আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ এক বোনের প্রশ্ন উত্তর দিবেন মিন ফাদ্বলিক।
বিয়ের চার বছর পর শারিরীক ও  মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তালাক এর সিদ্ধান্ত নেই,আমাদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো, আমার ছেলের বয়স তখন ২ বছর,আমি সরাসরি আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করি এভাবে এত অশান্তিতে আর কয়দিন থাকবো আপনি কি ঠিক হবেন না? তখন উনি বলছিলো আমি এমনই  থাকবো, তখন আমি আবার প্রশ্ন করি, তাহলে আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়াই ভালো, আমার স্বামী তখন বলে যা ইচ্ছা কর,আমি বলি তাহলে ব্যবস্থা করেন, উনি তখন বলে তুমি ব্যবস্থা করো আর নয়তো শনিবারে কোনো উকিল এর কাছে যাবো,কথাগুলো উনি রাগ এর মধ্যে বলছিলো, এর পরের দিন আমি আমার বাবার বাসায় আসি এবং কিছুদিন এর মধ্যেই আইন মোতাবেক তালাক প্রদান করি, এরপর আমার স্বামী ১বছর এর বেশি সময় ধরে আমার আর আমার ছেলের কোনো খবর রাখে নাই,আমি মহরানার মামলা করার পর উনি আবার আমাকে ফেরত নিতে চায়,এবং আমার উপর আর কোনো ধরনের শারীরিক মানসিক নির্যাতন করবে না বলে , উনি বলে মেয়েরা তালাক দিলে হয় না আর উনি এখনো আমাকে তালাক দেয় নাই,এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ইসলাম মতে আমাদের কি তালাক হয়ে গেছে?আমি কি আবারও এই স্বামীর সংসার করতে পারবো একটা কাবিন এর কাগজ করে নিলেই!!

উল্লেখ্য : আমার বিয়ের সময় কাবিননামায় লিখিতো ছিলো আমার স্বামী আমার খোরপোষ না দিলে বনি বনা না হইলে, দাম্পত্য ধর্ম রক্ষা না করিলে,  মোহরানার টাকা আদায় না করিলে আমাকে তালাক দেয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে,

1 Answer

0 votes
by (592,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক খুবই মারাত্মক একটি বিষয় । নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★শরীয়তের বিধান হলো স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেয়, অথবা সেখানে কাজী সাহেব বা অন্য কেহ হ্যাঁ লিখে দেয়,আর স্বামী তাহা জেনে শুনে নিচে স্বাক্ষর দেয়,আর এই নিকাহ নামা বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার পরে যদি লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

তবে যদি এমনটি না হয়,স্বামী যদি না জেনেই নিচে সাইন করে,সে যদি তালাকের ক্ষমতা প্রদানের এই বিষয় সম্পর্কে স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা,অথবা এই নিকাহ নামা যদি বিবাহের ইজাব কবুল হওয়ার আগে লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।
 
كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
সারমর্মঃ
প্রত্যেক ঐ লেখা,যেটা নিজ হাত দিয়ে লিখেনি,নিজের মন সেদিকে ঝুকেওনি,তাহলে তালাক পতিত হবেনা।
যদি সে এটা স্বীকার না করে যে এটার তারই লেখা।    

সুতরাং  যদি স্বামীর দস্তখত করার সময় জানা থাকে যে, কাজী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দিয়েছে মর্মে উপরে লিখে দিয়েছে, একথা জানার পরও যদি স্বামী উক্ত কাগজের নিচে সাইন করে, তাহলে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার দেয়া হয়েছে বলে সাব্যস্ত হবে। সেই হিসেবে স্ত্রী যদি পরবর্তীতে নিজের উপর তালাক পতিত করে থাকে, তাহলে তালাক পতিত হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কাজির লেখা ঐ নিকাহনামা বিবাহের ইজাব কবুলের আগে লেখা হয়েছিলো নাকি বিবাহের ইজাব কবুলের পরে লেখা হয়েছিলো?

যদি বিবাহের ইজাব কবুলের আগে লেখা হয়,তাহলে এখানে স্ত্রী কোনোভাবেই তালাকের ক্ষমতা পাবেনা।

আর যদি এটি ইজাব কবুলের পরে লেখা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে স্বামী নিজে যদি লিখে অথবা কাজি সাহেব লিখলেও স্বামী  দস্তখতের সময় স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়ার বিষয় জেনে শুনেই নিচে স্বাক্ষর দেয়,তাহলে স্ত্রী তালাকের ক্ষমতা পাবে। 

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত নিকাহনামা যদি ইজাব কবুল এর পর লেখা হয়ে থাকে,আর স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাক দেয়ার ক্ষমতার বিষয়টি জেনে শুনে নিকাহনামার নিচে সাইন করে,আর স্ত্রী যদি নিজের নফসের উপর নিজে তালাক গ্রহন করে, সেক্ষেত্রে এক তালাকে বায়েন পতিত হয়েছে।

এক্ষেত্রে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিলেই তারা ঘর সংসার করতে পারবে। 

★উপরোক্ত বিবরণ মোতাবেক যদি তালাক না হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে তারা এখনো বৈধ স্ত্রী হিসেবেই আছেন, সুতরাং তারা নির্দ্বিধায় সংসার চালিয়ে যেতে পারেন। বিবাহ পড়িয়ে নেয়ার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...