আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
37 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু                      
আমি একটি বিষয়ে আপনার সুচিন্তিত মতামত জানতে আগ্রহী। বিষয়টি হলো, শুধুমাত্র বিনোদনের উদ্দেশ্যে দাবা খেলা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ কিনা, যেখানে কোনো প্রকার হারাম কার্যকলাপ যেমন জুয়া খেলা বা সময়মতো অবশ্য পালনীয় কাজ (যেমন সালাত) পালনে অবহেলা করা হয় না। অর্থাৎ, খেলাটি কেবল সুস্থ বিনোদনের উদ্দেশ্যে খেলা হয় এবং এতে কোনো প্রকার ধর্মীয় বা নৈতিক আপত্তিকর বিষয় জড়িত থাকে না।

বিশেষ করে, দাবা খেলার ঘুঁটিগুলোর মধ্যে ঘোড়া (Knight) নামক ঘুঁটির আকৃতি একটি জীবন্ত প্রাণীর (ঘোড়া) মুখের আদলে তৈরি। এই ক্ষেত্রে, যদি ঘোড়ার ঘুঁটির মুখমণ্ডল ঢেকে দেওয়া হয় অথবা এমনভাবে পরিবর্তন করা হয় যাতে স্পষ্ট মুখাবয়ব না থাকে, তাহলে দাবা খেলা বৈধ হবে কি? এইরূপ পরিস্থিতিতে, দাবা খেলা এবং তা উপভোগ করা ইসলামে জায়েজ কিনা, সে বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামত জানালে আমি উপকৃত হব।                                       
জাযাকাল্লাহ খাইরান

1 Answer

0 votes
by (616,950 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
দাবা খেলা
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ، ﺃَﻥّ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲَّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﺮَّ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻳَﻠْﻌَﺒُﻮﻥَ ﺍﻟﺸِّﻄْﺮَﻧْﺞِ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : " ﻣَﺎ ﻫَﺬِﻩِ ﺍﻟْﻜُﻮﺑَﺔُ ؟ ﺃَﻟَﻢْ ﺃَﻧْﻪَ ﻋَﻦْ ﻫَﺬَﺍ ؟ ﻟَﻌَﻦَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻦْ ﻓَﻌَﻞَ ﻫَﺬَﺍ " 
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺍﻷﻣﺮ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ ﻭﺍﻟﻨﻬﻲ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻨﻜﺮ ﻟﻠﺨﻼﻝ » ﺑَﺎﺏُ ﺍﻹِﻧْﻜَﺎﺭِ ﻋَﻠَﻰ ﻣِﻦْ ﻳَﻠْﻌَﺐُ ﺑِﺎﻟﺸِّﻄْﺮَﻧْﺞِ - رقم الحديث 158
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,একদা রাসূল সাঃ একটি দলের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন,যারা দাবা খেলছিল।তিনি তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন,এ গুলো কী? তোমাদেরকে কি এগুলো থেকে নিষেধ করিনি? যারা এগুলো খেলে তাদেরকে আল্লাহ তা'আলা অভিসম্পাত করেন।

 ﻣَﻠْﻌُﻮﻥٌ ﻣَﻦْ ﻟَﻌِﺐَ ﺑِﺎﻟﺸِّﻄْﺮَﻧْﺞِ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﻇِﺮُ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ ﻛَﺎﻵﻛِﻞِ ﻟَﺤْﻢَ ﺍﻟﺨِﻨْﺰِﻳﺮِ »
ﺃﺧﺮﺟﻪ ﺍﻟﺪﻳﻠﻤﻲُّ ( ٤ / ٦٣ )
যে দাবা খেলে সে অভিশপ্ত আর এর দর্শক শুকরের গোশত ভক্ষণকারী মতো। 

সাহাবায়ে কেরাম রা. দাবা খেলা থেকে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন। আর এটা সুস্পষ্ট যে, সাহাবায়ে কেরাম রা. এই নিষেধাজ্ঞা রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকেই শুনে থাকবেন।

হযরত আলী রাযি.বলতেন, দাবা অনারবদের জুয়া। তিনি আরো বলেছেন গুনাহগার লোকেরাই দাবা খেলে। একবার তাঁর কাছে কেউ 'দাবা' সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন, এ খেলা বাতিল তথা অনর্থক কাজের অন্তর্ভুক্ত।আর আল্লাহ তা'আলা বাতিলকে পছন্দ করেন না।

একদা হযরত আলী রা. দাবা খেলারত ব্যক্তিদের নিকট দিয়ে গমনকালে তাদেরকে বললেন,
 مَا هَذِهِ التَّمَاثِيلُ الَّتِي أَنْتُمْ لَهَا عَاكِفُونَ
অর্থাৎ- এ মূর্তিগুলি কী? যার পূজারী হয়ে তোমরা বসে আছো।

এ সকল হাদীস ও বর্ণনার কারণেই ইমাম আবু-হানিফা রহ. এবং অন্য কয়েকজন ইমাম দাবা খেলাকে নাজায়েয বলেছেন।যদি ও তাতে জুয়ার সংমিশ্রণ না থাকে।

আল্লামা আবু আব্দুল্লাহ কুরতুবী রহ.সূরায়ে মায়েদার ৯০নং আয়াত তথা
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
এর ব্যখ্যায় বলেন,
هذه الآية تدل علي تحريم اللعب بالنرد والشطرنج قمارا او غير قمار 
অর্থাৎ- উক্ত আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে,পাশা এবং দাবা খেলা সর্বাবস্থায় হারাম।চাই তাতে জুয়া হোক বা না হোক। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/673


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দাবা খেলা হারাম । সবার জন্য সর্বক্ষেত্রে  হারাম। চায় বিনোদনের জন্য হোক বা এমনিতেই হোক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...