জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
ইমরান বিন হুসাইন (রদ্বি, ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَطَيَّرَ، أَوْ تُطُيِّرَ لَهُ أَوْ تَكَهَّنَ، أَوْ تُكُهِّنَ لَهُ أَوْ سَحَرَ، أَوْ سُحِرَ لَهُ-
, ‘‘সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি (কোন বস্ত্ত, ব্যক্তি কর্ম বা কালকে) অশুভ লক্ষণ বলে মানে অথবা যার জন্য অশুভ লক্ষণ দেখা (পরীক্ষা) করা হয়, যে ব্যক্তি (ভাগ্য) গণনা করে অথবা যার জন্য (ভাগ্য) গণনা করা হয়। আর যে ব্যক্তি যাদু করে অথবা যার জন্য (বা আদেশে) যাদু করা হয়।’’ (ত্বাবারানী ১৪৭৭০, সহীহুল জামে’ ৫৪৩৫ ,সিলসিলা ছহীহা ২১৯৫)
এগুলোতে বিশ্বাস করা শিরক। এভাবে শুভ অশুভ নির্ণয়ের বিধান প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ (স) বলেন,
اَلطِّيَرَةُ شِرْكٌ
‘কুলক্ষণে বিশ্বাস করা শিরক’।[আবুদাঊদ, তিরমিযী; মিশকাত, ৪৫৮৪]
আব্দুল্লাহ বিন আমর বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স) একদা বললেন, কুলক্ষণ যে ব্যক্তিকে কোন কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে, নিশ্চয়ই সে শিরক করে। ছাহাবীগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! উহার কাফফারা কি হবে? তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তি বলবে-
اَللَّهُمَّ لاَ خَيْرَ إِلاَّ خَيْرُكَ وَلاَ طَيْرَ إِلاَّ طَيْرُكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ
‘হে আল্লাহ! আপনার কল্যাণ ছাড়া কোন কল্যাণ নেই। আপনার সৃষ্ট কুলক্ষণ ছাড়া কোন কুলক্ষণ নেই। আর আপনি ছাড়া কোন মা‘বূদও নেই’ [আহমাদ ৭০৪৫, সিলসিলা ছহীহা ১০৬৫]
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
বিষয়টি সম্পূর্ণই পাত্র ও পাত্রীর উপর ডিপেন্ড করে। পাত্র যদি বিষয়টি জানার পরও ওই পাত্রীকে বিবাহ করে সেটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার ইসলাম এক্ষেত্রে তাকে কোনোভাবেই সেই মেয়েটিকে বিবাহ করতে বাধ্য করবে না।
(০২)
তাদের কেউ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে এতে কাহারো গুনাহ হবেনা।
তবে একটি বিষয় লক্ষনীয়,তাহা হলোঃ বাবার মার রোগ থাকলে সন্তানেরও সেই রোগ গ্যারান্টি সহকারে হবেই, ইসলাম এ ধরনের বিশ্বাস সমর্থন করে না।
(০৩)
সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে সাধারণত জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
,
এক.স্থায়ী পদ্ধতি–যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অবৈধ।
আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (র.) বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন: و هو محرم بالاتفاق অথাৎ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম।(উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ)
দুই.অস্থায়ী পদ্ধতি– যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমন : আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া,জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদি।
দ্বিতীয় প্রকার শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত মাকরুহে তানযিহি।তবে শরীয়ত সম্মত নিম্নোক্ত প্রয়োজনে বৈধ রয়েছে।
(ক)মহিলা এত দুর্বল যে, গর্ভধারণের বর্তমানে যোগ্যতা নেই।
(খ)মহিলা নিজ বাসস্থান থেকে এত দূর সফরে যেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের আপতত কোনো মনোবাসনা নেই।আবার নিজ বাসস্থানে আসতেও কয়েক মাস লেগে যাবে বা কয়েক মাসের প্রয়োজন।
(গ)স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্ক চূড়ান্ত নিম্ন পর্যায়ের,এমনকি উভয়ের অন্তরে বিচ্ছেদের চিন্তাভাবনা চলছে।
(ঘ)পূর্বের বাচ্চার সু-সাস্থ্যর ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে।
(ঙ)স্থান-কালের ফাসাদ অর্থাৎ দ্বীনী পরিবেশের চূড়ান্ত পর্যায়ের অবনতির ধরুন বাচ্চা বদ-আখলাক বা অসচ্চরিত্র এবং মাতাপিতার বে-ইজ্জতির কারণ হবে বলে আশঙ্কা করলে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي صلى الله عليه و سلم ـ صحيح البخاري – (2 / 784)، باب العزل
হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আযল(যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)
বিস্তারিত জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ঝুকির বিষয়টি বিশ্বাস করে তারা যদি জন্ম নিয়ন্ত্রণ এর স্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করে,তাহলে তাহা হারাম হবে।
আর যদি অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করে,সেক্ষেত্রে তাহা মাকরুহে তানযিহি তথা অনুত্তম হবে। হারাম হবেনা।
এক্ষেত্রে স্বামী যদি একাধিক বিবাহের সমস্ত শর্ত মেনে দ্বিতীয় বিবাহ করে এবং সেই দ্বিতীয় স্ত্রী হতেই সন্তান নেয় সেক্ষেত্রে শরীয়তের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা নেই।