আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
40 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ


১) আমি হাজবেন্ডের কর্মস্থানে হাজবেন্ডের সাথে থাকি, ঈদের ছুটিতে বা কখনো বেড়াতে শ্বশুর বাড়ি যাওয়া হয়। শ্বশুর বাড়ি ৭৭ কিলোমিটার এর অনেক বেশি। শ্বশুর বাড়ি ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য গেলে আমি কি কসরের নামাজ পড়বো নাকি সম্পূর্ণ নামাজ পড়বো?


২) আমার মা ৭৭ কিলোমিটার এর বেশি দূরের এক আত্মীয়ের বাসায় যায় ১৫ দিনের কম সময়ের জন্য  যেখানে কসরের নামাজ পড়তে হতো, কিন্তু তার এসব সম্পর্কে বুঝ না থাকায় সম্পূর্ণ নামাজ পড়েছিলো। পরবর্তীতে যেদিন বাড়ি ফিরবে সেইদিন একজন কসরের নামাজ পড়তে বলায় কসর পড়ে। অন্য দিন গুলো যে সম্পূর্ণ নামাজ আদায় করেছে এজন্য এখন সেগুলো কি কাজা করতে হবে?
৩) হাসের ডিমে প্রচুর দাগ, ময়লা থাকে।সেগুলো কি হাসের মল? ছাই দিয়ে ঘষলেও উঠে না। ছাই দিয়ে ঘষার পর দাগ থাকলে ঐ অবস্থায় ঐ ডিম যে পাত্রে সিদ্ধ করা হবে পাত্র কি নাপাক হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (592,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সেক্ষেত্রে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ

‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]

হাদিস শরীফে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্থায়ী বাসা (ওয়াতনে আসলী) কোনটা?

আপনি যদি স্থায়ী ভাবে স্বামীর কর্মস্থানে স্বামী ও সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত করেন,শ্বশুর বাড়ি সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত না করেন, অর্থাৎ স্থায়ীভাবে স্বামীর কর্মস্থানে থাকার নিয়ত করেন,অনুরুপ ভাবে আপনার স্বামী যদি আপনাকে ও সন্তানাদি নিয়ে আজীবন নিজ কর্মস্থানেই থাকার নিয়ত করে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে গেলে সেখানে গিয়ে আপনি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে আপনি মুসাফির হিসেবে কসর নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি শ্বশুর বাড়িকেই স্থায়ী বাড়ি হিসেবে ধরে নেন,সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে সেখানে আপনি একদিন থাকলেও আপনি মুকিম,আপনি সেখানে পূর্ণ নামাজ আদায় করবেন।

(০২)
তিনি যদি সেই নামাজ গুলির ২য় রাকাতে বৈঠক করে থাকেন,সেক্ষেত্রে তার নামাজ গুলি আদায় হয়ে গিয়েছে।
কাজা আদায় করতে হবেনা।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এমতাবস্থায় ঐ ডিম যে পাত্রে সিদ্ধ করা হবে,সেই পাত্র নাপাক হয়ে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...