আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
22 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
ঘটনাটা বিস্তারিতভাবে বলছি। ঘটনাটি ঘটেছিল 2021 সালে ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে। বিভিন্ন কারণে ঝামেলার জন্য আমাকে চারবার তালাক শব্দটা বলেছিল।পরে এসে তিনি আমার কাছে মাফ চেয়েছেন। তিনি বলতে চাচ্ছেন যে তিনি তখন এমন অবস্থায় ছিলেন যে তার কোন হুশ ছিল না এবং তিনি তার কিছুক্ষণ পরে বলতে পারেনি যে তিনি কয়বার শব্দটি উচ্চারণ করেছেন। এরপরে আমি এই সম্পর্কিত মাসালা জানার জন্য কুরআনের আয়াত দেখার চেষ্টা করেছি। আমি এক জায়গায় দেখেছি এমন লেখা ছিল যে হায়েজ চলাকালীন কালীন কোন স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক বলে তাহলে সে তালাক হয় না। আমার স্বামী যখন তালাক শব্দটা বলেছিল তখন আমি এমন অবস্থায় ছিলাম যে কিছুক্ষণ পরেই গোসল করে আমি নামাজ শুরু করতাম। এরপরও আমি অনেক জায়গায় এই মাসালা জানার চেষ্টা করেছি যেখানে আমি ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই ধরনের ফয়সালাই  পেয়েছি। তারপর আমি একটি মাদ্রাসায়  মাসেলার জন্য একটা চিঠি লিখেছিলাম যেখানে উত্তরটা নেতিবাচক ছিল।কিন্তু আমার স্বামী আরয়াবাদ মাদ্রাসা একটা চিঠি লিখেছিলেন যেখানে উত্তরটা ইতিবাচক ছিল এবং ওখানে লেখা ছিল এমনটা যে রাগ এর একটা প্রকার আছে যেখানে মানুষ বেহুশ হয়ে যায় রাগের কারণে। তখন বললে নাকি তালাক হয় না। মাসালের উপর ভিত্তি করে আমার স্বামী বলতে চাচ্ছিলেন যে আমাদের তালাক হয়নি। তো তখন আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না আর এই কথাটা আমি কাউকে জানাতে পারছিলাম না তখন আমি আল্লাহকে বলেছিলাম যে, মানে যখনই ঘটনাটা ঘটেছে তখন ওই সময় আমরা আসলে একটা বাচ্চার জন্য চেষ্টা করছিলাম। আমি আল্লাহকে বলেছিলাম যে আল্লাহ যদি তুমি আমাদের সম্পর্কটা হারাম করো কর তাহলে তুমি আমার গর্ভে কোন সন্তান দিও না আর যদি হালাল করো তাহলে সন্তান দিও। এই মাসেই আমি গর্ভধারণ করেছিলাম এবং আমি ভেবে নিয়েছিলাম যে আল্লাহ আমাদের সম্পর্কটা হয়তো হালাল করেছে। এরপরও আমার স্বামী অনেক সময়ই আমার সঙ্গে রাগান্বিত হয়েছেন। একবার তো এটাও বলে ফেলেছিলেন যে আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে তোমাকে তালাক দিচ্ছি এই কথাটা বলেছিলেন। আমি অলরেডি গর্ভধারণ করেছিলাম আর তার রাগানোর অবস্থা ভেবে আমি স্বাভাবিকভাবেই সংসার করেছিলাম। এবং আজকে এসে ২০২২ ২৩ ২৪ পার হয়ে গিয়েছে।এমন ঘটনাও  ঘটেছে যখন আমার স্বামী আমার গায়ে হাত, তুলেছে আমাকে অপমান করেছে, গালি দিয়েছে। অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমি স্বামী হিসেবে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন আল্লাহর পর যদি কাউকে সিজদা করার হুকুম থাকে তাহলে স্বামীকে সেজদা করতে বলতেন তিনি। বিভিন্ন হাদিস কালাম দেখিয়া এবং সংসার ভাঙা নাকি মসজিদ ভাঙার সমান মতামত শুনে আমি আমার স্বামীর অত্যাচার ধৈর্য ধারণ করেছি, ক্ষমা করেছি এবং আমার স্বামী যে  শুধু অত্যাচার ই করতেন তা না তিনি ভাল ব্যবহারও করতেন। যখনই রেগে যেতেন তখনই এরকম খুবই দুর্ব্যবহার করতেন এবং এক দুই ঘন্টা পর কিংবা বড়জোর ১-২ দিন পরই তিনি আবার আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতেন এবং ভালো  ব্যবহার করা শুরু করে দিতেন। কিন্তু এই কয়েক বছরে আমার সাথে এমন ঘটনাও ঘটেছে যেখানে আমার মনে হয়েছে যে ঐদিনের সিদ্ধান্তটা আমার ভুল ছিল। আল্লাহ হয়তো আমার ওপর সন্তুষ্ট নন। আজকে এসে আমি আসলে মাসালাটা সঠিকভাবে জানতে চাই এবং যদি মাসালাটা নেতিবাচক হয় তাহলে আমার এবং আমার মেয়ের ফায়সালা  কি হবে সেটাও জানতে চাই। কারণ আমার মেয়ের বয়স এখন দেড় বছর। ও ওর দাদা দাদুর কাছে থাকতেছে মানে আমাদের জয়েন্ট ফ্যামিলি। সেখানে আমরা থাকছি। ওর বাবা এখন বিদেশে চলে গিয়েছে। যদি নেতিবাচক ফয়সালা হয়তাহলে মেয়ের এবং আমার ভরণপোষণের দায়িত্ব এবং আমাদের উপায় কি হবে তখন?
আমি এখন এমন একটি অবস্থায় আছি যেখানে আমি চতুর্থ বর্ষে পড়ছি।এবছর শেষ হলে আমার অনার্স শেষ হবে। আমার থাকার জন্য মানে আমার পড়াশোনা শেষ করার জন্য আমার স্বামীর আমার শ্বশুর বাড়ির আশেপাশে থাকাটা জরুরী। আমার ইউনিভার্সিটি এখানে।  এবং আমি কিছু ছাত্র-ছাত্রী পড়াই তাদের বাসায় এখানে। তাই আমার এখানে থাকাটা জরুরী কিন্তু এখানে আমার শ্বশুরবাড়ি ছাড়া আমার বাবা মা এখানে থাকেন না। আর আলাদা করে থাকতে গেলেও খরচের একটা ব্যাপার আছে।এক্ষেত্রে  আমার করণীয় কি হবে?

এখানে উল্লেখ্য যে বিয়ের সময় আমার পাঁচ লক্ষ দেন মোহরের দেনমোহরের ক্ষেত্রে গহনা বাবদ এক লক্ষ ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছিলেন। পরে বাকি টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল কিন্তু তিনি পরিশোধ করেননি। এবং তিনি যে  গহনা দিয়েছেন সেই গহনা বিক্রি করে তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন। এবং এর উপরও তিনি আমার বাবার থেকে বিভিন্ন সময়  একটু কম বেশি করে আজ অব্দি 2 লক্ষ টাকার ওপরে ধার নিয়েছেন যেটা শোধ করার কথা দিয়েছিলেন কিন্তু এখনো শোধ করেননি। এ ক্ষেত্রে আমি তার কাছে কতটুকু পাওনা থাকব এবং
আমার ভরণপোষণের দিক থেকে কতটুকু পাওনা থাকব?
আমার একটি মেয়ে আছে যার বয়স এখন দেড় বছর। আমি আমার স্বামীর সাথে প্রায় চার বছরের উপরে যাবত সংসার করছি। আমি নিশ্চয়ই চাইবো না যে তার সাথে আমার বিচ্ছেদ হোক। কিন্তু যদি আল্লাহ এটা চান তাহলে অবশ্যই আমি আল্লাহর আদেশ পালন করব। এক্ষেত্রে আমি জানতে চাচ্ছি যে আল্লাহর বিধানে কোথাও যদি এমনটা থেকে থাকে যে তার সাথে আমার সংসার করা চলবে হলেও তাহলে আমি সেই উপায়টা জানতে চাচ্ছি আর যদি কোথাও এমনটা বিধান না থাকে যে কিছুতেই তার সাথে আমার সংসার চলবে না তাহলে সেটাও আমাকে জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (608,280 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
বলেনঃ রাগান্বিত অবস্থায় তালাক তিন প্রকারঃ
(১)রাগের প্রথমিক কিছু চিন্থ প্রকাশ পাবে,তবে তার জ্ঞানে কোনো পরিবর্তন আসবে না,এবং সে যা কিছু বলবে তা বুঝতে পারবে।এমতাবস্থায় তলাক পতিত হবে।এতে কোনো সন্দেহ নেই।

(২)চুরান্ত পর্যায়ে রাগান্বিত হওয়া অর্থ্যাৎ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলা।সে যা বলছে কিছুই বুঝতে পারছেনা।এবং যা কিছু এখন তার মুখ থেকে বের হচ্ছে,তা বলারও আপাতত কোনো ইচ্ছা না।এমতাবস্থায় তালাত পতিত হবে না।এবং এতে কোনো সন্দেহ নেই।

(৩)উক্ত দু-অবস্থার মধ্যবর্তি অবস্থা,
মূলত এ তৃতীয় অবস্থার হুকুম নিয়েই ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে।
ইবনুল কাইয়্যিম রাহ, এর মতে তালাক পতিত না হওয়াটাই যুক্তিসংগত।তবে "গায়তুল হাম্বলীয়্যাহ" নামক কিতাবে হাম্বলী মাযহাবের ফাতাওয়া তার উল্টো বর্ণিত রয়েছে।তথায় তালাক পতিত হওয়ার কথাই উল্লেখ রয়েছে।এবং এ অভিমতটাই আমাদের মতে কুরআন-সুন্নাহর সাথে সবচেয়ে বেশী সামঞ্জস্যশীল।(রদ্দুল মহতার,খঃ৩-পৃঃ২৪৪)
(ইমদাদুল ফাতাওয়া -২/৪০৫,
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১২/৩০৫)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/182

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার স্বামীর যদি ২য় পর্যায়ের রাগ হয়, এবং আপনার স্বামী কসম করে সেটা বলতে পারে, তাহলে আপনাদের মধ্যকার কোনো তালাক হবে না, নতুবা তালাক হবে।এবং তিন তালাকই পতিত হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...