আইন পেশা সম্পর্কে পূর্বের অনেক ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,বর্তমান প্রচলিত আইনের সকল ধারা ইসলাম সম্মত নয়।আবার সবগুলো ইসলাম বিরোধীও নয়।প্রত্যেক জাতির নীতি আদর্শকে অটুট ও অক্ষুণ্ণ রাখতে সেই জাতির ঐতিহ্যগত আইনকে প্রয়োগ করা এবং বাস্তবায়ন করা নিতান্তই জরুরী।বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম। এবং এই দেশের সিংহভাগ মানুষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান।এ হিসেবে অন্যান্য জাতির প্রতি সহমর্মিতা রেখে নিরবচ্ছিন্ন ইসলামী আইন বাস্তবায়ন হওয়াই এ দেশের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। কুরআন-সুন্নাহ শুধু পড়ার জন্য নয়,বরং মানবতার কল্যাণ সাধনে প্রয়োজন মাফিক কুরআন সুন্নাহর আইনকে বাস্তবায়নও করতে হবে।কিন্তু আফসোসের সাথে বলতে হয় যে,আমাদের দেশ, বাংলাদেশে কুরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক আইন নেই।যেহেতু নেই তাই আমরা বলবো, কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইনকে কোনো উকিল কোর্টে পেশ করতে পারবেন না।এবং বিচারকও সেই আইনের ভিত্তিতে বিচার করতে পারবেন না।যেহেতু আইন পেশায় জড়িত না হলে ইসলাম এবং মুসলমানদেরকে আরো বিপর্যস্ত হতে হবে,তাই এ পেশাকে রিজেক্ট করার চেয়ে গ্রহণ করাই শ্রেয় হবে।তবে মিথ্যা, ঘুষ শরীয়া বিরোধী আইন থেকে বেঁচে থাকতে হবে।সর্বোপরি পাক্কা ঈমাদার ও দ্বীনদ্বার দের জন্য এ পেশায় এগিয়ে আসা নিরাপদ।যাদের নিজেদের ব্যাপারে গোনাহে জড়িত না হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে।
সুতরাং আমরা এ পরামর্শই দেবো যে,বক্ষমান পরিস্থিতে যাদের ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থের চিন্তা রয়েছে,শুধুমাত্র তাদের জন্যই এ পেশায় জড়িত হওয়ার রূখসত রয়েছে।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/2232
https://ifatwa.info/2041/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, গতানুগতিক বৃটিশ আইন ও বিচার পদ্ধতিকে ইসলামিকরণ করার চেষ্টা-প্রচেষ্টার নিয়তে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করা ও তাতে চাকুরী করার রুখসত রয়েছে।
উকিল পেশা সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-598
বিচারক সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-623
সরকারী বিধান সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন- 262
তবে কুরআন হাদীস বিরোধী কোনো কিছু বাস্তবায়ন করার কাজ হলে,বা এমন কোনো চাকুরী যেখানে গেলে কুরআন-হাদীসকে সঠিকভাবে অনুসরণ করা যায় না।তাহলে এমন চাকুরী কখনো বৈধ হবে না।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৭/৫০৪)
তবে চাকরি করতে গিয়ে যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল, দীন ও শরীয়ত বিরোধী কোন আদেশ জারি করা হয় তাহলে তা মানা জায়েজ নয়। তবে যদি এমন চাকরি হয়, যার কাজই হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং দীন ও শরীয়ত বিরোধী কাজ করা তাহলে এমন চাকরি করা বৈধ হবে না।
হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেছেন-
لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق
'সৃষ্টিকর্তা তথা আল্লাহ তা'আলার অবাধ্যাচরণে কোন মাখলুকের আনুগত্য নেই।'
কোন কোন বর্ণনায় এসেছে-
انما الطاعة في المعروف
'ভালো কাজের ক্ষেত্রেই কেবল আনুগত্য হবে।' (সহিহ বুখারী : ৭২৫৭, সহিহ মুসলিম : ১৮৪০, সুনানে তিরমিজি)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গতানুগতিক বৃটিশ আইন ও বিচার পদ্ধতিকে ইসলামিকরণ করার চেষ্টা-প্রচেষ্টার নিয়তে এবং ইসলাম দেশ ও মানবতার খেদমতের নিয়তে 'ল'(Law) সাবজেক্ট নিয়ে পড়া এবং এডভোকেট হিসেবে জব করা জায়েজ আছে।
তবে সর্বদা হারাম ও নাজায়েজ কাজ হতে বেঁচে থাকতে হবে।
নাজায়েজ কাজের আদেশ মানা যাবেনা,নাজায়েজ কোনো কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকা যাবেনা।
,
নামায সহ যাবতীয় ইবাদত আন্তরিকভাবে পালন করতে হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ «إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوٰى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِه فَهِجْرَتُهٗ إِلَى اللهِ وَرَسُولِه وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهٗ اِلٰى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا فَهِجْرَتُهٗ إِلٰى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ
‘উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিয়্যাতের উপরই কাজের ফলাফল নির্ভরশীল। মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী ফল পাবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সন্তুষ্টির জন্যই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার স্বার্থপ্রাপ্তির জন্য অথবা কোন মহিলাকে বিবাহের জন্য হিজরত করবে সে হিজরত তার নিয়্যাত অনুসারেই হবে যে নিয়্যাতে সে হিজরত করেছে।
বুখারী ১, মুসলিম ১৯০৭, তিরমিযী ১৬৩৭, নাসায়ী ৭৫, আবূ দাঊদ ২২০১, ইবনু মাজাহ্ ৪২২৭, আহমাদ ১৬৯, ৩০২।
★নারীদের জন্য আইন পেশায় জড়িত হওয়া নিতান্তই মুশকিল বিষয়।ইচ্ছা সত্বেও পর্দা পুশিদাকে রক্ষা করা সম্ভবপর হবে না। তাছাড়া কন্ঠের পর্দা তো কোনোক্রমেই সম্ভবও না।
তাই তাদের জন্য উক্ত পেশার বৈধতা নেই। নিতান্তই করতে হলে ইস্তেগফার পাঠ চালিয়ে যেতে হবে।
আরো জানুনঃ-