আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (59 points)
আসসালামু আলাইকুম
১। আব্দুর রহিমের (ছদ্মনাম) ২/৩ টা গরু আছে। গরুর দুধ নিজেরা খায়, ঘরের বয়স্কদের দেয়। ছোট একটা দোকান আছে। মোটামুটি চলে যেত এতে।কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বেশ ধার দেনা হয়ে যায়। এখন এমন অবস্থা যে বাজারও করতে পারেনা। তাদের এক আত্মীয় বাজার সদাইয়ে হেল্প করেন।আব্দুর রহিম একটা দুই রুমের ঘরও তুলছিল ইটের।কোনো আস্তর ঢালাই করতে পারেনি। শুধু দেয়ালগুলোই পড়ে আছে। ছাদ দেওয়ার মতোও অবস্থাতে নাই এখন। তার অই আত্মীয় কি আব্দুর রহিমকে যাকাতের টাকা দিয়ে ঘরে টিনের ছাদ বা এরকম কিছু করে দিতে পারবে?
২। এক ভদ্র মহিলা আগে এনজিও চাকরি করতেন। স্বামী নাই। ২ মেয়ে নিয়৩ সংসার চলত। কিন্তু দ্বীনের বুঝ পেয়ে এই চাকরি ছেড়ে দেন। ঘরে টুকটাক নাস্তা বানিয়ে সেল করেন। মেয়েদের পড়াশোনাও ভদ্র মহিলার বোন খরচ দিয়ে চালান।তবে তার কাছে দেড়/দু লাখ মত জমানো টাকা আছে যেহেতু ২ মেয়ে এখন বড় হচ্ছে। তাকে কি যাকাত দেওয়া যাবে? তাকে দেওয়া না গেলেও কি তার মেয়ে দুজনকে কি দেওয়া যাবে ?

৩। একজন মহিলা ,তার সন্তান নাই কোনো। তবে ভদ্র মহিলা কিছু সম্পদ আছে। এখন এই মহিলা কি বেঁচে থাকতেই স্বামীকে শরীয়াহ মোতাবেক প্রাপ্য অংশ দিয়ে দিতে হবে নাকি উনি মারা গেলে এরপর এগুলো বণ্টন হয়?

৪। আমার ভাই মারা গেছেন। দুই মেয়ে ,এক ছেলে । ছেলেও বাবা মারা যাওয়ার আগে এক্সিডেন্টে মারা যান। দুই মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে ।আলহামদুলিল্লাহ সুখে আছে। ভাবিকে কি যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে যাতে বাজার সদাই করে খেতে পারেন?

1 Answer

0 votes
by (606,540 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/71830/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন

إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান।আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।(সূরা আত-তাওবাহ-৬০)

কে যাকাত খেতে পারবে?

وَلَا يُشْتَرَطُ النَّمَاءُ إذْ هُوَ شَرْطُ وُجُوبِ الزَّكَاةِ لَا الْحِرْمَانِ كَذَا فِي الْكَافِي. وَيَجُوزُ دَفْعُهَا إلَى مَنْ يَمْلِكُ أَقَلَّ مِنْ النِّصَابِ، وَإِنْ كَانَ صَحِيحًا مُكْتَسَبًا كَذَا فِي الزَّاهِدِيِّ.

অর্থাৎ-নেসাব পরিমাণ মাল(নামী তথা বাড়ন্ত হোক বা না হোক,শরীয়তে নামী মাল চার প্রকার যথা-স্বর্ণ,রূপা বা টাকা,ব্যবসার মাল,গবাদি পশু)
এর মালিক না হলে যাকাত খাওয়া যাবে যদি প্রয়োজন থাকে।তাই গায়রে নামী বা অবাড়ন্ত মালের নেসাব পরিমাণ কেউ মালিক হলে যদিও তার উপর যাকাত আসবে না তথাপিও সে যাকাতের মাল খেতে পারবে না।আর কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।
(ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯) 

যে ব্যাক্তি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক নন,সেই ব্যাক্তি শরীয়তের পরিভাষায় ধনী নয়,সে ফকির।
সুতরাং সেই ব্যাক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আব্দুর রহিম যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকেন,অথবা ঋনগ্রস্থ হয়ে থাকেন,সেক্ষেত্রে ঐ আত্মীয় আব্দুর রহমান রহিমকে যাকাতের টাকা দিয়ে ঘরে টিনের ছাদ বা এরকম কিছু করে দিতে পারবে।

কোন কোন আত্মীয়কে যাকাত দেয়া যায়না,এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তাকে যাকাত দেওয়া যাবেনা।

ঐ দুই মেয়ে যদি বালেগাহ হয়ে থাকে এবং নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে যাকাতের টাকা দেয়া যাবে।

আর যদি ঐ দুই মেয়ে নাবালেগাহ হয়ে থাকে,এবং নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো,
সেই দুই মেয়ের তো অবশ্যই বাবা রয়েছে, তার বাবা যদি জীবিত থাকে সেক্ষেত্রে দেখতে হবে যে তার বাবা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক কিনা? 

যদি তাদের বাবা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে নাবালেগাহ সেই দুই মেয়েকে যাকাতের টাকা দেয়া যাবেনা।

আর যদি তাদের বাবা নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে নাবালেগাহ সেই দুই মেয়েকে যাকাতের টাকা দেয়া যাবে।

যদি ঐ দুই মেয়ের বাবা জীবিত না থাকে,এবং ঐ দুই মেয়ে যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় তাদেরকে যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে।

(০৩)
বেঁচে থাকতে কিছুই দিতে হবেনা।
উনি মারা গেলে এরপর এগুলো বণ্টন হবে।

(০৪)
আপনার ভাবি যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে তাকে যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...