আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
24 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম, আমার একটা প্রশ্ন ছিল ; যদি কেউ শব্দ করে কুরআন পড়ে তার নিজ ঘরে এর ফলে যাদের কানে তাঁর তিলাওয়াত এর আওয়াজ আসছে তাদের ওপর কি সিজদা আসবে? তিলাওয়াত আমাদের কানে আসে কিন্তু আমরা নিজেরা নিজের কাজে ব্যস্ত তাহলে তিলাওয়াত যাদের কানে আসছে তাদের ওপর কি সিজদা আসবে? যেহেতু কুরআন আমাদের মুখস্থ না,

আমরা যাঁরা তাঁর তিলাওয়াত শুনছি না নিজের কাজ করছি তারা জানি না কোথায় সিজদার আয়াত আসছে কিন্তু তিলাওয়াতকারী ঠিকই সিজদার আয়াত আসলে সিজদাহ্ দিবে। আমরা তিলাওয়াত না শুনলেও আমাদের কানে ঠিকই আওয়াজ আসছে। আসলে ঘর একসাথে হওয়ায় আওয়াজ আসে। এখন তিলাওয়াত এর আওয়াজ যাদের কানে আসছে তাদের কি করা উচিত, এতে কি আমাদের কোন গুনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (63,450 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/1928/  নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে, তেলাওয়াতে সেজদা আদায় করা ওয়াজিব,যারা তেলাওয়াত করবেন বা শুনবেন সবাইকে আদায় করতে হবে নতুবা গুনাহ হবে।কখন আদায় করতে হবে?নামজের মধ্যে হলে ততক্ষনাৎ আদায় করা ওয়াজিব,

আদ্দুরুল মখতার ২খন্ড১১০পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছেঃ

 ﻭَﻟَﻮْ ﺗَﻼَﻫَﺎ ﻓِﻲ اﻟﺼَّﻼَﺓِ ﺳَﺠَﺪَﻫَﺎ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻻَ ﺧَﺎﺭِﺟَﻬَﺎ

তরজমাঃ- যদি নামাজে তেলাওয়াতে সেজদা পাঠ করা হয় তাহলে নামাজেই সেজদা করতে হবে,বাহিরে করলে হবে না।নামাজে আদায় করার পদ্ধতি হচ্ছে, যদি সূরার শেষাংশে সেজদায়ে তেলাওয়াত হয়,তাহলে নামাজের মধ্যেই উক্ত আয়াতের পর তিন আয়াত পড়ার পূর্বে আদায় করতে হবে এবং করাই ওয়াজিব।কিন্তু  মধ্যাংশে হলে উক্ত আয়াতের পর তিন আয়াত থেকে একটু বেশীও পড়া যাবে। (আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৫৬)

নামজের বাইরে তেলাওয়াতে সেজদা পড়লে তৎক্ষণাৎ আদায় করা ওয়াজিব নয় বরং যে কোনো সময় আদায় করা যাবে তবে তারাতারি আদায় করে নেওয়া উত্তম,এবং বেশী দেরী করা যাবে না,কেননা ভুলে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে গোনাহ হবে।এ প্রসঙ্গে ফাতওয়ায়ে শামীতে বর্ণিত আছে.............

مافي الدرالمختار) ﻭَﻫِﻲَ ﻋَﻠَﻰ اﻟﺘَّﺮَاﺧِﻲ) ﻋَﻠَﻰ اﻟْﻤُﺨْﺘَﺎﺭِ ﻭَﻳُﻜْﺮَﻩُ ﺗَﺄْﺧِﻴﺮُﻫَﺎ ﺗَﻨْﺰِﻳﻬًﺎ،

و في رد المحتار تحت قوله "على المختار " اﻹِْﺟْﻤَﺎﻉَ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻧَّﻪُ ﻟَﻮْ ﺗَﺮَاﺧَﻰ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﺩَاءً ﻣَﻊَ ﺃَﻥَّ اﻟْﻤُﺮَﺟَّﺢَ ﺃَﻧَّﻪُ ﻋَﻠَﻰ اﻟْﻔَﻮْﺭِ ﻭَﻳَﺄْﺛَﻢُ ﺑِﺘَﺄْﺧِﻴﺮِﻩِ

তরজমাঃ- দেরীতে তেলাওয়াতে সেজদা আদায় করলে আদায়-ই হবে,(ক্বাযা হবে না) যদিও ততক্ষনাৎ আদায় করা উত্তম,এবং বেশী দেরী করা মাকরুহে তানযিহি ও গোনাহ।২/১০৯

ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে

وَفِي الْغِيَاثِيَّةِ وَأَدَاؤُهَا لَيْسَ عَلَى الْفَوْرِ حَتَّى لَوْ أَدَّاهَا فِي أَيِّ وَقْتٍ كَانَ، يَكُونُ مُؤَدِّيًا لَا قَاضِيًا، كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة هَذَا فِي غَيْرِ الصَّلَاتِيَّةِ أَمَّا الصَّلَاتِيَّةُ إذَا أَخَّرَهَا حَتَّى طَالَتْ الْقِرَاءَةُ تَصِيرُ قَضَاءً وَيَأْثَمُ، هَكَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ.

তরজমাঃ- গিয়াছিয়্যাহ নামক কিতাবে বর্ণিত আছে,তেলাওয়াতে সেজদা যেকোনো সময় আদায় করলে আদায়-ই হবে ক্বাযা হবে না।তাতাখানিয়ায় বর্ণিত আছে ইহা নামাজের বাইরে এবং নামাজের ভিতরের হুকুম হচ্ছে যদি আয়াতে সেজদার পর ক্বেরাতকে বেশী লম্বা করা হয় তাহলে ক্বাযা হবে এবং গোনাহ হবে।(১/১৩৫)

والسجدة واجبة في هذه المواضع على التالي والسامع سواء قصد سماع القرآن أو لم يقصد، كذا في الهداية.

তেলাওয়াত কারী এবং শ্রবণকারী উভয়ের উপর তেলাওয়াতে সেজদা ওয়াজিব।চায় তারা শ্রবণের ইচ্ছা করুক বা না করুক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩২)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

জ্বী, আয়াতে সেজদা তেলাওয়াত করলে সেজদা দেওয়া ওয়াজিব এবং শ্রবণ করলে সেজদা দেওয়া ওয়াজিব। ঐ আয়াতটি সেজদার আয়াত, সেটা না জেনেও যদি কেউ শ্রবণ করে নেয়, তাহলেও তার উপর সেজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হবে।

তবে তেলাওয়াতকারী অন্য মানুষের সামনে তিলাওয়াতের সময় যদি উপস্থিত লোকজন সিজদা আদায়ের জন্য প্রস্তুত না থাকেন কিংবা ভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন তাহলে সিজদার আয়াত উচ্চৈঃস্বরে পড়বে না। এসব ক্ষেত্রে সিজদার আয়াত অনুচ্চস্বরে তিলাওয়াত করা উচিত। (বাদায়েউস সানায়ে ১/৪৫০; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৪৩; আদ্দুররুল মুখতার ২/১১৮; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৫০৫)

শ্রোতাদের সিজদায়ে তিলাওয়াতের বিষয়টি জানিয়ে দেয়াঅন্যদের সামনে উচ্চৈঃস্বরে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করে ফেললে শ্রোতাদের সিজদার আয়াতের বিষয়টি জানিয়ে দেয়া উচিত। যেন সিজদার আয়াতের বিষয়টি না বোঝার কারণে কারো সিজদা ছুটে না যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (9 points)
https://ifatwa.info/110522/
মুজিব হুজুর আপনার থেকে এই ফতোয়াটা জানতে চাই।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...