বাবুর প্রস্রাবের ভেজা কাপড় হাত দিয়ে ধরলে হাত নাপাক হবে কি না

Question

১। বাচ্চার প্রস্রাবের কাপড় পরিবর্তনের করতে তো প্রস্রাবে ভেজা অংশ হাতে লাগে, হাত সেসময় ভেজা ভেজা অনুভূত হয়। সেই হাত কি অপবিত্র হয়ে যায়? ঐ অবস্থায় নামাজ পড়লে নামাজ হবে না?

২। আজকে আমি বাবুর প্রস্রাবের কাপড় চেইঞ্জ করে হাত ধুতে মনে ছিল না। পরে ঐ হাত দিয়ে আমি আমার পবিত্র ভেজা কাপড় চিপে রোদে শুকাতে দিয়েছি। এখন কি ঐ সবগুলো কাপড়ই নাপাক হয়ে গেছে?  আবার ধুতে হবে?

৩। আমার বাবুর ৩মাস হয়নি এখনো। ওর জন্য অনেকসময় শুধুমাত্র ফরজ নামাজগুলো পড়তে হয়, সুন্নাতে মুয়াক্কাদা পড়া হয় না, তারাবীহও মাঝেমধ্যে পড়া হয় না অথবা পড়লেও ২/৪ রাকাত পড়া হয়। এজন্য কি আমার গুনাহ হচ্ছে?

Answer 1

জবাবঃ-

بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।

(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

عَنْ عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ، أَنَّهَا قَالَتْ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ بِصَبِيٍّ، فَبَالَ عَلَى ثَوْبِهِ، فَدَعَا بِمَاءٍ فَأَتْبَعَهُ إِيَّاهُ

উম্মুল মু’মিনীন আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ﷺ-এর কাছে একটি শিশুকে আনা হল। শিশুটি তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনালেন এবং এর ওপর ঢেলে দিলেন। (সহীহ বুখারী ২২২)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

প্রশ্নের বিবরন মতে সেই হাত অপবিত্র হয়ে যায়। ঐ অবস্থায় নামাজ পড়লে নামাজ হবেনা।

হ্যাঁ যদি পেশাব এক দিরহাম থেকে কম হাতে লাগে,সেক্ষেত্রে নামাজ হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/5372/

(০২)

বাবুর প্রস্রাবের কাপড় চেইঞ্জ করার সময় হাতে যদি ভেজা লেগে থাকে,সেক্ষেত্রে ঐ পবিত্র ভেজা কাপড় গুলো পাক করতে হবে।

বাবুর প্রস্রাবের কাপড় চেইঞ্জ করার সময় হাতে যদি ভেজা না লাগে,সেক্ষেত্রে ঐ পবিত্র ভেজা কাপড় গুলো পাক করতে হবেনা।

(০৩)

নিয়মিত এভাবে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ছেড়ে দেয়ায় আপনার গুনাহ হচ্ছে।

প্রয়োজনে অন্য কাহারো কাছে বাবু রাখতে হবে।

আপনার বাসায় আর কেউ না থাকলে প্রয়োজনে অন্য বাসার ভাবির কাছে বাবু রাখবেন,সেটি সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে বেতন দিয়ে বাসায় খাদেমাহ রাখবেন।

তবুও সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এভাবে নিয়মিত ছেড়ে দেয়া যাবেনা।