আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
25 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহ মাতুল্লাহ শায়েখ।
আমার ১ বছর থেকে গ্যাস্ট্রিক এর (বায়ু নির্গত) সমস্যা। প্রসাব এর রাস্তা মনে হয় ভিজা ভিজা। ওয়াসওয়াসা ও চলে আসে। আমার বার বার অজু ভংগ হয়।
আমার ফজরের নামাজ এর ২-৩  অজু করতে হয়।  ফজরের নামাজ সুরা ইখলাস ছাড়া অন্য সুরা দিয়ে নামাজ পড়তে পারি না। ৪ রাকাআত এই এইরকম।
যোহরের সুন্নত ৪ রাকাআত এর পর - ফরজ ৪ রাকআতের পর মাঝে মাঝে শেষ সুন্নত নফল এর আগেও  অজু করতে হয়।  জোর করে প্রথম ৮ রাকাআত পরলে পরের সুন্নত নফল এর জন্য আবার অজু করতে হয়। এর মাঝে ওয়াসওয়াসা চলে আসে। নামাজ হয়নি অজু ভংগ হয়ে গেছে। আসর এর মাগরিব মাঝে মাঝে এই সমস্যা হয়।কিন্তু ইশায় যোহরের মতো।
আমার অজু করার পরেই শুরু হয়ে এই সমস্যা।

গত রমজান এ আমাকেএশার নামাজ এ সুন্নত ৪ - ফরজ ৪ এর আগে অজু করতে হয়েছে।তারাবীর নামাজএ ২ রাকাআত পর পর মাঝে মাঝে জোর করে ৪ রাকআত পর পর অজু করতে হয়েছে যার জন্য আমার নামাজ এর মান নষ্ট হয়ে গেছে।
১/ আমি তিলওয়াত করতে পারি না । নামাজ দীর্ঘ করতে পারিনা।
এই অবস্থায় আমার করনিয় কি।
২/ # এই রমজান এ আমার এই অবস্থা হলে কি করব। রমজান  আসলে পস্রাব - বায়ু দুইটা সমস্যা থাকে।

1 Answer

0 votes
by (67,320 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/101399/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

,

কোনো ব্যক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়, বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়, তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।  

,

সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে, উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়, বরং চলতেই থাকে, এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সূরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়, তাহলে আপনি মা'যুর।  আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন, এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন। (যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)

,

পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়, তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ 

https://ifatwa.info/3954/

,

মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা গ্রস্থ নারীর ন্যায়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ خَبَرَهَا وَقَالَ " ثُمَّ اغْتَسِلِي ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلَاةٍ وَصَلِّي "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক সালাতের জন্য অযু করে সলাত আদায় করবে।

(আবু দাউদ ২৯৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৪), আহমাদ (৬/৪২, ২৬২)

,

عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন। (আবু দাউদ ৩০৫)

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/12398/

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 ,

উপরোক্ত বিবরণ মতে আপনি মা'যুর কিনা, সেটা আগে নির্ণয় করতে হবে, যদি আপনি মা'যুর না হোন, তাহলে সালাতে বায়ু বের হওয়ার দ্বারা অজু ভেঙ্গে গেলে পবিত্র হয়ে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করতে হবে। বায়ু বের হওয়া মাত্র নামাজ ছেড়ে দিয়ে পাক হয়ে অযু করে এসে বাকি নামায আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে শুরু থেকে নামাজ আদায় বাধ্যতামূলক নয়। যেই রুকনে নামাজ ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন, অযু করে আসার পর সেই রুকন হতেই নামাজ আদায় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আবারো অযু ভেঙ্গে গেলে আবারো অযু করতে যেতে হবে।

,

আর যদি আপনি মা'যুর হোন, অর্থাৎ নামাজের শুরু ওয়াক্ত থেকে নিয়ে ওয়াক্তের শেষ পর্যন্ত আপনার বায়ু বের হতেই থাকে, এই ওযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সূরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়, সেক্ষেত্রে আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করছেন, এই ভাবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে। কেননা আপনি মা'যুর। অর্থাৎ সালাতে বায়ু বের হওয়ার দ্বারা অজু ভাঙবে না।

,

পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে এই ওযর একবার পাওয়া গেলেও আপনি মা'যুর হিসেবেই বহাল থাকবেন। তবে কোনো ওয়াক্তে আপনার আর উক্ত সমস্যা না দেখা গেলে সেক্ষেত্রে আপনি আর মা'যুর হিসেবে থাকবেন না। আপনি সুস্থ মানুষ হিসেবে বিবেচিত হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...