আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু
আমি আলেম কোর্সের একজন ছাত্র। দীন সম্পর্কে ভালোভাবে জানার আগ্রহ আমাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই আছে, আলহামদুলিল্লাহ। এই কারণেই আমার স্বামী আমাকে আলেম কোর্সে ভর্তি করে দিয়েছেন। আমরা দুজনই একসঙ্গে ক্লাসগুলো শুনি।
কিছুদিন ধরে আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ—
১. আমার স্বামী মনে করেন, হানাফি মাযহাবকে বেশি অনুসরণ করে। তবে মাযহাব মানার ক্ষেত্রে তিনি সম্পূর্ণভাবে একটিকে অনুসরণ করতে চান না। বরং, কোনো ইখতেলাফি (বিরোধপূর্ণ) বিষয় সামনে এলে তিনি সেটার মধ্যে যে দিকটি তার কাছে যুক্তিসঙ্গত মনে হয়, সেটাই অনুসরণ করেন। কিন্তু আমি আইওএম (Institute of Islamic Studies)-এ ক্লাস করে জেনেছি যে, মাযহাব মানলে সেটাকে পুরোপুরি মানতে হয়, কিছু কিছু অনুসরণ করা আর কিছু কিছু না করা সঠিক নয়। আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করলে তিনি বলেন, " নবীজি (স:) আমাদেরকে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে বলছেন। আমি সব মাযহাবকেই শ্রদ্ধা করি এবং কোন সিদ্ধান্তের ক্ষত্রে কুরআন ও সুন্নাহকে মেনে ৪ মাযহাবের মধ্যে অধিক গ্রহণযোগ্য মতকে অনুসরণ করবো।"
২. তাহাজ্জুদ নামাজ নফল নাকি সুন্নত, শবে বরাতের নিয়তে নামাজ পড়া এবং রোজা রাখা— এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে। আমি তাকে বোঝাতে গেলে তিনি বলেন, "আমি যেমন জানি বা জেনে এসেছি, সেটাই মানবো। তুমি অল্প কয়েকদিনের জ্ঞান নিয়ে আমাকে শেখাতে এসো না বা আমাকে বদলানোর চেষ্টা করো না। আমি যেমন আছি, তেমনই থাকবো।"
এমন আরো অনেক বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। বেশি ঝগড়ার এক পর্যায়ে উনি বলেন, "তোমাকে আইওএম-এ ভর্তি করিয়েছি বলে তুমি এখন আমাকে জ্ঞান দিতে আসবে না। আমি যা জেনে এসেছি/যা আমার কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য মনে হবে তাই আমি করব/মানব।"
আমার চিন্তাভাবনা ও উদ্বেগ:
আমি যা শিখছি, সেটার ওপর যদি আমরা স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে আমল না করি এবং নিজেদের সংশোধন না করি, তাহলে ভবিষ্যতে (ইন শা আল্লাহ) আমাদের সন্তান হলে সেও আমাদের মধ্যে দ্বীনি মতবিরোধ দেখে ছোট থেকেই বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। তাকে দ্বীনি পরিবেশ দেওয়ার আগেই যদি তার মনে দ্বীন নিয়ে নেতিবাচকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটা অনেক বড় ক্ষতির কারণ হবে।
আপনি আমার সমস্যাটি বিশ্লেষণ করে আমাকে কিছু পরামর্শ দিলে আমি খুব উপকৃত হতাম।
জাযাকাল্লাহু খাইরান।