আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
104 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু

আমি আলেম কোর্সের একজন ছাত্র। দীন সম্পর্কে ভালোভাবে জানার আগ্রহ আমাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই আছে, আলহামদুলিল্লাহ। এই কারণেই আমার স্বামী আমাকে আলেম কোর্সে ভর্তি করে দিয়েছেন। আমরা দুজনই একসঙ্গে ক্লাসগুলো শুনি।

কিছুদিন ধরে আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ—

১. আমার স্বামী মনে করেন, হানাফি মাযহাবকে বেশি অনুসরণ করে। তবে মাযহাব মানার ক্ষেত্রে তিনি সম্পূর্ণভাবে একটিকে অনুসরণ করতে চান না। বরং, কোনো ইখতেলাফি (বিরোধপূর্ণ) বিষয় সামনে এলে তিনি সেটার মধ্যে যে দিকটি তার কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে হয়, সেটাই অনুসরণ করেন। কিন্তু আমি আইওএম (Institute of Islamic Studies)-এ ক্লাস করে জেনেছি যে, মাযহাব মানলে সেটাকে পুরোপুরি মানতে হয়, কিছু কিছু অনুসরণ করা আর কিছু কিছু না করা সঠিক নয়। আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলে তিনি বলেন, " নবীজি (স:) আমাদেরকে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে বলছেন। আমি সব মাযহাবকেই শ্রদ্ধা করি এবং কোন সিদ্ধান্তের ক্ষত্রে কুরআন ও সুন্নাহকে মেনে ৪ মাযহাবের মধ্যে অধিক গ্রহণযোগ্য মতকে অনুসরণ করবো।"

২. তাহাজ্জুদ নামাজ নফল নাকি সুন্নত, শবে বরাতের নিয়তে নামাজ পড়া এবং রোজা রাখা— এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে। আমি তাকে বোঝাতে গেলে তিনি বলেন, "আমি যেমন জানি বা জেনে এসেছি, সেটাই মানবো। তুমি অল্প কয়েকদিনের জ্ঞান নিয়ে আমাকে শেখাতে এসো না বা আমাকে বদলানোর চেষ্টা করো না। আমি যেমন আছি, তেমনই থাকবো।"

এমন আরো অনেক বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। বেশি ঝগড়ার এক পর্যায়ে উনি বলেন, "তোমাকে আইওএম-এ ভর্তি করিয়েছি বলে তুমি এখন আমাকে জ্ঞান দিতে আসবে না। আমি যা জেনে এসেছি/যা আমার কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য মনে হবে তাই আমি করব/মানব।"

আমার চিন্তাভাবনা ও উদ্বেগ:
আমি যা শিখছি, সেটার ওপর যদি আমরা স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে আমল না করি এবং নিজেদের সংশোধন না করি, তাহলে ভবিষ্যতে (ইন শা আল্লাহ) আমাদের সন্তান হলে সেও আমাদের মধ্যে দ্বীনি মতবিরোধ দেখে ছোট থেকেই বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। তাকে দ্বীনি পরিবেশ দেওয়ার আগেই যদি তার মনে দ্বীন নিয়ে নেতিবাচকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটা অনেক বড় ক্ষতির কারণ হবে।

আপনি আমার সমস্যাটি বিশ্লেষণ করে আমাকে কিছু পরামর্শ দিলে আমি খুব উপকৃত হতাম।

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/63036/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَّ الۡمُحۡصَنٰتُ مِنَ النِّسَآءِ اِلَّا مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُکُمۡ ۚ کِتٰبَ اللّٰہِ عَلَیۡکُمۡ ۚ وَ اُحِلَّ لَکُمۡ مَّا وَرَآءَ ذٰلِکُمۡ اَنۡ تَبۡتَغُوۡا بِاَمۡوَالِکُمۡ مُّحۡصِنِیۡنَ غَیۡرَ مُسٰفِحِیۡنَ ؕ فَمَا اسۡتَمۡتَعۡتُمۡ بِہٖ مِنۡہُنَّ فَاٰتُوۡہُنَّ اُجُوۡرَہُنَّ فَرِیۡضَۃً ؕ وَ لَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ فِیۡمَا تَرٰضَیۡتُمۡ بِہٖ مِنۡۢ بَعۡدِ الۡفَرِیۡضَۃِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا ﴿۲۴﴾ 

আর নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া সব সধবা (অন্যের বিবাহিতা স্ত্রী) তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এগুলো আল্লাহর বিধান। উল্লেখিত নারীগণ ছাড়া অন্য নারীকে অর্থব্যয়ে বিয়ে করতে চাওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য নয়। তাদের মধ্যে যাদেরকে তোমর সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত মাহর অর্পণ করবে। মাহর নির্ধারণের পর কোন বিষয়ে পস্পর রাযী হলে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(সুরা নিসা ২৪)


মুফতী সালমান মনসুরপুরী দাঃ বাঃ বলেন,
যদিও ভিন্ন ভিন্ন আক্বীদা সম্পন্ন লোকদের মধ্যকার বিবাহ সংগঠিত হয়ে যায়,তবে সহীহ আক্বীদা সম্পন্ন লোকদের জন্য অত্যন্ত জরুরী যে তারা নিজ নিজ আক্বীদা-বিশ্বাসের উপর অটল অবিচল থাকবে।(কিতাবুন নাওয়াযিল;৮/৯৩)

★ভিন্ন মাযহবের কাউকে বিয়ে করা জায়েয।সে হিসেবে সালাফি এবং হানাফিদের বিয়ে শাদী জায়েয।নাবালক সন্তান বাবার অনুসারী হিসেবে গণ্য হবে।
তবে উত্তম হল, নিজ মানহাজের কাউকে বিয়ে করা ।কেননা এত করে ভবিষ্যতে কোনোরকম সমস্যা সূষ্টি হবে না।

যারা মাযহাব মানেনা,তারাও যেহেতু মুসলমান,তারাও যেহেতু আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত। তাই তাদের কাউকে বিবাহ করলে সেই বিবাহ শুদ্ধ হবে। 
তবে এই বিবাহের পর তাদের বৈবাহিক জীবনে তিন তালাকের মাসয়ালা,নামাজের মাসয়ালা,মসজিদে গিয়ে নামাজের মাসয়ালা,ঈদগাহে গিয়ে ঈদের নামাজের মাসয়ালা,সহ অসংখ্য মাসয়ালা নিয়ে সমস্যা হতে পারে।

তাই উলামাকে কেরামগন নিজ মাযহাব অনুসারীদের কেই বিবাহ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে যে আপনি এসব মাসয়ালা নিয়ে স্বামীর সাথে আর কোন ঝগড়া করবেন না।

আপনার স্বামী যেটা মানছেন, তাকে সেটি মানতে দিন।

আপনি যেটা মানতেছেন, সেটা মানতে থাকুন।

ভবিষ্যতে সন্তান কার পরামর্শে চলবে বা কোন মতাদর্শ বিশ্বাস করবে, এটি নিয়ে এখনই চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ থাকবে।

এমনও তো হতে পারে যে আপনার সন্তান আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে আপনার মতই কোনো একটি নির্দিষ্ট মাযহাব মানতে পারে।

এমনটি আশা করাই যায়,সুতরাং আল্লাহর উপর ভরসা রেখে নিশ্চিন্ত মনে ঘর সংসার চালিয়ে যান,পাশাপাশি আল্লাহর কাছে নিজের সন্তানের জন্য দোয়া চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...