আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in পবিত্রতা (Purity) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহি ওয়াবারহকাতুহ।

আমার ৩০ জানুয়ারি ডেলিভারি হয়েছে সিজারে। নিফাসের প্রথম ৫-৬ দিন রক্ত গিয়েছিল কিন্তু তারপর থেকে খুব কম যেত বুঝাই যেত না স্রাবের সাথে একটু ময়লা আসত, আবার ৩৫-৩৭ দিনের দিন থেকে ব্লিডিং বেশি হওয়া শুরু হয়। মার্চের ১০ তারিখে ৪০ দিন পূর্ণ হয় কিন্তু ব্লিডিং ১০ তারিখেও ছিল। ১০ তারিখ দিনেও ছিল তবে রাত থেকে কমেছে আবার। আমার সালাত, রোযা কোনোটাই করা হয়নি ১০ তারিখ থেকে। আজ ১১ তারিখ। এমতাবস্থায় কি আমাকে কি সালাত,রোযা কাযা করতে হবে? এতে কি গোনাহ হবে,কাফফারাও কি অন্তর্ভুক্ত হবে? প্লিজ একটু দ্রুত জানাবেন...!

1 Answer

0 votes
by (72,810 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/59396/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

সুরা মুমিনুন এর ১৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

 ثُمَّ خَلَقۡنَا النُّطۡفَۃَ عَلَقَۃً فَخَلَقۡنَا الۡعَلَقَۃَ مُضۡغَۃً فَخَلَقۡنَا الۡمُضۡغَۃَ عِظٰمًا فَکَسَوۡنَا الۡعِظٰمَ لَحۡمًا ٭ ثُمَّ اَنۡشَاۡنٰهُ خَلۡقًا اٰخَرَ ؕ فَتَبٰرَکَ اللّٰهُ اَحۡسَنُ الۡخٰلِقِیۡنَ

তারপরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি জমাট বাঁধা রক্তে, অতঃপর গোশতপিন্ডকে পরিণত করি হাড্ডিতে, অতঃপর হাড্ডিকে আবৃত করি গোশতপিন্ড দিয়ে, অতঃপর তাকে এক নতুন সৃষ্টিতে উন্নীত করি। কাজেই সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কতই না মহান!

,

শরীয়তের বিধান হলো ভ্রুন তৈরীর পূর্বে গর্ভপাত পরবর্তী রক্ত নেফাস নয়; বরং এই স্রাব শুরু হওয়ার আগে ১৫ দিন পবিত্র অবস্থায় কাটলে তা হায়েযের রক্ত হিসাবে গণ্য হবে। তবে যদি বর্তমান স্রাব তিন দিন পর্যন্ত দীর্ঘায়িত না হয় তাহলে তা ইসতিহাযার রক্ত হিসাবে গণ্য হবে। এমতাবস্থায় হায়েয মনে করে ছেড়ে দেওয়া নামাযগুলো কাযা করে নিতে হবে।

আলবাহরুর রায়েক ১/২১৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৬১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৩৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৩৯৪; রদ্দুল মুহতার ১/৩০২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ১/৪৫)

,

যদি চার মাস বা তার চেয়ে বেশী সময়ের পর গর্ভপাত হয় তাহলে গর্ভপাত পরবর্তী নেফাস হিসেবে গণ্য হবে। আর চার মাসের পূর্বে গর্ভপাত হলে সে রক্তকে হায়েয গণ্য করা হবে যদি তা তিনদিন বা তার চেয়ে বেশী সময় অতিবাহিত হয়। আর তিনদিনের কম বা দশদিনের বেশী সময় অতিবাহিত হলে সে রক্তকে ইস্তেহাযার রক্ত হিসেবে গণ্য করা হবে। (আহসানুল ফাতাওয়া-২/৭১)

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/5930/

,

***নেফাসের সর্বোচ্চ সময়সীমা হল ৪০ দিন। ৪০দিনের মাঝে রক্ত বন্ধ হবার পর যদি আবার ৪০ দিনের মধ্যেই রক্ত দেখা যায়, তাহলে সেটিকে নেফাসের রক্তই ধরা হবে। হায়েজের নয়। সেই হিসেবে নামায রোযা করা যাবে না।

,

এভাবে যদি চলতেই থাকে, অর্থাৎ কিছুদিন রক্ত আসে, আবার বন্ধ হয়ে যায়, আবার রক্ত আসে, আবার বন্ধ হয়ে যায়। তাহলে ৪০দিন পর্যন্ত নেফাসের রক্তই আসছে বলে ধর্তব্য হবে।

,

কিন্তু ৪০ দিনের পরও যদি রক্ত আসে, তাহলে সেটিকে নেফাসের রক্ত নয়, বরং ইস্তিহাজা তথা অসুস্থ্যতার রক্ত ধরা হবে। সে সময় নামায রোযা মাফ হবে না। পড়তে হবে।

عَنْ أَنَسٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «وَقَّتَ لِلنُّفَسَاءِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، إِلَّا أَنْ تَرَى الطُّهْرَ قَبْلَ ذَلِكَ

হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেফাসওয়ালী মহিলাদের মেয়াদ সাব্যস্ত করেছেন চল্লিশ দিন। তবে যদি এর আগে পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে ভিন্ন কথা। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৪৯, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৩১১, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৮৫২, সুনানে কুবরালিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৬১৯]

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যখন থেকে ৪০ দিন পূর্ণ হয়েছে তখন থেকে নামাজ-রোজা করতে হবে। কারণ, নিফাসের সর্বোচ্চ সময়সীমা হল ৪০ দিন। এরপরও রক্ত দেখা দিলে তা ইস্তিহাযা হিসাবে ধরা হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনাকে নামাজ-রোজা শুরু করে দিতে হবে।

উল্লেখ্য যে, এটা যদি আপনার প্রথম সন্তান হয় তাহলে নিফাসের সময় ৪০ দিনই ধরা হবে। আর যদি আগেও সন্তান হয়ে থাকে তাহলে তখন যতদিন নিফাস ছিলো উদাহরণসরূপ ৩০ দিন (আগের সন্তানের সময়)। তাহলে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রেও ৩০ দিন নিফাস ধরে বাকী দিনগুলোর নামাজ কাযা করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 238 views
...