ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।
বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/7334/ নং
ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
এহতেকার বা সিন্ডিকেট/গোদামজাত চার মাযহাব মতে হারাম।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﺇِﻥَّ
ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻛَﻔَﺮُﻭﺍ ﻭَﻳَﺼُﺪُّﻭﻥَ ﻋَﻦ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ﺍﻟَّﺬِﻱ
ﺟَﻌَﻠْﻨَﺎﻩُ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﺳَﻮَﺍﺀ ﺍﻟْﻌَﺎﻛِﻒُ ﻓِﻴﻪِ ﻭَﺍﻟْﺒَﺎﺩِ ﻭَﻣَﻦ ﻳُﺮِﺩْ ﻓِﻴﻪِ ﺑِﺈِﻟْﺤَﺎﺩٍ
ﺑِﻈُﻠْﻢٍ ﻧُﺬِﻗْﻪُ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏٍ ﺃَﻟِﻴﻢٍ
যারা কুফর করে ও আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে এবং সেই মসজিদে
হারাম থেকে বাধা দেয়, যাকে আমি প্রস্তুত করেছি স্থানীয় ও বহিরাগত
সকল মানুষের জন্যে সমভাবে এবং যে মসজিদে হারামে অন্যায়ভাবে কোন ধর্মদ্রোহী কাজ করার
ইচ্ছা করে, আমি তাদেরকে যন্ত্রানাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করাব। সূরা
হজ্ব-২৫
,
উক্ত আয়াতে ইলহাদের ব্যখায় উলামায়ে কেরাম নিম্নোক্ত হাদীস পেশ
করে বলেন যে ইলহাদ তখনই হবে যখন এহতেকার পাওয়া যাবে।
হযরত ইয়া'লা ইবনে উমাইয়্যা
থেকে বর্ণিত,
عَنْ
يَعْلَى بْنِ أُمَيَّةَ أَنَّ الرَّسُول صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَال:
احْتِكَارُ الطَّعَامِ فِي الْحَرَمِ إِلْحَادٌ فِيهِ. عون المعبود رقم الحديث
٢٠٢٠
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- হারাম শরীফে খাদ্যকে গোদামজাত করণ ধর্মদ্রোহের
শামিল।
,
হযরত উমর রাযি থেকে বর্ণিত
ﻋﻦ
ﻋﻤﺮ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ، ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - ﻗﺎﻝ : " ﺍﻟﺠﺎﻟﺐ ﻣﺮﺯﻭﻕ
ﻭﺍﻟﻤﺤﺘﻜﺮ ﻣﻠﻌﻮﻥ " . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﺑﻦ ﻣﺎﺟﻪ ، ﻭﺍﻟﺪﺍﺭﻣﻲ
ব্যবসায়ী রিযিকপ্রাপ্ত এবং সিন্ডিকেটকারী অভিশপ্ত। মিশকাত-২৮৯৩
,
হযরত মা'মার ইবনে আব্দুল্লাহ
রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ
مَعْمَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ قَال: قَال رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنِ احْتَكَرَ فَهُوَ خَاطِئٌ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন- যে মূল্যবৃদ্ধির জন্য গোদামজাত করল সে
গোনাহগার। সহীহ মুসলিম-১৬০৫
,
এহতেকার কাকে বলে? সে
সম্পর্কে সম্পর্কে চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব
বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ
"আল-মাওসু'আতুল
ফেক্বহিয়্যায়(২/৯৪) " বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।নিম্নে তার চুম্বকাংশ তুলে ধরছি....
أَمَّا
فِي الشَّرْعِ فَقَدْ عَرَّفَهُ الْحَنَفِيَّةُ بِأَنَّهُ: اشْتِرَاءُ طَعَامٍ
وَنَحْوِهِ وَحَبْسُهُ إِلَى الْغَلاَءِ.
পরিভাষায় এহতেকার বলা হয়, খাদ্য বা খাদ্য জাতীয় বস্তুকে খরিদ করে মূল্য বৃদ্ধি পর্যন্ত মওজুদ রাখা।
,
কোন কোন জিনিষে এহতেকার হবে সে সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত পাওয়া
যায়, ইমাম মালিক ও আবু ইউসুফ রাহ বলেন,
الثَّانِي:
أَنَّ الاِحْتِكَارَ يَجْرِي فِي كُل مَا يَحْتَاجُهُ النَّاسُ، وَيَتَضَرَّرُونَ
مِنْ حَبْسِهِ، مِنْ قُوتٍ وَإِدَامٍ وَلِبَاسٍ وَغَيْرِ ذَلِكَ. وَهَذَا مَا
ذَهَبَ إِلَيْهِ الْمَالِكِيَّةُ وَأَبُو يُوسُفَ مِنَ الْحَنَفِيَّةِ
ভাবার্থ- প্রত্যেক ঐ জিনিষ যা সিন্ডিকেট করে রাখলে জনসাধারণ
ভুগান্তিতে পড়বে। চায় তা খাদ্য হোক বা পোষাক হোক বা অন্য কিছু হোক।
,
এহতেকার হারাম হওয়ার হেকমত হল,
الْحِكْمَةُ
فِي تَحْرِيمِ الاِحْتِكَارِ:
٦ - يَتَّفِقُ الْفُقَهَاءُ
عَلَى أَنَّ الْحِكْمَةَ فِي تَحْرِيمِ الاِحْتِكَارِ رَفْعُ الضَّرَرِ عَنْ
عَامَّةِ النَّاسِ. وَلِذَا فَقَدْ أَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّهُ لَوِ
احْتَكَرَ إِنْسَانٌ شَيْئًا، وَاضْطُرَّ النَّاسُ إِلَيْهِ،وَلَمْ يَجِدُوا
غَيْرَهُ، أُجْبِرَ عَلَى بَيْعِهِ - عَلَى مَا سَيَأْتِي بَيَانُهُ - دَفْعًا
لِلضَّرَرِ عَنِ النَّاسِ، وَتَعَاوُنًا عَلَى حُصُول الْعَيْشِ (١) . وَهَذَا مَا
يُسْتَفَادُ مِمَّا نُقِل عَنْ مَالِكٍ مِنْ أَنَّ رَفْعَ الضَّرَرِ عَنِ النَّاسِ
هُوَ الْقَصْدُ مِنَ التَّحْرِيمِ، إِذْ قَال: إِنْ كَانَ ذَلِكَ لاَ يَضُرُّ
بِالسُّوقِ فَلاَ بَأْسَ (٢) وَهُوَ مَا يُفِيدُهُ كَلاَمُ الْجَمِيعِ (٣) .
ফুকাহায়ে কিরাম একমত যে,এহতেকার
হারাম হওয়ার হেকমত হল, জনসাধারণকে ভুগান্তি থেকে রক্ষা করা। এজন্য
ফুকাহায়ে কিরাম একমত যে,যদি কোনো মানুষ কোনো জিনিষ গোদামজাত করে
নেয়, আর লোকজন সে জিনিষের প্রতি মুখাপেক্ষী থাকে,তারা অন্য কারো থেকে ক্রয় করতে পারে না, তাহলে ঐ ব্যক্তিকে
সাধারণ বাজার মূল্যর উপর বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে।জনসাধারণকে ভুগান্তি থেকে বাঁচাতে
এবং সাধারণ জীবনাচরণ ফিরিয়ে আনতে।
,
এটা ইমাম মালিক রাহ এর উক্তি থেকে স্পষ্টই বু্ঝা যায় যে, তিনি বলেছে 'এহতেকার হারাম হওয়ার মূল উদ্দেশ্যই
হল জনসাধারণ কে কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়া। কিন্তু যদি এহতেকারে ধরুণ জনসাধারণের কষ্ট না
হয়, তাহলে তাতে কোনো সমস্যা নাই। সমস্ত ফুকাহায়ে কেরামদের মূল
উদ্দেশ্যই হল জনসাধারণকে মুক্তি দেয়া।
,
এহতেকারে শাখাপ্রশাখা গত কিছু আলোচনা,
وَقَدْ
صَوَّرَهُ ابْنُ الْقَيِّمِ بِقَوْلِهِ: أَنْ يَلْزَمَ النَّاسَ أَلاَّ يَبِيعَ
الطَّعَامَ أَوْ غَيْرَهُ مِنَ الأْصْنَافِ إِلاَّ نَاسٌ مَعْرُوفُونَ، فَلاَ
تُبَاعُ تِلْكَ السِّلَعُ إِلاَّ لَهُمْ، ثُمَّ يَبِيعُونَهَا هُمْ بِمَا
يُرِيدُونَ. فَهَذَا مِنَ الْبَغْيِ فِي الأْرْضِ وَالْفَسَادِ بِلاَ تَرَدُّدٍ
فِي ذَلِكَ عِنْدَ أَحَدٍ مِنَ الْعُلَمَاءِ. وَيَجِبُ التَّسْعِيرُ عَلَيْهِمْ،
وَأَنْ يَبِيعُوا وَيَشْتَرُوا بِقِيمَةِ الْمِثْل مَنْعًا لِلظُّلْمِ. وَكَذَلِكَ
إِيجَارُ الْحَانُوتِ عَلَى الطَّرِيقِ أَوْ فِي الْقَرْيَةِ بِأُجْرَةٍ
مُعَيَّنَةٍ، عَلَى أَلاَّ يَبِيعَ أَحَدٌ غَيْرُهُ، نَوْعٌ مِنْ أَخْذِ أَمْوَال
النَّاسِ قَهْرًا وَأَكْلِهَا بِالْبَاطِل، وَهُوَ حَرَامٌ عَلَى الْمُؤَجِّرِ
وَالْمُسْتَأْجِرِ-
ইমাম ইবনুল কায়্যিম রাহ, এহতেকার
এর শাখাপ্রশাখাগত আলোচনা করতে যেয়ে তার একটি পদ্ধতি এরূপ বর্ণনা করেন যে,মানুষের উপর অত্যাবশ্যকীয় করে দেয়া যে,উক্ত খাদ্য বা
এজাতীয় অন্যান্য জিনিষ নির্দিষ্ট সংখ্যক কিছু লোক (ডিলার) ছাড়া অন্য কেউ বিক্রি করতে
পারবে না। সুতরাং উক্ত জিনিষকে শুধুমাত্র ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গের (ডিলারদের) নিকটই বিক্রি
করা হয়। আর তারা যেভাবে ইচ্ছা মূল্যনির্ণয় পূর্বক বিক্রি করে। এটা নিঃসন্দেহে যমিনে
বিশৃঙ্খলা ও ফাসাদ সৃষ্টির অন্যতম কারণ। তাদেরকে সহজ সাধারণ বাজারমূল্য নির্ধারণ ও মুক্তভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য বাধ্য
করা মুসলমানদের উপর ওয়াজিব।
,
ঠিক তেমনিভাবে রাস্তার ধারে বা গ্রামে নির্দিষ্ট ভাড়ার বিনিময়ে
কোনো দোকান ঐ শর্তে ভাড়া দেয়া ও নেয়া যে,সে ব্যতীত
আর কেউ বিক্রয় করতে পারবে না। এটা মানুষের মালকে অন্যায়ভাবে জোড়করে করে আত্মসাৎ করা
ও বাতিল ত্বরিকায় উপার্জন করার নামান্তর। এক্ষেত্রে দোকান ভাড়ায় প্রদানকারী ও ভাড়াটি
উভয় ই গোনাহগার হবেন। আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ 2/94
,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
,
১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ জিনিসগুলো স্টক করার কারণে যদি বাজারে
কোনো প্রভাব পড়ে এবং মূল্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই গোদামজাত করা হয় তাহলে তা নাজায়েয ও
হারাম হবে। তবে যদি কারো গোদামজাত করণের দ্বারা বাজারে তেমন কোনো প্রভাব না পড়ে, তাহলে উনি এমন কোনো মালকে গোদামজাত করতে পারবেন এবং যতদিন ইচ্ছা
করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।
,
২. আলহামদুলিল্লাহ, আপনার স্বামীর দ্বীনদারিত্ব বেশ প্রশংসনীয়।
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি আপনার বাবাকে আরো বুঝাবেন। আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী
বেশী দুআ করবেন।
৩. আপনার বাবার বাড়ী গিয়ে দাওয়াত খাওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত
জানুন - https://ifatwa.info/44340/