আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
61 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। খুব জরুরি হুজুর । আমি একজন মেয়ে। সামনের মাসে আমার বিয়ে ইন শা আল্লাহ। দয়া করে উত্তর দিন।

যদি ছেলে- মেয়ে হারাম রিলেশনশিপে থাকা অবস্থায় আল্লাহর নামে কসম করে একে অপরকে বলে তারা দুইজন দুইজনকে বিয়ে  করবে।এখন হারাম রিলেশন থেকে ছেলে-মেয়ে বের হয়ে গেলে বা ব্রেক আপ হয়ে গেলে, তারপর বিয়ের সময় হলে------

১) তারা কি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবে? নাকি তাদের দুইজন দুইজন কেই বিয়ে করতেই হবে? যদি ছেলে বা মেয়ে কাফফারা আদায় না করে অন্যত্র বিয়ে করে নেয় তাহলে কি তাদের বিবাহিত জীবন বৈধ হবে?

আমার একটা হারাম রিলেশন ছিল। হারাম রিলেশন থাকাকালীন কসম করে অনেক কিছুই বলেছিলাম। ( যেমন: কসম আমি এটা করিনি, কসম আমি এমন বউ হব না, কসম তুমি আমার জামাই, এগুলো আমি ম্যাসেজ এ লিখেছিলাম) এখন আমি আল্লাহর কসম করে কিছু বলেছিলাম কিনা মনে করতে পারছি না।

২) আমি যে প্রায়ই ম্যাসেজ এ লিখতাম - (কসম আমি এটা করিনি, কসম আমি এমন বউ হব না, কসম তুমি আমার জামাই) এমন অনেকদিন বলেছি,লিখেছি । মনে মনে যদি" আল্লাহর  কসম "বলে আর ম্যাসেজে লিখার সময় শুধু "কসম" লিখলে  এটার  জন্য কি কোনো কসম বা শপথ ধরা হবে?

৩)*****সামনের মাসে আমার বিয়ে ইন শা আল্লাহ।  তাই  অন্য ছেলেকে বিয়ে করার কারনে আমি সতর্কতার জন্য কাফফারা দিতে চাই, যেহেতু আমার মনে নাই আল্লাহর নাম নিয়ে কসম করেছিলাম কিনা***** যদি আমি এই হারাম রিলেশন এর  কাফরারা আদায়,  আমার এখন যেই ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে,  তার সাথে বিয়ে হওয়ার পরে আদায় করি ইন শাআল্লাহ,তাহলে কি কাফফারা আদায় না করে,  আমার অন্য ছেলেকে বিয়ের কারনে বিবাহিত জীবন কি বৈধ হবে?   বিয়ে বিশুদ্ধ হবে? নাকি আগে হারাম রিলেশন এর কাফফারা আদায় করে পরে অন্য ছেলেকে বিয়ে করতে হবে?

৪) কাফরারা আদায় এর অনেক গুলো নিয়ম দেখলাম। আমার পক্ষে মনে হয়েছে আমি টাকা দিয়ে দিতে পারবো ইন শা আল্লাহ। যেহেতু আমি মেয়ে মানুষ ১০ জন মানুষ কে দুই বেলা খাবার খাওয়ানো আমার পক্ষে এখন সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে আমি কিভাবে কতজন কে কত টাকা দিবো? একদিনেই কি ১০ জন কে টাকা দিয়ে দিলে হবে? জানাবেন দয়া করে হুজুর।

৫) কসমের ব্যাপারে এসব পড়তে যেয়ে আমার যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে, তার কথা খালি মাথায় আসতেছিল। যে তাকে বিয়ে করবো নাকি করবো না। একবার মনে মনে বলতেছি বিয়ে করবো, আবার বলতেছি বিয়ে করব না। ( আমি আল্লাহর  কসম এটা লিখতেছি  না আপনার কাছে ভয়ে, যেহেতু কসম লিখলেও হয়ে যায়)। আমি আসলে কি বলেছিলাম মনে পড়তেছে না। মুখে মুখে উচ্চারণ করে বলিনি। কিন্তু এগুলো কসম নিয়ে মাসালা পড়ার সময় আবার ঠোট নাড়ায়ে কিছু বির বির করে বলতেছিলাম মনে হয়।  আমি যদি বলি " আমি হবু বর কেই বিয়ে করবো " তাহলে তার সাথে বিয়ে হয়ে গেলে আমাকে তো আর কাফফারা দিতে হবে না। কিন্তু আমি যদি বলি " হবু বরকে বিয়ে করবো না" অথচ তার সাথে আমার সামনের মাসে বিয়ে ইন শা আল্লাহ। যেহেতু আমি নিশ্চিত না আমি কি বলেছিলাম এক্ষেত্রেও আমি আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে একটা কাফফারা দিয়ে দিতে চাই।
----প্রশ্ন ::::: হুজুর যদি আমি "হবু বরকে কি বলেছিলাম, বিয়ে করবো নাকি করবো না", এই কাফফারা টা বিয়ের পরে আদায় করি তাহলে কি আমার হবু বরের আমার সাথে বিয়ে করে নিলে বিয়ে বৈধ  হবে ?

৬) যদি হবু বরকে কি বলেছিলাম মনে না করতে পারি, তার সাথে  কাফফারা দেয়ার দেয়ার মত কিছুই না হয়, তাও আমি সতর্কতার জন্য কাফফারা দিয়ে দেই, সেক্ষেত্রে কি বিয়ের পরে বিবাহিত জীবনে কোনো সমস্যা হবে? বিয়ে অশুদ্ধ বা অবৈধ মত কিছু হবে?

৭) কাফফারা দেয়ার জন্য  কি আলাদা করে কোনো নিয়ত আছে?

৮) এখন হারাম রিলেশন এর জন্য ১ম কাফফারা দেয়ার ৭ দিন পরে কি হবু বরকে নিয়ে কি বলেছিলাম সেটার জন্য ২য় কাফফারা দিতে পারবো??

যেহেতু সামনের মাসে বিয়ে ইন শা আল্লাহ। তাই চাচ্ছি যত দ্রুত আল্লাহ থেকে মাফ চাওয়া যায়।

৯) আমি এখনো পড়াশোনা করছি। নিজের টাকা নাই। বাবা মা যা টাকা দেয় তা থেকে জমিয়ে কি সেই টাকা কি কাফফারা আদায় করা যাবে?

১০) আপনাদের কাছে কসমের মাসালা   জানার জন্য  গুছিয়ে প্রশ্ন লিখতে যেয়ে অনেক বার কসম, আল্লাহর কসম এগুলা মুখের  উচ্চারণ করেছি।  এগুলা লিখেও কেটে দিছি ভয়ে। এগুলা লিখার কারনে কি নতুন করে কোনো কসমের কাফফারা দিতে হবে আমাকে এখন? ( এগুলো লিখার সময় মনে মনে অনেক কিছু আসতেছিল, যেগুলো বলতে চাচ্ছি না তাও আসছে। তাই জানতে চাচ্ছি নতুন করে কোনো কসম হবে কিনা আপনাদের কাছে এগুলো লিখার কারনে, উচ্চারণ করার কারনে ??

( বড় হয়ে গেলো একবারে লিখতে যেয়ে। কিন্তু একটু দয়া করে আলাদা আলাদা করে উত্তর দিয়েন। খুবই জরুরি)। অনেক পেরেশানি তে আছি। আমাকে দয়া করুন।

1 Answer

0 votes
by (632,880 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
কসম বা শপথ তিন প্রকার যথাঃ- 
(اليمين بالله ثلاثة أنواع) غموس، وهو الحلف على إثبات شيء، أو نفيه في الماضي، أو الحال يتعمد الكذب فيه فهذه اليمين يأثم فيها صاحبها، وعليه فيها الاستغفار، والتوبة دون الكفارة.
(১)গুমুস- অতীত বা বর্তমান কালে কোনো জিনিষকে প্রমাণিত করা বা না করার জন্য ইচ্ছা করে মিথ্যা কসম করা।এমন শপথকারী নিজে গোনাহগার হবে।তার উপর তাওবাহ ইস্তেগফার করা অত্যাবশ্যকীয়। তবে তার উপর কাফফারা আসবে না।
ولغو، وهو أن يحلف على أمر في الماضي، أو في الحال، وهو يظن أنه كما قال:، والأمر بخلافه بأن يقول: والله قد فعلت كذا، وهو ما فعل، وهو يظن أنه فعل، أو: ما فعلت كذا، وقد فعل، وهو يظن أنه ما فعل، أو رأى شخصا من بعيد فقال: والله إنه لزيد، وظنه زيدا، وهو عمرو، أو طائرا فقال: والله إنه لغراب، وظنه غرابا، وهو حدأة فهذه اليمين نرجو أن لا يؤاخذ بها صاحبها، واليمين في الماضي إذا كان لا عن قصد لا حكم له في الدنيا، والآخرة عندنا.
(২)লগু-অতীত বা বর্তমান কালে কোনো জিনিষ প্রমাণিত করা বা না করার জন্য শপথ করা।সে ধারণা করছে যে,সে যা বলছে তাই সত্য,অথচ বাস্তবতা হল,মিথ্যা।যেমন কেউ বলল,আল্লাহর কসম,আমি এমনটা করেছি।অথচ বাস্তবতা হল, সে করেনি।কিন্তু সে মনে করে করেছে যে,সে করোছে।এবং তার উল্টো বিষয়ও এমনই।
এবং কেউ দূর থেকে কোনো ব্যক্তিকে দেখে বলল,এতো যায়েদ।অথচ সে আমর।কিন্তু সে ধারণা করেছিল যে,উনি যায়েদ,ইত্যাদি ইত্যাদি।এমন শপথের ব্যাপারে বলা যায় যে,এই শপথের শপথকারীর কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।অতীতকালের শপথ যদি কেউ মিথ্যার ইচ্ছায় না করে,তাহলে হানাফি ফিকহ অনুযায়ী দুনিয়া ও আখেরাতে এর কোনো শাস্তির বিধান আরোপিত হবে না।
ومنعقدة، وهو أن يحلف على أمر في المستقبل أن يفعله، أو لا يفعله، وحكمها لزوم الكفارة عند الحنث كذا في الكافي.
(৩)মুনআকিদাহ- ভবিষ্যৎকালে কোনো জিনিষ করা বা না করার শপথ করা।শপথ পূর্ণ না করলে এর কাফফারা অবশ্যই দিতে হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/৫২) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3101


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ছেলে- মেয়ে যদি হারাম রিলেশনশিপে থাকা অবস্থায় আল্লাহর নামে কসম করে তারা বলে থাকে যে, তারা  একে অপরকে বিয়ে করবে। এখন তারা অন্যত্র বিয়ে করলে তাদেরকে কাফফারা দিতে হবে। বিয়ের পূর্বে হোক বা পরে, তাদেরকে কাফফারা দিতে হবে। কাফফারা যে কোনো সময় দেওয়া যাবে। তবে অতিদ্রুত দিয়ে দেয়াই উত্তম। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (632,880 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...