আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
360 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।

১. মাসজিদ বা মাদ্রাসার পাশে কবর দিলে কোনো উপকার আছে কি মৃত ব্যাক্তির জন্য?

২. মাসজিদ বা মাদ্রাসার পাশে কাউকে কবর দেয়া হলে এবং মসজিদ মাদ্রাসার ভিতরে কুরআন তিলাওয়াত করা হলে, সেই সাওয়াবের কোনো অংশ কি মৃত ব্যক্তি পাবে?

৩. মক্কা মদিনায় কারো মৃত্যু কিংবা কবর দেয়া হলে কোনো আলাদা ফজিলত আছে কি?

৪. মৃত্যুর খাটিয়া স্টিলের তৈরি হলে সেখানে অনেক সময় আল্লাহ, মুহাম্মাদ (সা) এর নাম কিংবা আরবি লেখা থাকে। এমন খাটিয়া করে মৃতদেহ নেয়া জায়েজ কি?

 
৫. খাওয়ার সময় মেয়েদের মাথায় কাপড় দেয়া কি মুস্তাহাব? না দিলে কি গুনাহ হবে?

৬. হায়েজ অবস্থায় মিসওয়াক করলে মিসওয়াকের সাওয়াব পাওয়া যাবে কি?

জাযাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মসজিদ মাদ্রাসার পাশে কবর দেয়ার সময় আশা করা হয় যে, পাশের কবর স্থানে কেহ থাকলে প্রায় নামাজের পরেই ঈসালে ছওয়াব করা হয়,দোয়া করা হয়,এতে আশা করা হয় যে, মৃতব্যক্তি এর ফলে উপকৃত হবে।
,
তবে মসজিদের জন্য ওয়াকফকৃত জমিতে কবর দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

ছহীহ বুখারী হা/১৩৫১, ১/১৮০ পৃঃ, (ইফাবা হা/১২৬৯, ২/৪০৮ পৃঃ), ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৭৭ ও হা/৪২৮, ১/৬১ পৃঃ, ‘ছালাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৮।
,
মসজিদের পার্শ্বে পৃথক জমিতে কবর থাকলে অবশ্যই প্রাচীর দিয়ে মসজিদকে আলাদা করে নিতে হবে। ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৩০১ পৃঃ; তালখীছু আহকামিল জানাইয, পৃঃ ৯১।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘সাবধান! তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তারা তাদের নবীগণ ও নেক ব্যক্তিগণের কবর সমূহকে মসজিদে পরিণত করেছিল। সাবধান! তোমরা কবর সমূহকে মসজিদে পরিণত করো না। আমি তোমাদেরকে এ থেকে কঠোর ভাবে নিষেধ করছি’ (মুসলিম হা/৫৩২; মিশকাত হা/৭১৩)।

মসজিদের ভেতরে কবরের চারপাশে উঁচু দেয়াল দ্বারা যদি বেষ্টন করে দেওয়া হয়, তাহলে ওই মসজিদে নামাজ পড়া বৈধ হবে।
উল্লেখ্য, মৃতকে মসজিদের ভেতর কবর দেওয়া বা কবরের ওপর মসজিদ নির্মাণ করা ইসলামে নিষিদ্ধ। (বুখারি, হাদিস : ১৩৩০, মিশকাত, পৃ : ৭১, হিন্দিয়া : ৩১৯-৩২০, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ : ৪/৭৩)
,
তবে কিছু ইসলামী স্কলার গন এটি সম্পূর্ণরুপে নিষেধ করে থাকে।  

(০২)
যদি সেই ছওয়াব পৌছিয়ে দেওয়া হয়,তাহলে পাবে।
,
(০৩)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘আমার মিম্বার ও ঘরের মাঝখানের অংশটুকু জান্নাতের বাগিচাসমূহের একটি বাগিচা।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৯৫)

মসজিদে নববীর পাশে আয়েশা (রা.)-এর হুজরায় অবস্থিত নবীজির রওজা শরিফ। তারই পাশে হজরত আবু বকর (রা.) ও উমর (রা.)-এর কবর। এর পাশে আরেকটি কবরের জায়গা খালি আছে, এখানে হজরত ঈসা (আ.)-এর সমাধি হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৬১৭)

রওজা শরিফের পশ্চিম দিকে রাসুল (সা.)-এর মিম্বার পর্যন্ত স্থানটুকুকে ‘রিয়াজুল জান্নাত’ বা বেহেশতের বাগিচা বলা হয়। এটি দুনিয়ায় একমাত্র জান্নাতের অংশ।
মসজিদে নববীর পূর্ব দিকে অবস্থিত ‘জান্নাতুল বাকি’ গোরস্তানে অসংখ্য সাহাবা, তাবেইন, আউলিয়া ও নেককার মুসলমানের কবর রয়েছে। এর মধ্যে হজরত উসমান, আলী, ইবনে মাসউদ, ফাতিমা, আয়েশা, রাসুল (সা.)-এর দুধমা হালিমা, চাচা আব্বাস, রাসুল (সা.)-এর ছেলে ইব্রাহিম, হাসান রাদিয়াল্লাহু আনহুমসহ অনেকের কবর আছে। রাসুল (সা.) প্রায়ই জান্নাতুল বাকিতে জিয়ারতে যেতেন।
,
প্রিয় নবী (সা.) তাঁর উম্মতকে মদিনায় আবাসস্থল বানাতে এবং এর মধ্যে মৃত্যু কামনা করতেও উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে আমার কবর জিয়ারত করবে, কিয়ামতের দিন সে আমার পাশে থাকবে। আর যে মদিনায় বসবাস করবে এবং তার বিপদাপদের ওপর ধৈর্য ধারণ করবে, কিয়ামতের দিন আমি তার সাক্ষী ও সুপারিশকারী হব। আর যে ব্যক্তি দুই পবিত্র নগরীর (মক্কা-মদিনা) যেকোনো একটিতে মৃত্যুবরণ করবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাকে নিশ্চিন্ত করে ওঠাবেন।’ (শুআবুল ইমান, হাদিস : ৩৮৫৬)

অন্য হাদিসে এসেছে : ‘তোমাদের মধ্যে যার পক্ষে সম্ভব হয়, সে যেন মদিনায় মৃত্যুবরণ করে। কেননা যে ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করবে, আমি তার জন্য সুপারিশ করব।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৯১৭)
,
(০৪)
যদি মাথার দিকে কিছুটা উঁচুতে হয়, কাহারো পা সেই পরিমান সাভাবিক ভাবেই না উঠে তাহলে এটি জায়েজ।
অন্যথায় আল্লাহর নামের আদবের খেলাফ হওয়ার করার কারনে নাজায়েজ হবে। 
,
(০৫)
মাথায় কাপড় না দিলে গুনাহ হবেনা।
,
মাথা খোলা অবস্থায় খানা খেতে কোন সমস্যা নেই।
তবে মাথা খালি রাখা দেখতে অসুন্দর দেখা যায় বলে হয়তো মুরুব্বীগণ বলে থাকেন। তাই এটিকে সর্বোচ্চ আদব বলা যেতে পারে। 
,
ولا بأس بالأكل متكئا، أو مشكوف الرأس فى المختار (رد المحتار، كتاب الحظر والإباحة-9\490)
ولا بأس بالأكل مكشوف الرأس كذا فى الخلاصة (الفتاوى الهندية5\337
সারমর্মঃ মাথা খোলা রেখে খাবার খেলে কোনো সমস্যা নেই।   

(০৬)
হ্যাঁ ছওয়াব পাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...