আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আমার স্ত্রী গর্ভবতী, স্বাভাবিকভাবেই তিনি সহবাস করছেন না। আমার কষ্ট হচ্ছে, একজন আমাকে পরামর্শ দিলেন:

১। তমুক একটি মেয়ে আছে, উনার বিবাহ হচ্ছে না, তুমি তাকে বাদি হিসেবে নিয়ে আস, তিনি তোমার এবং তোমার স্ত্রীর খেয়াল রাখবেন, সাথে তোমার যৌন কষ্টও লাঘব হবে। বাচ্চা নিবা না, আর তোমার বাচ্চা প্রসব হয়ে স্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠলে যাকে বাদি হিসেবে এনেছ তারে তালাক দিয়ে ছেড়ে দিবে।
অথবা,
২। এক মহিলা আছেন, তার স্বামীও আছে, কিন্তু আগে তিনি বহুগামিতা করতেন। তার ব্যক্তিগত মুহুর্তের কিছু প্রমাণ আমার কাছে আছে, সেজন্যে তিনি আমার সাথে যৌনাতায় লিপ্ত হতে চান (প্রমাণের কারণেই), কিন্তু এটা অন্যায় বিধায়, তিনি তার স্বামীকে তালাক দিবেন এবং আমাকে বিয়ে করবেন। অনুরুপভাবে, আমার ও আমার  স্ত্রীর খেয়াল রাখবেন, সাথে আমার যৌন কষ্টও লাঘব হবে। বাচ্চা নিব না, আর আমাদের বাচ্চা প্রসব হয়ে স্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠলে যাকে  বিয়ে করে এনেছি (দ্বিতীয় জন), তারে তালাক দিয়ে ছেড়ে দিব। এবং সে পূর্বের স্বামীকে বিয়ে করে তার মতন জীবন যাপন করবে।
আমার প্রশ্ন হল:
১। আদৌ এই দুইটার কোনটার বৈধতা আছে?
২। যদি ১ নম্বর বৈধ হয়, তাহলে, তার জন্যে যেহেতু ছেলে দেখা হচ্ছে, তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে কি হবে? তখনই তালাক দিয়ে ছেড়ে দিব?
৩। আর যদি ২ বৈধ হয়, তাহলে সে তো তার স্বামীকে আসলে তালাক দিচ্ছে আমার সাথে যৌনাতায় লিপ্ত হবার জন্যে, কিন্তু অন্যায় বিধায়, বিয়ে করে তারপর লিপ্ত হবে। প্রয়োজন শেষে তাকে তালাক দিয়ে আগের সংসারে ফেরত পাঠানোও হবে। এখন তার স্বামী যদি তালাক না দেয়? তাহলে কিভাবে সম্ভব? কোন স্ত্রী কি তার স্বামীকে তালাক বলে চলে এসে বিয়ে করতে পারে?

৪। যেহেতু আমার যৌন কষ্ট হচ্ছেই, আমার জন্যে সমাধান কি হতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (583,020 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
https://www.ifatwa.info/5229 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
মোটকথা, ইসলাম দাসত্বের ব্যবস্থায় সর্বব্যাপী সংস্কার সাধন করেছে।যে ব্যক্তি এগুলোকে ইনসাফের দৃষ্টিতে দেখবে সে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে বাধ্য হবে যে,ইসলামের দাসত্বকে অন্যান্য জাতির দাসত্বের অনুরূপ মনে করা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।
এসব সংস্কার সাধনের পর যুদ্ধবন্দীদেরকে দাসে পরিণত করার অনুমতি তাদের প্রতি একটি বিরাট অনুগ্রহের রূপ পরিগ্রহ করেছে।

এখানে একথাও স্বরণ রাখা দরকার যে,যুদ্ধবন্দীদেরকে দাসে পরিণত করার বিধান কেবল বৈধতা পর্যন্ত সীমিত।অর্থাৎ ইসলামী র্রাষ্ট যদি উপযুক্ত বিবেচনা করে,তবে তাদেরকে দাসে পরিণত করতে পারে।এরূপ করা মোস্তাহাব বা ওয়াজিব নয়।বরং কোরআন ও হাদীসের সমষ্টিগত বাণী থেকে মুক্ত করাই উত্তম বোঝা যায়।দাসে পরিণত করার অনুমতিও ততক্ষণ যতক্ষণ শত্রুপক্ষের সাথে এর বিপরীত কোন চুক্তি না থাকে।যদি শত্রুপক্ষের সাথে চুক্তি হয়ে যায় যে,তারা আমাদের বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করবে না এবং আমরাও তাদের বন্দীদেরকে দাসে পরিণত করব না,তবে এই চুক্তি মেনে চলা অপরিহার্য হবে।বর্তমান যুগে বিশ্বের অনেক দেশ এরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ আছে।কাজেই যেসব মুসলিম দেশ এই চুক্তিতে সাক্ষর করেছে তাদের জন্য চুক্তি বিদ্যমান থাকা পর্যন্ত কোন বন্দীকে দাসে পরিণত করা বৈধ হবে না। (তাফসীর মা'রেফুল কোরআন -পৃষ্টা১২৫৪-বাংলা ভার্সন-মুহাউদ্দিন খান অনূদিত -

ইসলামে স্বল্প সময়ের জন্য বিবাহ তথা মুত'আহ বিবাহ হারাম। 

হযরত আলী ইবনে আবূ তালিব (রাঃ) হতে বর্ণিত

عن علي رضي الله عنه : " أن رسول الله صلى الله وسلم نهى عن نكاح المتعة وعن لحوم الحمر الأهلية زمن خيبر ." وفي رواية : " نهى عن متعة النساء يوم خيبر وعن لحوم الحمر الإنسية ."

রাসূলুল্লাহ সাঃ খাইবার যুদ্ধের দিন মহিলাদের সাথে মুত‘আহ করা থেকে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।(সহীহ বোখারী-৪২১৬,সহীহ মুসলিম-১৪০৭)


সাবরাহ আল জুহানী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। তিনি বললেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের স্ত্রীলোকদের সাথে মুতা বিয়ের অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু অচিরেই আল্লাহ তায়ালা তা হারাম করেছেন কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত। অতএব যার নিকট এ ধরনের বিয়ের সূত্রে কোন স্ত্রীলোক আছে, সে যেন তার পথ ছেড়ে দেয়। আর তোমরা তাদের যা কিছু দিয়েছ তা কেড়ে নিও না । (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩১৩)

নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুতা (বিবাহ) করতে নিষেধ করেছেন । (সহিহ মুসলিম,হাদিস নং ৩৩১৭)

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুতা বিয়ে নিষিদ্ধ করেছেন ও বলেছেন, সাবধান! আজকের এ দিন থেকে কিয়ামাত পর্যন্ত মুতা বিয়ে হারাম। যে কেউ (ইতোপূর্বে) মুতা বাবদ যা কিছু দিয়েছে, সে যেন তা ফেরত না দেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩২১)

আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি শুনতে পেলেন যে, ইবনু আব্বাস রা. নারীদের সাথে মুতার ব্যাপারে কিছুটা শিথিলতা প্রদর্শন করেছেন। আলী রা. বললেন, থামো, হে ইবনু আব্বাস! কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের যুদ্ধের দিন মুতা  ও গৃহপালিত গাধার গোশ্ত নিষিদ্ধ করেছেন । (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩২৫)
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আদৌ এই দুইটার কোনটার বৈধতা নেই।
স্পষ্ট নাজায়েজ ও হারাম।

(০২)
এটিও বৈধ নয়।

(০৩)
প্রশ্ন উল্লেখিত শুরুতে সাময়িক সময়ের জন্য এভাবে বিবাহ করা কোনোভাবেই ইসলাম বৈধতা দেয় না।

সুতরাং এ ক্ষেত্রে আপনি কোন নারীকে কোন প্রকারের শর্ত করা ছাড়াই দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে উভয় স্ত্রীকে আপনি পরিপূর্ণভাবে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক ভরণপোষণ দিবেন এবং সমতা বজায় রেখে উভয়ের কাছেই রাত্রি যাপন করবেন।

কাউকে তালাক দেওয়ার চিন্তা মাথায় নিয়ে আসবেন না।

উভয় স্ত্রীকে তাদের পূর্ণ অধিকার দিবেন এবং সারা জীবন উভয়কে নিয়ে আপনি ঘর সংসার চালিয়ে যাবেন।

এভাবে সাময়িক সময়ের পর তালাক দিব এই চিন্তা আপনার মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন।

আপনি আজীবনের জন্য সংসার করার নিয়তে এবং পূর্ণভাবে উভয়ের অধিকার আদায় এবং তাদের মাঝে সমতা বজায় রাখার শর্তে আপনি দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারেন।

দ্বিতীয় বিবাহের শর্তাবলী জানুনঃ-


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দেন নি হুজুর।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...