আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
in পবিত্রতা (Purity) by (5 points)

আমার হায়েজ জীবনের প্রথম থেকেই অনিয়মিত। বয়স এখন ২৩।বিয়ের ৬ বছর চলছে সন্তান হয় না।তো Pcos থাকার কারণে পিরিয়ড আগে অনিয়মিত ছিল।২/৩ মাস পরে হতো। কিন্তু ফ্লো এবং সময় ঠিক ছিল।৭ দিন দূপুরে থেকে নামাজ শুরু হতো।কিন্তু বিয়ের এই কয়েকবছরের মধ্যে সন্তান হওয়ার ঔষধ খাওয়া হয় এই জন্য বা হরমোনের কারণে হায়েজের সময় আর আগের মতো নাই।এখন তো আর ঔষধ কন্টিনিউ করছি না।

কিন্তু গত কয়েক সার্কেলে ফ্লো একদমই নাই বললেও চলে।তবে ১০ দিন ধরে চেক করলে কিছু আলামত দেখা দিত।তাই ১০ দিন পর থেকে নামাজ পড়া শুরু করতাম।এখন গত ২/৩ মাস ধরে হায়েজ কিছু সময় বন্ধ হলেও পুরো মাস ব্যাপি চলতেই থাকে।

গত ডিসেম্বর মাসে ২৬ তারিখ হায়েজ ধরে ৬ তম দিনে মানে জানুয়ারির ১ তারিখে হায়েজের আলামত বন্ধ হয়।(ফ্লো নাই গত কয়েক মাস ধরে,আবার এর মধ্যের কোন মাসে ১৫ দিনের আগে যে ব্লিডিং হয়েছিল, সেটা একদম হায়েজের ফ্লো নরমাল বা অবস্থার মতো ছিল,তাও তো পবিত্রতার সময় গুলোতে হওয়ার নামাজ পড়েছি কষ্ট করে)। 

১ তারিখ (৬ দিনের সময়) আলামত চলে যায়।কিন্তু গত কয়েকমাসে আমি ১০ দিনের হিসেবে ছিলাম।এরআগে নামাজ পড়তে পারতাম না।এখন ৭ তারিখে আবারও আলামত দেখা শুরু হয়।হিসাব মতে ১ তারিখ থেকে পবিত্রতার হিসাবে ১৬ তম দিন মানে ১৬ তারিখ থেকে হায়েজ ধরা শুরু করছি।আজকে ৫ তম দিন,আজকে থেকে আবার হায়েজের মতো ব্লিডিং হচ্ছে। এতদিন খুবই হালকা হালকা ছিল।

  • এখন যদি আমার হায়েজ ১০ দিন অতিক্রম করে যায়, তাহলে কি ৬ দিনের হিসাব ধরে নিয়ে বাকি নামাজ কাযা করবো?কেননা শুধু গত মাসে ৬ দিন ছিল হালকা হালকা করে। এর আগের কয়েক সার্কেল ১০ দিন করেই ছিল।এবারও মনে হয় ১০ দিন পার হয়েই যাবে।
  •  
  • তাহলে কি এখন থেকে হায়েজের ৬ দিনের হিসাব ধরবো? আমার তো প্রায় মাসে এমন হয়, আলামত দেখা শুরু হলে পুরো মাস জুড়েই দেখা যায়।
  • যার কারণে এই মাসেও যদি ১০ দিন পার হওয়ার পর বন্ধই না হয়,পরবর্তী পবিত্রতার ১৫ দিন ধরবো ৬ দিন হায়েজের হিসাব বাদ দিয়ে? নাকি ১০ দিনের হিসাব হবে।
  • এখন এই মাসে ১০ দিন পার হওয়ার পরও দেখা গেলে,পরবর্তী মাসে একই সমস্যা হয় তাহলে হায়েজের সময় কি ১০ দিন ধরে নিবো?

আমি খুবই কনফিউশানের মধ্যে আছি 

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم، أَنَّ امْرَأَةً كَانَتْ تُهَرَاقُ الدِّمَاءَ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم، فَاسْتَفْتَتْ لَهَا أُمُّ سَلَمَةَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ:لِتَنْظُرْ عِدَّةَ اللَّيَالِي وَالْأَيَّامِ الَّتِي كَانَتْ تَحِيضُهُنَّ مِنَ الشَّهْرِ قَبْلَ أَنْ يُصِيبَهَا الَّذِي أَصَابَهَا، فَلْتَتْرُكِ الصَّلَاةَ قَدْرَ ذَلِكَ مِنَ الشَّهْرِ، فَإِذَا خَلَّفَتْ ذَلِكَ فَلْتَغْتَسِلْ، ثُمَّ لِتَسْتَثْفِرْ بِثَوْبٍ، ثُمَّ لِتُصَلِّ فِيهِ

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে এক মহিলার (হায়িয-নিফাসের নির্দ্দিষ্ট সময় অতিক্রমের পরও) রক্তস্রাব হতো। উম্মু সালামাহ (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ঐ মহিলার জন্য কি বিধান তা জিজ্ঞেস করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে যেন ইস্তিহাযায় আক্রান্ত হবার আগে মাসের যে ক’দিন তার হায়িয হত তা খেয়াল করে গুনে রাখে এবং প্রতিমাসে সেই ক’দিন সে সলাত ছেড়ে দেয়। ঐ ক’দিন অতিবাহিত হয়ে গেলে সে যেন গোসল করে নেয়, অতঃপর (লজ্জাস্থানে) পট্টি বেঁধে সলাত আদায় করে।
(নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ হায়িয শেষে গোসল করা, হাঃ ২০৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের সময়সীমা পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৩), আবু দাউদ ২৭৪. আহমাদ (৬/২৯৩, ৩২০, ৩২২), মালিক (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা)

حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، - يَعْنِي ابْنَ أَبِي صَالِحٍ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، حَدَّثَتْنِي فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ أَنَّهَا أَمَرَتْ أَسْمَاءَ - أَوْ أَسْمَاءُ حَدَّثَتْنِي أَنَّهَا أَمَرَتْهَا فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ - أَنْ تَسْأَلَ، رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَهَا أَنْ تَقْعُدَ الأَيَّامَ الَّتِي كَانَتْ تَقْعُدُ ثُمَّ تَغْتَسِلُ - صحيح 

উরওয়াহ ইবনু যুবাইর (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ (রাঃ) আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি আসমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন অথবা আসমা-ই আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন, তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করার জন্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দিলেন যে, (পূর্বের হিসেব মতো) হায়িযের দিনগুলোতে অপেক্ষা করবে, তারপর নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হলে গোসল করবে।
(আবু দাউদ ২৮১ নাসায়ী ২০১)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ وَالدَّمُ كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً وَإِنْ جَاوَزَ الْعَشَرَةَ فَفِي الْمُبْتَدَأَةِ حَيْضُهَا عَشَرَةُ أَيَّامٍ وَفِي الْمُعْتَادَةِ مَعْرُوفَتُهَا فِي الْحَيْضِ حَيْضٌ وَالطُّهْرُ طُهْرٌ. هَكَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ.
«الفتاوى الهندية» (1/ 37)
মাঝেমধ্যে হায়েয হওয়া আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ হওয়া, দশ দিনের ভিতর সবকিছুই হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক।
যদি রক্তস্রাব দশদিন অতিক্রম করে যায়, তাহলে প্রথমবার এ পরিস্থিতির সম্মুখিন মহিলার জন্য দশদিন হায়েয। আর কোনো এক সংখ্যায় আদত ওয়ালী মহিলার জন্য তার পূর্বের আদতই হায়েয় এবং বাদবাকী সময় তুহুর। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১০৮,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৭২)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/7474

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার হায়েজ অনিয়মিত। তাই আপনার ব্লিডিং যদি ১০ দিন অতিক্রম হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনি এই মাসে ১০ দিন হায়েজ ধরবেন,আর যদি ১০ দিনের আগেই ব্লিডিং বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সে সময় ফরজ গোসল করে ঐ ওয়াক্ত থেকে নামাজ আদায় করবেন।

হায়েজ নিয়মিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনি এভাবেই প্রতি মাসে হিসাব করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...