আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
295 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (45 points)

1. কারো সামনে মাথা নত করা অথবা কুর্নিশ করা  এবং  পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলে  সেটা কি  কুফর বা শিরক হবে  এবং এটা করতে তাকে বাধ্য করা হয়  যদিও অন্তরে আল্লাহ কে রেখেছে ?

2.কেউ যদি আল্লাহকে পরিপূর্ণরূপে বিশ্বাস করেন  কিন্তু  নবী মোহাম্মদকে  শেষ নবী হিসেবে স্বীকার না করে তাহলে সে কি কাফের হয়ে যাবে ?  কারণ সে তো শিরক করে নাই ?

3.কোন ধরনের পোশাক পুরুষ ও নারীর জন্য হারাম ?

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ
(১)
সালাম করা নবীজী সাঃ এর সুন্নাত।
কাউকে সালাম দিতে হলে মূখ দিয়ে উচ্ছারণ করে "আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ "বলতে হবে।কেননা এটাই ছিলো রাসূলুল্লাহ সাঃ এর রীতিনীতি ও পদ্ধতি।পা ছূয়ে বা হাত নেড়ে সালাম করা বা সম্মান প্রদর্শন করা নবীজী সাঃ এর রীতিনীতি ছিল না। বরং এটা সরাসরি সুন্নাত বহির্ভূত কাজ।এবং বেদআত।যা অবশ্যই বর্জনীয়। 

মা-বাবা বা কোন নেককার বুজুর্গের হাত-পা ও কপালে বরকতের নিয়তে ছুমা দেওয়াকে অধিকাংশ  ফুকাহায়ে কেরাম জায়েয মনে করেন।তবে মাথা নূয়ে পায়ে ছুমা দেওয়া সম্পর্কে ফুকাহাদের মধ্যে মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।অধিকাংশের মতে বৈধ রয়েছে।
কিন্তু পায়ে ধরে মাতাপিতা বা শশুড়-শাশুড়ি কে সালাম বা সম্মান প্রদর্শনকে কেউ -ই বৈধ মনে করেন না।(জাওয়াহিরুল ফিকহ,১/২০০)আরো জানুন- 3275

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পায়ে এবং পায়ের সামনের জমিনে চুমু দিয়েছেন।সে হিসেবে বলা যায় যে,নিজ মাতাপিতা বা নেককার বুজুর্গ ব্যক্তিবর্গের পায়ে নির্জনে চুমু দেওয়া যাবে। তবে প্রচলিত নিয়মানুসারে পায়ে ধরে সালাম করা যাবে না।এটা বিদ'আত ও সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ।

সুতরাং 
কারো সামনে মাথা নত করা অথবা কুর্নিশ করা  এবং কারো পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা, এসব শিরক ও গোমড়াহি।যদি এটা করতে কাউকে বাধ্য করা হয়, তাহলেও এসমস্ত শরীয়ত বিরুধী কাজ করা যাবে না।

(২)
কেউ যদি আল্লাহকে পরিপূর্ণরূপে বিশ্বাস করে,তবে নবী মোহাম্মদ সা.কে শেষ নবী হিসেবে স্বীকার না করে, তাহলে সে কাফের।কারণ সে নবীকে অস্বীকার করেছে।আর অস্বীকারকারীকেই কাফির বলা হয়।কেননা কুফর শব্দের অর্থ হল, অস্বীকার করা।হ্যা কাকে মুশরিক বলা যাবে না।কেননা সে তো এখানে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করেনি।

উল্লেখ্য যে, বেদ্বীন বা কাফির কয়েক ধরণের হতে পারে।নাস্তিক হতে পারে,ইহুদি হতে পারে,নাসারা বা খৃষ্টান হতে পারে কিংবা মুশরিক যেমন হিন্দু বদ্ধ ইত্যাদিও হতে পারে।মুসলমান ছাড়া সবার ঠিকানা চিরস্থায়ী জাহান্নাম।


(৩)
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যাহ(১১/২৬৮) "এ বর্ণিত রয়েছে,
 ﻻ ﺧﻼﻑ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻓﻲ ﺃﻧﻪ ﻳﺤﺮﻡ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺮﺟﺎﻝ ﺃﻥ ﻳﺘﺸﺒﻬﻮﺍ ﺑﺎﻟﻨﺴﺎﺀ ﻓﻲ
ﺍﻟﺤﺮﻛﺎﺕ ﻭﻟﻴﻦ ﺍﻟﻜﻼﻡ ﻭﺍﻟﺰﻳﻨﺔ ﻭﺍﻟﻠﺒﺎﺱ ﻭﻏﻴﺮ ﺫﻟﻚ ﻣﻦ ﺍﻷﻣﻮﺭ ﺍﻟﺨﺎﺻﺔ ﺑﻬﻦ ﻋﺎﺩﺓ ﺃﻭ ﻃﺒﻌﺎً
ভাবার্থঃ-পুরুষের জন্য মহিলার সাদৃশ্য গ্রহণ হারাম।চায় উক্ত সাদৃশ্য গ্রহণ উঠা-বসা ও নড়াচড়ায় হোক বা লাবণ্যময়ী কথাবার্তায় হোক বা সুন্দর্য্যতা কিংবা পোশাক-আশাকে হোক, মোটকথা অভ্যাগত বা জন্মগত মহিলাদের সাথে নির্দিষ্ট ও বিশেষিত কোন কিছু সাদৃশ্য গ্রহণ সবকিছুই হারাম ও নাজায়েযের অন্তর্ভূক্ত।
আরো বর্ণিত রয়েছে,(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া,১৯/৩১৮)(দারুল ইফতা," জামেয়া ফারুক্বিয়া করাচী" কর্তৃক সত্যায়িত ও সংশোধিত এবং২৫ ভলিউমে প্রকাশিত)বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 3405
 
নারী-পুরুষ পরস্পর পরস্পরের সাদৃশ্য গ্রহণ ব্যতীত নারীর জন্য সকল প্রকার কালার এবং সকল জাতের পোষাক জায়েয।তবে পুরুষের জন্য রেশমের পোষাক নাজায়েয।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...