আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in সালাত(Prayer) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়াবারকাতুহ উস্তায। আমি গত ফেব্রুয়ারীর ৮ তারিখে এক্সিডেন্ট করি। ৩টা আঙুল এবং পায়ের উপরিপাতায় চামড়া উঠে যায় যার ফলে ব্যান্ডেজ করা ছিলো পায়ে। ফতোয়া থেকে জেনে হাতে পানি নিয়ে সেই পানি ঝেড়ে ব্যান্ডেজের অংশে ৩বার করে হাত বুলিয়ে, বাকি অংশে পানি লাগিয়েই নামাজ পড়েছি আলহামদুলিল্লাহ। ২দিন পরে সেই ব্যান্ডেজ খুলেলে ওই ক্ষত অংশ বাদ দিয়ে পা ধুয়েছি। ওখানে পানি লাগানো নিষেধ ছিলো বলে। এটাও ফতোয়া থেকে জেনে নিয়েই করেছি। ৫ম দিন এক্সরে করে জানতে পারি পায়ে ফ্র‍্যাকচার হয়েছে। সেদিনই ২১ দিনের জন্য পা প্লাস্টার করে দেয় হাটুর একটু নিচ অবদি। যেহেতু পুরো পা ই ব্যান্ডেজে ঢাকা তখন সম্পুর্ন ওযু ঠিক মতো করে ওই পায়ের জন্য হাতে পানি নিয়ে সেই পানি ঝেড়ে মাসেহ করতাম ৩ বার করে। প্রথম দিন থেকে নিয়ে প্লাস্টার খোলার আগ পর্যন্ত প্রতি দিনই নামাজ পড়তাম বসে বসে। প্লাস্টার করা পা টাকে বালিশের উপর রাখতাম পশ্চিম দিক করে বসে। আর ভালো পা টাকেও সামনেই রাখতাম কিন্তু ভাজ করে। আর বেশিক্ষণ কোনো সাপোর্ট ছাড়া বসে থাকতে পারি না বলে পেছনে বালিশ রেখে তাতে হেলান দিয়ে বসতাম। রুকু, সিজদাহতে যতটুকু সম্ভব হয়েছে ঝুকার চেষ্টা করেছি আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু সিজদাহ একটু ঝুকে দুই হাতের উপরই দিতে হতো। খুব বেশি ঝুকতে পারতাম না বলে সামনে বালিশ রেখে তার উপরও দিতে পারিনি।


গত ৬ই মার্চ আমার প্লাস্টার খুলে দেওয়া হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। ডাক্তার পানি লাগানোর অনুমতি দিয়েছে। প্রতিদিন একবার করে পা ধুতে বলেছে সাবান আর গরম পানি দিয়ে। ওযু করার সময়ও গরম পানি ব্যবহার করতে হবে বলেছে। পায়ের ওই ক্ষত জায়গাটায় ব্যান্ডেজ বেধে তার উপর অ্যাংলেট (ফুটবল খেলার সময় যেটা পায়ে পড়ে) পড়ে থাকতে বলেছে। হাটার অনুমতি এখনো পাইনি, পায়ে কোনো ভর দেওয়া যাবেনা বলেছে। তাই আমি এখনো আগের মতোই নামাজ পড়ছি। কিন্তু বারবার ওযু করার সময় অ্যাংলেট এবং ব্যান্ডেজ একবার খোলা একবার পড়া আমার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। আর বারবার পানি গরম করাটাও একটু ঝামেলার। এদিকে আমার ওযুও থাকছেনা যার ফলে প্রতি ওয়াক্তে ওযু করতে হয়। এখন আমার প্রশ্ন -


১. আমি কি এখনো ওযুর সময় অ্যাংলেট এর উপর দিয়েই হাত বুলাতে পারবো? যেহেতু পানি ব্যবহারের অনুমতি আছে সেক্ষেত্রে কি আমার ওযু হবেনা নাকি আমি অনেক গুনাহগার হবো?


২. সুস্থ হলে এই সবগুলো নামাজ কি কাযা আদায় করতে হবে?
৩. কুরআনের সিজদাহগুলোও বসে বসেই দিলে সেক্ষেত্রে সুস্থ হলে আবারো কি ১৪টা সিজদাহ দিতে হবে?
৪. মাঝে ফরজ গোসল করতে হয়েছিলো একবার। হাটুর নিচ অবদি যেহেতু প্লাস্টার ছিলো সেই অংশ বাদ দিয়েই করতে হয়েছে। এখন তো পানি লাগানো যাবে আবারও কি ফরজ গোসল করে নিতে হবে? তখনের গোসলের দ্বারা কি পবিত্রতা অর্জন হয়নি?

1 Answer

0 votes
by (605,970 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا قُمۡتُمۡ اِلَی الصَّلٰوۃِ فَاغۡسِلُوۡا وُجُوۡہَکُمۡ وَ اَیۡدِیَکُمۡ اِلَی الۡمَرَافِقِ وَ امۡسَحُوۡا بِرُءُوۡسِکُمۡ وَ اَرۡجُلَکُمۡ اِلَی الۡکَعۡبَیۡنِ ؕ

হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাতগুলো কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও এবং তোমাদের মাথায় মাসেহ কর এবং পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধুয়ে নাও।

(সুরা মায়েদা ০৬)

পবিত্রতা (অযু/গোসল) ব্যতীত নামাজ কবুল হবে নাঃ

 عَنْ اَبِى الْمَلِيْحِ عَنْ اَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: لَا يَقْبَلُ اللهُ صَلَاةً بِغَيْرِ طُهُوْرٍ وَلَا صَدَقَةً مِنْ غُلُوْلٍ 

 অর্থঃ হযরত আবূ মালিহ তাঁর পিতা (উসামা রাযি.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্রতা ব্যতীত নামাজ কবুল করবেন না এবং অবৈধ সম্পদের সাদকাও কবুল করবেন না। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং-০৬)

অজুর ক্ষেত্রে অজুর অঙ্গগুলো এবং ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে পুরো শরীর পরিপূর্ণভাবে পানি দ্বারা ভেজানো আবশ্যক।
যদি কোনো অংশ না ভিজে,তাহলে অযু,গোসল হবেনা।

হাদিসে বর্ণিত আছে- আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক সফরে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌঁছলেন। এদিকে আমরা (আসরের) নামাজ আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম। তাই (তা আদায় করার জন্য) আমরা অজু করা শুরু করলাম। এ সময় আমরা আমাদের পা কোনোমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তখন তিনি উচ্চৈঃস্বরে বলেন, ‘সর্বনাশ! গোড়ালির নিম্নাংশগুলোর জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে।’ তিনি দুই বা তিনবার এ কথা বললেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৬, মুসলিম, হাদিস : ২৪১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
যেহেতু পানি ব্যবহারের অনুমতি আছে,সুতরাং আপনি এখনো ওযুর সময় অ্যাংলেট এর উপর দিয়েই হাত বুলাতে পারবেননা।

সেক্ষেত্রে আপনার অযু হবেনা। 

(০২)
যেদিন থেকে আপনার পানি ব্যবহারের অনুমতি আছে তারপর থেকে আপনি যে কয়দিন এভাবে পায়ের উপর হাত বুলিয়ে নিয়েছিলেন অর্থাৎ মাসাহ করেছিলেন, সে কয়জনের নামাজ যেহেতু আপনার হয়নি, তাই এ কয়দিনের নামাজগুলোর কাজা আপনি আদায় করে নিবেন।

(০৩)
কুরআনের সেজদাহ গুলো বসে বসে আদায় করা যাবে। দাঁড়ানো আবশ্যক না।
সুতরাং সুস্থ হলে সে সেজদাহ গুলো পুনরায় আদায় করতে হবে না।

(০৪)
তখনের গোসলের দ্বারা পবিত্রতা অর্জন হয়েছে।
পুনরায় ফরজ গোসল করতে হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...