আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।

কোন ব্যাক্তি ২য় ও ৩য় বিয়ে করে ১ম স্ত্রী ও ১ম স্ত্রীর ছেলে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। ১ম স্ত্রী ও ১ম স্ত্রীর  সন্তানের খোজখবর নেয় নি। ভরনপোষনও দেয়নি প্রায় ৯ বছর।  এখন আমার প্রশ্ন

১. বাবার রিন ছেলের শোধ দেওয়ার ব্যাপারে। কারো বাবা যদি আরো দুইটা বিয়ে করে তাদের নিয়ে থাকে।প্রথম বাউকে কোন খরচ দেয় না,তালাক ও দেয় না। আবার প্রথম বউ এর ছেলেকেও পড়াশোনার খরচ দেয় নাই ঠিকমতো।নানীবাড়ি থেকে খরচ দিয়েছে।  প্রথম স্ত্রী সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। অন্য বউদের নিয়ে থাকে।এমতবস্থায়  বাবা ধার দেনায় জড়িয়ে গেলে ওই বাবার রিন শোধ দেওয়া কি প্রথম স্ত্রীর ছেলের দায়িত্ব?? সেই ছেলেরও এতো টাকা নেই,শোধ দেওয়ার মতো।
২.বাবা ২য় স্ত্রীর ছেলে সন্তান জন্মানোর আগে ১ম স্ত্রীর ছেলেকে একটা বাড়ি লিখে দিলে, আর ২য় স্ত্রী কে আরেকটা বাড়ি দিবে এমন। পরবর্তীতে ২য় স্ত্রী কে নিয়ে যে বাড়িতে বসবাস করত তা বিক্রি করে দিয়ে, পরে১ম পক্ষের ছেলের থেকে লিখে দেওয়া বাড়ি ফেরত চায় এক্ষেত্রে করনীয় কি?  উল্লেক্ষ্য ওই বাড়ি করতে ১ম স্ত্রী অনেক অবদান আছে। আর ১ম স্ত্রী ওই বাড়িতে থাকতে চায়। কিন্তু অন্য স্ত্রী সহ স্বামীকে মেনে নিবে না।।স্বামী বাড়ি ফেরত চায় নাহলে ১ম স্ত্রী অন্য সব বউদের মেনে নিয়ে থাকলে থাকতে দিবে নাহলে ওই বাড়িতে ১ম স্ত্রী সন্তানকে  থাকতে দেয় না।  কিন্তু বাড়ির দলিল ১ম পক্ষের ছেলের নামে। ছেলের কি বাবাকে বাড়ি ফেরত দেওয়া উচিত?
৩. বাবার অন্য পক্ষের স্ত্রী সন্তানদের ভরন পোষন বা খরচ দেওয়া কি ১ম পক্ষের ছেলের উপর ওয়াজিব?  ছেলে নিজেও বিয়ে করেছে ও তার মার দেখাশোনা করে।
৪. ওই ব্যাক্তি প্রথম বউকে আগে থেকেই মারধর করত আরেকটা বিয়ের অনুমতি দেয় না বলে। এবং জবাই করে ফেলার হুমকি দেয়। মাঝে বউ বাবার বাড়ি আসলে অনুমতি না নিয়েই ২য় বিয়ে করে।২য় বিয়ে করার পরপরই একবার প্রথম বউএর সামনে তালাক দেয় ২য় বউকে। তখন প্রথম বউ মেনে নেয়। এরপর আবার ২য় বউ নিয়ে থাকা শুরু করে। তখন প্রথম বউ বাবার বাড়ি চলে আসে। এরপর ৯ বছর ১ম  বউ, ছেলের খোজ নেয় নি।  কোন খরচ দেয় নি। এরমাঝে ৩য় বিয়ে করে। এখন পরের দুই বউ সহ প্রথম স্ত্রীকেও নিতে চায়।  প্রথম স্ত্রী পরের দুই স্ত্রী বহাল থাকা অবস্থায় স্বামীকে মেনে নিতে চায় না। এজন্য কি গুনাহগার হবে?? পরের বউ দের তালাক দিলে যাবে। ১ম স্ত্রী স্বামীর বাড়ি যেতে চায় , ১ম স্ত্রীর ছেলের নামে যে বাড়ি কিন্তু অন্য স্ত্রী থাকা অবস্থায় স্বামীকে  মেনে নিবে না। এমন অবস্থায় কি করা উচিত?  গুনাহ থেকে বাচতে

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
 
 يُوصِيكُمُ اللّهُ فِي أَوْلاَدِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الأُنثَيَيْنِ فَإِن كُنَّ نِسَاء فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ وَإِن كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ وَلأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُ وَلَدٌ فَإِن لَّمْ يَكُن لَّهُ وَلَدٌ وَوَرِثَهُ أَبَوَاهُ فَلأُمِّهِ الثُّلُثُ فَإِن كَانَ لَهُ إِخْوَةٌ فَلأُمِّهِ السُّدُسُ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِي بِهَا أَوْ دَيْنٍ آبَآؤُكُمْ وَأَبناؤُكُمْ لاَ تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعاً فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ إِنَّ اللّهَ كَانَ عَلِيما حَكِيمًا
 
আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু' এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ। (সূরা নিসা-১১)       
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
শরীয়তের বিধান হলো মাইয়্যিতের কাফন দাফনের পর তার সমূদয় সম্পত্তি হতে আগে তার ঋন পরিশোধ করতে হবে।

তারপর সম্পদ অবশিষ্ট থাকলে সেক্ষেত্রে তিন ভাগের এক ভাগ সম্পদ দিয়ে তার অসিয়ত পূরন করবে,তারপর তার সম্পদ ওয়ারিশদের মাঝে শরীয়তের নীতিমালা অনুসারে বন্টন করে দিবে।

মাইয়্যিতের সম্পদ হতে কাফন দাফন করার পর তার সমূদয় হতে তার ঋন শোধ করতে হবে।
তারপর তিনি ওছিয়ত করে গেলে তার তিন ভাগের এক ভাগ সম্পদ হতে অছিয়ত আদায় করতে হবে।
তারপর ওয়ারিশদের মাঝে সম্পদ বন্টন হবে।

যদি মাইয়্যিতের সমস্ত সম্পদ হতে ঋন শোধ করতে গিয়ে তার সমস্ত সম্পদ শেষ হয়ে যায়,তবুও তার সম্পদ ওয়ারিশগন নিতে পারবেননা।
এর দ্বারা কাফন দাফনের পর প্রথমত ঋন শোধ করতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّهُ قَالَ إِنَّكُمْ تَقْرَءُونَ هَذِهِ الآيَةَ : (مِنْ بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ) وَأَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَضَى بِالدَّيْنِ قَبْلَ الْوَصِيَّةِ وَإِنَّ أَعْيَانَ بَنِي الأُمِّ يَتَوَارَثُونَ دُونَ بَنِي الْعَلاَّتِ الرَّجُلُ يَرِثُ أَخَاهُ لأَبِيهِ وَأُمِّهِ دُونَ أَخِيهِ لأَبِيهِ . حَدَّثَنَا بُنْدَارٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، أَخْبَرَنَا زَكَرِيَّا بْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ عَلِيٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ .

আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, তোমরা এ আয়াত পাঠ করে থাকঃ  “যা কিছু তোমরা ওয়াসিয়াত কর বা যে ঋণ রয়েছে তা আদায় করার পর........" (সূরাঃ  আন-নিসা-১২)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াসিয়াত পূরন করার পূর্বে ঋণ আদায়ের ফায়সালা দিয়েছেন। বৈমাত্রেয় বা বৈপিত্রেয় ভাইদের আগে সহোদর ভাই উত্তরাধিকারী হবে (যদি মৃত ব্যক্তির উভয় ধরনের ভাই থাকে)। সহোদর ভাই উত্তরাধিকারী হবে, বৈমাত্রেয় ভাইয়ের পূর্বে।

(হাসান, ইবনু মা-জাহ (২৭১৫) তিরমিজি ২০৯৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির ঋন পরিশোধ করা প্রথম স্ত্রীর ছেলের দায়িত্ব নয়।

হ্যাঁ যদি সেই ব্যাক্তি মারা যান,সেক্ষেত্রে তিনি যদি ঋণ পরিশোধ না করেই মারা যান, তার সম্পদ হতে প্রথমে কাফন দাফনের ব্যবস্থা করতে হবে,তারপর তার রেখে যাওয়া সম্পদ হতে তার ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
এর আগে তাহা ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন করে নেয়া জায়েজ হবেনা।

তার সম্পদ হতে যদি ঋণ সম্পূর্ণ  পরিশোধ না হয়,তাহলে তার সন্তানেরা সকলে মিলে নিজেরা বাকিটুকু আদায় করে দিতে পারেন,এতে বাবার প্রতি ইহসান ও দয়া হবে।

তবে এটি কোনোক্রমেই কাহারো উপর আবশ্যক নয়। তারা দয়ামায়া করে বাবার ঋণ পরিশোধ করতে চাইলে করতে পারে,কাহারো উপর আবশ্যক নয়। 

(০২)
ওই বাড়ির মালিক এখন প্রথম স্ত্রীর ছেলে। এক্ষেত্রে সেই বাড়ির সম্পূর্ণ মালিকানা প্রথম স্ত্রীর ছেলের।

সেই ছেলে এই বাড়ি তার বাবাকে দিতে বাধ্য নন।

এক্ষেত্রে তার বাবা তার থেকে সে বাড়ি নিতে চাইলে সে উক্ত বাড়ি তার বাবাকে দিয়ে দিবে কিনা এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।

সে চাইলে তাহা দিতেও পারে চাইলে নাও দিতে পারে।

শরীয়তে এক্ষেত্রে তাকে কোন ভাবে বাধ্য করবে না।

এটা তার ব্যক্তিগত মালিকানা।


(০৩)
না,ওয়াজিব নয়।

(০৪)
স্বামী যদি তার তিনজন স্ত্রীর মাঝেই সমতা বজায় রেখে চলতে পারে, প্রত্যেকের জন্য আলাদা রুমের ব্যবস্থা করে দিতে পারে, সকলের জন্য সমান ভাবে বাজার করে দেয়, এবং সমতা বজায় রেখে পুরো মাসের ১০ রাত ১০ রাত ১০ রাত করে ৩ জন স্ত্রীর প্রত্যেক স্ত্রীর কাছে সমতা বজায় রেখে রাত্রী যাপন করে, সেক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রী স্বামীর কাছে না গেলে প্রথম স্ত্রীর গুনাহ হবে।

আর যদি স্বামী এসব হক আদায় না করে,১ম স্ত্রীর ভরনপোষণ না দেয় মারধর করে, সেক্ষেত্রে প্রথম স্ত্রী স্বামীর কাছে না গেলে গুনাহ হবে না।

উল্লেখ্য স্বামীর কাছে না গেলে গুনাহে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকলে অথবা স্বামী যদি প্রথম স্ত্রীর ভরণপোষণ দেয়,উভয় ছুরতেই এমতাবস্থায় স্বামীর কাছে যাওয়া আবশ্যক,নতুবা গুনাহ হবে।

একাধিক বিবাহের শর্ত সমূহ জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।ওস্তাদ এখন ১ম স্ত্রীর ছেলেকে যে বাড়ি বাবা লিখে দিয়েছে সেই বাড়ি বিক্রি করে বাবা জীবিত থাকা অবস্থায়  তার রিন শোধ দিতে হবে?  
by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।ওস্তাদ এখন ১ম স্ত্রীর ছেলেকে যে বাড়ি বাবা লিখে দিয়েছে সেই বাড়ি বিক্রি করে বাবা জীবিত থাকা অবস্থায়  তার রিন শোধ দিতে হবে?  

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...