒﻬﺎ ـ ﻣﻦ ﻣﺎﻟﻬﺎ
সারমর্ম স্ত্রীর উপর স্বামীর মাযহাবকে অনুসরণ করা জরুরী বা ওয়াজিব নয়। এবং স্বামীর জন্য স্ত্রীকে কোনো মাস’আলায় বাধ্য করাও জায়েয নয়।
সু-প্রিয় প্রশ্ন দ্বীনী ভাই/বোন!
ভিন্ন মাযহবের কাউকে বিয়ে করা জায়েয।সে হিসেবে আহলে হাদীস এবং হানাফিদের বিয়ে শাদী বিয়ে জায়েয।নাবালক সন্তান বাবার অনুসারী হিসেবে গণ্য হবে।
তবে উত্তম হল, নিজ মানহাজের কাউকে বিয়ে করা ।কেননা এতেকের ভবিষ্যতে কোনোরকম সমস্যা সূষ্টি হবে না।