স্বামীর পক্ষ থেকে যে তালাক দেয়া হয় সেটাকে তালাক বলা হয়।
আর স্ত্রীর পক্ষ থেকে কাযী সাহেব বা উনার স্থলাভিষিক্ত কারো নিকট তালাক চাওয়ার ভিত্তিতে মালের বিনিময়ে যে বিবাহ বিচ্ছেদ করা হয়, তাকে খোলা বলে।
,
যদি এক তালাকের উপর খোলা হয়ে থাকে,তাহলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।
যদি কোনো সংখ্যা লেখা না থাকে, তাহলেও এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।
এক্ষেত্রে ঐ স্ত্রীকে নিতে চাইলে,নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।
,
যদি তিন তালাকের উপর খোলা করে থাকে, তাহলে প্রথম স্বামীর জন্য ইদ্দত শেষ হয়ে গেলেও বিবাহ করা জায়েজ হবে না।
এক্ষেত্রে তিন তালাকই পতিত হবে।
,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ , أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «جَعَلَ الْخُلْعَ تَطْلِيقَةً بَائِنَةً»
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ খোলাকে এক তালাকে বাইন সাব্যস্ত করেছেন। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪০২৫, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৮৪৪৮, মুজামে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-২৩০, আসসুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৪৮৬৫}
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
إزَالَةُ مِلْكِ النِّكَاحِ بِبَدَلٍ بِلَفْظِ الْخُلْعِ كَذَا فِي فَتْحِ الْقَدِيرِ وَقَدْ يَصِحُّ بِلَفْظِ الْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ وَقَدْ يَكُونُ بِالْفَارِسِيَّةِ كَذَا فِي الظَّهِيرِيَّةِ.............. .......(وَحُكْمُهُ) وُقُوعُ الطَّلَاقِ الْبَائِنِ كَذَا فِي التَّبْيِينِ. وَتَصِحُّ نِيَّةُ الثَّلَاثِ فِيهِ. وَلَوْ تَزَوَّجَهَا مِرَارًا وَخَلَعَهَا فِي كُلِّ عَقْدٍ عِنْدَنَا لَا يَحِلُّ لَهُ نِكَاحُهَا بَعْدَ الثَّلَاثِ قَبْلَ الزَّوْجِ الثَّانِي كَذَا فِي شَرْحِ الْجَامِعِ الصَّغِيرِ لِقَاضِي خَانْ
খুলার সজ্ঞাঃ খুলা(বা তার সমার্থক) শব্দাবলী দ্বারা মালের বিনিময়ে বিবাহ বিচ্ছেদ করাকে খুলা বলে। খুলা 'ক্রয়-বিক্রয় ' শব্দ দ্বারাও সংগঠিত হতে পারবে।কখনো ফারসি শব্দাবলী দ্বারাও সংগঠিত হবে।(যাহিরিয়্যাহ) খুলার হুকুম হলঃ খুলা করার দ্বারা বায়িন তালাক পতিত হয়।সাধারণত এক তালাকে বাইনই পতিত হবে,তবে তাতে তিন তালাকের নিয়্যাত ও বিশুদ্ধ হবে। যদি কেউ কোনো মহিলাকে বারবার বিয়ে করে।এবং প্রত্যেকবারই বিয়ের করার পর খুলা করে নেয়।তাহলে ঐ স্বামীর জন্য উক্ত খুলাকৃত স্ত্রীকে তিনবার খুলার পর আর বিয়ে করতে পারবে না। হ্যা তিনবার খুলা করার পর যদি উক্ত স্ত্রী অন্য স্বামীকে গ্রহণ করে অতঃপর ঐ দ্বিতীয় স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়,তাহলে ঐ মহিলা জন্য দ্বিতীয়বার প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েয। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;১/৪৮৮)
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।
আরো জানুনঃ
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।
رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার তালাক গ্রহন করো।
স্ত্রী যদি বলে যে গ্রহন করলাম,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।