ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব,
https://ifatwa.info/3492/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শরীয়তের বিধান অনুযায়ী যাকাত আদায়ের খাত সর্বমোট ৮ টি।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
إِنَّمَا
الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا
وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ
اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ ۖ فَرِيضَةً مِنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
[٩:٦٠]
যাকাত হল কেবল ফকির, মিসকীন, যাকাত আদায় কারী ও যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদে হক
এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে-ঋণ গ্রস্তদের জন্য, আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং মুসাফিরদের জন্যে,
এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ
সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
{সূরা তাওবা-৬০}
মোট ৮ ধরণের ব্যক্তিকে যাকাত ও ফিতরা দেয়ার কথা কুরআনে বর্ণিত।
যথা-
১- গরীব। যার সম্পদ আছে কিন্তু নেসাব পরিমাণ মালের মালিক নয়।
২- মিসকিন। যার একদমই কোন সম্পদ নেই।
৩- ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য শরীয়ত নির্দিষ্ট
যাকাত আদায়কারী আমেল। এটা ইসলামী রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা নিযুক্ত হতে হবে। নিজে নিজে
মনে করে নিলে হবে না। {জাওয়াহিরুল
ফিক্বহ-৬/৬৯}
৪- নব মুসলিমদের ইসলামের প্রতি মোহাব্বত বাড়ানোর জন্য উৎসাহমূলক
যাকাত প্রদান।
এ বিধানটি রহিত হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে কোন ধনী নওমুসলিমকে যাকাত
প্রদান জায়েজ নয়। {হিদায়া-১/১৮৪,
মাআরিফুল কুরআন-৪/১৭১,
তাফসীরে মাযহারী-৪/২৩৫}
৫- দাসমুক্তির জন্য। যেহেতু বর্তমানে দাসপ্রথা নেই। তাই এ খাতটি
বাকি নেই।
৬- ঋণগ্রস্তের জন্য।
৭- ফী সাবিলিল্লাহ। তথা আল্লাহর রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য।
এখন প্রশ্ন হল আল্লাহর রাস্তায় কারা আছে? ফুক্বাহায়ে কেরাম বলেন এতে রয়েছেন-
জিহাদরত মুজাহিদরা। তাদের জিহাদের অস্ত্র ও পাথেয় ক্রয় করার
জন্য যাকাতের টাকা গ্রহণ করবে। হজ্বের সফরে থাকা দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। ইলমে দ্বীন
অর্জনকারী দারিদ্র ব্যক্তির জন্য। {আদ দুররুল মুখতার-৩৪৩, হিদায়া-১/১৮৫, রূহুল মাআনী-৬/৩১৩}
৮- সফর রত ব্যক্তিকে। যার টাকা পয়সা আছে বাড়িতে। কোন সফর অবস্থায়
অসহায়। তাকে যাকাতের টাকা দেয়া জায়েজ।
★★শরীয়তের বিধান হলো ইমাম মুয়াজ্জিনের বেতন হিসেবে যাকাতের
টাকা দেওয়া জায়েয নেই।
হ্যাঁ যদি কোনো ইমাম বা মুয়াজ্জিন গরিব হয়,যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত হয়,তাহলে আর্থিক সহযোগিতা স্বরুপ তাকে যাকাতের টাকা দেওয়া
যাবে। (কিতাবুন
নাওয়াজেল ৭/১১৬)
★হ্যাঁ যদি ইমামের বেতন আলাদা ফান্ড থেকে প্রয়োজন মোতাবেক
দেওয়া হয়,এবং ইমাম যদি যাকাত
গ্রহণের উপযুক্ত হয়,তাহলে
কখনো কখনো যাকাতের টাকা দিয়ে ইমাম কে সহযোগিতা করা যাবে।
তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে যাকাতের টাকা
যেনো কোনোভাবেই বেতনের অংশ হিসেবে না দেওয়া হয়।
(ফাতাওয়ায়ে উসমানী ২/১৮৩)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি
আপনি যাকাত গ্রহণের হকদার হয়ে থাকেন এবং আপনাকে সেই বিশ হাজার টাকার
মালিক বানিয়ে দেওয়া হয় তাহলে আপনি আপনার চিকিৎসা এবং ঋন পরিশোধ
পাশাপাশি ভিন্ন খাতেও প্রয়োজনে তা ব্যবহার করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। কারণ, আপনি উক্ত
টাকার মালিক হিসেবে তা ব্যবহারে আপনার স্বাধিনতা আছে।