আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
কয়েক মাস আগে আমার জন্য একটা প্রস্তাব আসে। ইস্তেখারা করে পজিটিভ লাগতো পাত্রের ব্যাপারে,বেশ কয়েকদিন ইস্তেখারা করা হয়েছে। যত ইস্তেখারা করতাম তারপর যেন আরও বেশি মনের দিক থেকে ঝুঁকে যেতাম এমন লাগতো।  কিন্তু তখনও আমি পাত্রকে দেখি নি প্লাস তার দ্বীনদারিতার ব্যাপারে পুরোপুরি জানতাম ও না। পরে কথাবার্তা আগানোর পর তার দ্বীনদারিতা,আখলাক আমার অনেক পছন্দ হয়েছিল। পাত্রও আমার দ্বীনদারিতার ব্যাপারে সন্তুষ্ট ছিল আর খুব বেশি আগ্রহী ছিল।পাত্রপক্ষের দিক থেকে আগ্রহের সাথে রাজি থাকলেও আমার ফ্যামিলি শেষে মত পাল্টিয়ে ফেলে,রাজি হয় না। কিন্তু,কথা হচ্ছে বারবার এই পাত্র কে স্বপ্ন দেখছিলাম (নোট: আমার ম্যাক্সিমাম স্বপ্নই সত্যি হয়)।

এই পাত্রকে যখন মানা করে দিবে সেরকম কথোপকথন চলছিল তখন আরেকটি প্রস্তাব আসে আমার জন্য। একটা পর্যায়ে গিয়ে দেখাসাক্ষাৎ এর কথা উঠেছিল দ্বিতীয় প্রস্তাব এর ব্যাপারে।তো ওই যে ১ম ছেলেটার সাথে কথাবার্তা চলছিল তাকে যেহেতু ফাইনাল মানা করে দেওয়া হয় নি, আমি এই ২ টা প্রস্তাব এর ব্যাপারেই ইস্তেখারা করেছিলাম। তখনই স্বপ্নে দেখেছিলাম যে,অনেক আলেম,মুফতি বসে আছেন,আমার ভাই ২য় প্রস্তাব টার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করছে অমুক কেমন,অমুক কি আমার বোন এর জন্য উত্তম হবে কিনা। তখন সবাই মাথা নাড়িয়ে না করছে।সেই রাতেই ওই ১ম ছেলেটাকে ও স্বপ্নে দেখেছি,স্বপ্ন ছিল খুব খুব স্পষ্টতর। স্বপ্নে তিনি আমাকে বলেছিলেন, কোনো ছেলে যদি আমার সামান্য হাতটুকুও দেখে সহ্য করতে পারবেন না। এই স্বপ্ন এতটা স্পষ্টতর ছিলো যে আমি দেখার পর আতঙ্কিত হয়ে ঘুম ভেঙে যায়। আশ্চর্যের বিষয়,২য় প্রস্তাব টার কথাবার্তা সামনে আগালেও হুট করে সেটা দূরে সরে গেছে, মানে কথা আর আগায় নাই।                      
তার ২-৩ দিন পরেই আমার জন্য আরেকটা প্রস্তাব এর ব্যাপারে কথা হয়,তখন ওই ১ম প্রস্তাব টাকে মানা করে দেওয়া হয়, আমার ফ্যামিলি রাজি হচ্ছে না বলে। তো তারপর ৩য় প্রস্তাব টার ব্যাপারে ইস্তেখারা করার পর স্বপ্নে দেখি যে,আমার পাত্রের সাথে সাক্ষাৎ হবে। তারপরেই আরও অবাক হলাম,স্বপ্ন সত্যি হয়ে গেল! সকালে উঠে শুনেছিলাম ৩য় প্রস্তাব এর ছেলেটা দেখতে আসবে। তো পাত্র দেখে যাওয়ার পর ওই রাতেই আরেকটা স্বপ্নে দেখেছি যে,আমার আব্বু ছেলেটাকে মানা করে দিচ্ছে এমন। বাস্তবেই কথা আর আগায় নি,আমার পছন্দ হয়নি আর দ্বীনি মেজাজ ও মিলছিল নাহ আমার সাথে এজন্য।
কিন্তু ১ম প্রস্তাব এর ছেলেটাকে মানা করে দেওয়ার পর একদিন স্বপ্নে দেখলাম এমন যে,আমার জন্য অনেকদিক থেকে চেষ্টা করা হবে কিন্তু কারো সাথে বিয়ে হবে না,শেষ পর্যন্ত ১ম প্রস্তাব টার ছেলেটার সাথেই বিয়ে হবে। আবার একদিন স্বপ্নে দেখলাম,বিবাহিত অবস্হায় তার সাথে আমি ফোন এ হাজবেন্ড ওয়াইফ এর মতো কথা বলছি,হাসিখুশি ছিলাম ২ জনেই।
যেহেতু আমার ফ্যামিলি থেকে মানা করে দেওয়া হয়েছিল,তাই আমি তার ব্যাপার টা সম্পূর্ণভাবে মন থেকে বাদ দিয়ে দিই। আর এখন দোআ জারি আছে উত্তম জীবনসঙ্গীর জন্য। কিন্তু তাকে মানা করে দেওয়ার পর থেকে আমার জন্য আসলেই আর প্রস্তাব আসে না। আগে অনেক প্রস্তাব আসতো। আমি আমার স্বপ্নগুলো কল্পনাপ্রসূত ভেবে সামনে এগিয়ে যাই। কিন্তু আমার বেশিরভাগ স্বপ্নই সত্যি হয়ে যায় বলে এখন জিজ্ঞেস করছি ১ম প্রস্তাবের ব্যাপারে স্বপ্নগুলো কি কল্পনাপ্রসূত ছিল নাকি আল্লাহর পক্ষ থেকে ইশারা? আর আল্লাহর পক্ষ থেকে ইশারা হলে কী ইশারা দেওয়া হচ্ছে?

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে প্রথম পাত্রের সাথেই আপনাকে বিবাহ দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। যেটি আপনার পরিবার দেয় নি।

সুতরাং এখন আবারও পারিবারিকভাবে প্রথম পাত্রের পরিবারে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া যায় কিনা সেটি বিবেচনা করার পরামর্শ আপনার পরিবারের প্রতি থাকবে।

যদি এমনটি করা না যায় অথবা সে পাত্রের যদি অন্যত্রে বিবাহ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি দ্বীনদার অন্য কোন পাত্রের জন্য অপেক্ষা করতে পারেন ইনশাআল্লাহ।

আপনারা পরিবার চেষ্টা করলে অবশ্যই আরো প্রস্তাব আসবে। পাশাপাশি আল্লাহ তায়ালার কাছে দ্রুত বিবাহের জন্য দোয়া করবেন।

এ সংক্রান্ত আমল জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...