আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
299 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার ভাই এমন এক মেয়েকে বিয়ে করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে,সে মেয়ে বেপর্দা চলাফেরা করে। নাটকের সাথে জড়িত। ব্যাবসা করতেছে, সব মিলিয়ে সে তাই করে যা সে চায়। একটা সময়ে দেখতাম হিজাব পড়তো, নামাজ পড়তো শুনেছি। তার মা বাবা ও নামাজ রোজা করেন। মেয়েটির একবার বিয়ে হয়েছিলো,পরে তালাক হয়ে যায়।তার একটা ছেলেও আছে,ছেলেটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।(যদিও এসবে আমার আপত্তি নেই)। তালাকের পর থেকে সে নিজেকে এতোটাই চেঞ্জ করেছে,এখন আল্লাহ্'র উপর থেকে তার বিশ্বাস উঠে গেছে,উগ্র চলাফেরা করে। সেই মেয়ে পারিবারিক ভাবে আমাদের ভাগনী হয়,একই এলাকায় আমাদের বাড়ি। ওর মা খালারা আব্বা আম্মাকে এতোটা সম্মান দিতেন, আর আব্বার সাথে এতো ভালো সম্পর্ক ছিলো ওর নানীর, আব্বাকে আপন ভাইয়ের মতোই দেখতেন উনি। সম্পর্ক এখনো সেই রকম ই আছে। বাঁধ সেধেছে মেয়েটা। যাকে মামা ডেকে এসেছে ছোটো বেলা থেকে তার সাথেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে! আমার ভাই ওর বেপর্দা,এবং স্বাধীন চলাফেরা কাউকে কেয়ার না করা এসবেই আকৃষ্ট হয়ে পড়েছে। ভাইটি তামীরুল মিল্লাত মাদ্রাসা থেকে ইন্টার পাশের পর ঢাবি থেকে মাষ্টার্স করে বের হয়েছিলো। সে আর ওই মেয়ে এখন একই চিন্তা ধারা লালন করে। ভাইটিকে এমন কোনো মেয়ের  সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছি- যে তার জন্য দ্বীন এবং দুনিয়া উভয় জাহানের জন্য কল্যাণকর হয়। এই মেয়ে তার জীবনে আসলে আমি আশংকা করছি আমার ভাই এবং আমাদের পরিবার ধ্বংস হয়ে যাবে, আল্লাহ্ ই ভালো জানেন। এখন আমাদের কি করা উচিৎ দয়া করে জানাবেন। খুব ই মনের কষ্টে আছি, আমি আমার মা সহ আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা সবাই।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো বিবাহ পূর্ব প্রেম ভালোবাসা স্পষ্ট আকারে হারাম।
ইসলাম এর কোনোভাবেই অনুমতি দেয় না।

বিস্তারিত জানুনঃ 

★সুতরাং একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার ভয়ে এ গুনাহ থেকে খালেছ দিলে তওবা করে ফিরে আসতে হবে।
কোনো ভাবে তার চিন্তাও অন্তরে আনা যাবেনা।
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,     
বিবাহের ক্ষেত্রে রাসূল সা: ‘কুফু’র বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। 
যদি দ্বীনদার ছেলে কোনো দ্বীনহীন কোনো মহিলাকে বিবাহ করে,তাহলে অধিকাংশ সময়েই তাদের সংসারে কি যে কষ্টকর হয়,তাহা এক মাত্র ভুক্তভোগীরাই ভালো জানে।
,
অনেকাংশে বিবাহ টিকেনা।
দুনিয়াই জাহান্নামে রুপ নেয়,তাই দ্বীনদার পাত্রের জন্য   দ্বীনদার পাত্রির সাথেই বিবাহ হতে হবে।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابُورَ الرَّقِّيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ سُلَيْمَانَ الْأَنْصَارِيُّ أَخُو فُلَيْحٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَجْلَانَ عَنْ ابْنِ وَثِيمَةَ النَّصْرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ خُلُقَهُ وَدِينَهُ فَزَوِّجُوهُ إِلَّا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের নিকট এমন কোন ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এলে, যার চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে (তোমাদের মেয়েদের) বিবাহ দাও। তোমরা যদি তা না করো, তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ব্যাপক বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে।
(ইবনে মাজাহ ১৯৬৭,তিরমিযী ১০৮৪, ইরওয়াহ ১৮৬৮, সহীহাহ ১০২২।) 
,
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا الْحَارِثُ بْنُ عِمْرَانَ الْجَعْفَرِيُّ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَخَيَّرُوا لِنُطَفِكُمْ وَانْكِحُوا الْأَكْفَاءَ وَأَنْكِحُوا إِلَيْهِمْ

 ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ভবিষ্যত বংশধরদের স্বার্থে উত্তম মহিলা গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবচেনায় বিবাহ করো, আর বিবাহ দিতেও সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখো।
(ইবনে মাজাহ ১৯৬৮)

,
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!

সহীহ : বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)
,

আরো জানুনঃ 
,
মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে।এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও অাখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম।মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না।
তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব।

সুতরাং মাতা পিতার মতামতকে উপেক্ষা করে  বিয়ে করা কখনো উচিৎ হবে না।কেননা মাতাপিতা সব সময় সন্তানের কল্যাণ চায়।তাই মাতাপিতার পরামর্শ ও আদেশ মান্য করাই সবার জন্য কল্যাণকর।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাকে সকলেই ভালো করে রাসুল সাঃ এর হাদীস গুলো বুঝাবেন,প্রয়োজনে মুরব্বিদের মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করবেন।
এক্ষেত্রে মাতা পিতা কঠোরতাও করতে পারে।
,
তারপরেও যদি সে মাতা পিতার মতামত উপেক্ষা করে বিবাহ করে,তাহলে বিধান হলোঃ             

শরীয়তের বিধান মতে যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে।
,
★সুতরাং সেক্ষেত্রে আপনার মাতা পিতা চাইলে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিবাহ ভেঙ্গে দিতে পারবে।  
,
আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (3 points)
আলহামদুলিল্লাহ্। আপনার পরামর্শে প্রশান্তি পেলাম। দেখি আল্লাহ্ তা'আলা ভাই এবং আমার পরিবারের নসীবে কি রেখেছেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+2 votes
1 answer 674 views
...